বুধবার সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলাওয়ার হোসেন জানান, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে উপজেলার সৌদিয়া আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার শরিয়ত উল্ল্যাহকে (৪০) আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ব্যবসায়ী নাসিরকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ব্যবসায়ী পৌরসদরস্থ দক্ষিণ মহাদেবপুর এলাকার আবদুল লতিফের ছেলে।
এদিকে নিহত নাসিরের সঙ্গে মদপানের পর বর্তমানে ঢাকাস্থ স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. রবিউল হোসেন রবি। তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে পৌরসদরস্থ সৌদিয়া আবাসিক হোটেলে ম্যানেজার শরিয়ত উল্ল্যার উপস্থিতিতে ব্যবসায়ী নাসির ও রবিসহ বেশ কয়েকজন একসঙ্গে হোটেলে বসে মদ পান করেন। রাতভর মদ পানের একপর্যায়ে নাসির ও রবি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন।
দীর্ঘ সময় সংজ্ঞাহীন থাকার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জ্ঞান ফেরার পর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন ব্যবসায়ী নাসির। কিন্তু বাড়ির কাছাকাছি যাওয়ার পর তিনি জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এসময় পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাসিরকে মৃত ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে মঙ্গলবার দুপুরে যুবলীগ নেতা রবির জ্ঞান ফিরে এলে সে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি চলে যায়। কিন্তু নিজ ঘরে প্রবেশের সময় অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। এসময় পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
চমেক হাসপাতালের আইসিইউ’র নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকার পরও রবির অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এদিকে নিহত নাসিরের ছোট ভাই জাকির হোসেন বলেন, ‘ফকিরহাট গরু বাজার ইজারার বিষয়ে আলোচনার কথা বলে ঘর থেকে বেরিয়ে সৌদিয়া আবাসিক হোটেলে যান আমার ভাই নাসির। কিন্তু দীর্ঘসময় অতিবাহিত হওয়ার পরও সে বাড়িতে না ফেরায় আমি একাধিকবার হোটেলে খুঁজতে যাই। এসময় হোটেল ম্যানেজার নাসির ঘুমিয়ে আছে বলে আমাকে চলে যেতে বলে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অসুস্থ অবস্থায় চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আমার ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন।’
জাকির হোসেন আরও বলেন, হোটেল ম্যানেজারের ভূমিকা দেখে নাসিরের মৃত্যু নিয়ে আমাদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমরা এ ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়ায় যাবো।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলাওয়ার হোসেন বলেন, ‘বিষাক্ত মদপানে নাসির নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে এবং আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন যুবলীগ নেতা রবি। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হোটেল ম্যানেজারকে আটক করা হয়েছে। নিহতের লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।