সারাদেশে বন্যা পরিস্থিতির কারণে এ বছর জন্মাষ্টমীর আয়োজনের ব্যয় কমিয়ে বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ত্রাণ তহবিল গঠন করা হয়েছে।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে মহানগর সর্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ শুক্রবার (২৩ আগস্ট) ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় এসব কথা জানান।
সভায় কমিটির নেতারা জানান, এবার এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে জন্মাষ্টমী উদযাপিত হচ্ছে। প্রশাসনের অনুপস্থিতিতে এই জনতার বিজয়কে কালিমালিপ্ত করতে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি তৎপর হয়ে ওঠে এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায় এক অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। তাদের বাড়িঘর, মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। নির্যাতিত হন নারীরা। অন্তত ৫২টি জেলায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। তারই স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ হয় শাহবাগে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে ৭৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, সাবেক মন্ত্রী রমেশ কারাগারে
তারা বলেন, এই পরিস্থিতিতে অনেক রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির রক্ষায় স্বতঃস্ফুর্তভাবে পাহারা দিয়েছেন। যারা পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তাদের মধ্যে আছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, সিপিবি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান নেতারা।
তারা আরও বলেন, অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে ছুটে গিয়েছেন, পরে তার কার্যালয়ে পৃথক বৈঠকে তাদের সঙ্গে মত বিনিময় করেছেন।
তবে নীরব চাঁদাবাজি এখন ভয়ংকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে অভিযোগে করেছেন তারা। নির্ধারিত অর্থ না দিলে তাদের বাড়িঘর, জায়গাজমি থাকবে না বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিন্দু শিক্ষকদের হুমকি দিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। ফলে এক উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে এ পরিস্থিতির অবসান দাবি করেছেন তারা।
কেন্দ্রীয়ভাবে গঠিত ত্রাণ তহবিলের আহ্বায়ক করা হয়েছে আইনজীবী সুব্রত চৌধুরীকে। সদস্য সচিব করা হয়েছে গোপাল দেবনাথ ও বিপ্লব দে কে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা।
মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন- মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব ও সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস চন্দ্র পাল।
আর উপস্থিত ছিলেন- জয়ন্ত সেন দীপু, শ্রী কাজল দেবনাথ, মিলন কান্তি দত্ত, জে. এল. ভে․ মিক, ডি. এন. চ্যাটার্জী, মনীন্দ্র কুমার নাথ, তাপস কুমার পাল, শ্যামল কুমার রায়, কিশোর রঞ্জন মন্ডল।
আরও পড়ুন: অভিন্ন নদীর পানি ছাড়ার আগে আগাম বার্তা দেয়নি ভারত: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান