সম্প্রতি জুম চাষ এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাঙ্গামাটির ঢালে জুমের সোনালি পাকা ধানে ছেয়ে গেছে পাহাড়। শুরু হয়েছে আউশের জুম ধান কাটা। আদিবাসী জুম চাষিদের চোখেমুখে এখন আনন্দ। সবাই এখন পাকা ধানের ফসল বাড়িতে তোলার কাজে ব্যস্ত।
পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সনাতন কৃষি হচ্ছে পাহাড়ের ঢালে জুম চাষ। জুম চাষের প্রস্তুতিকালে প্রথমে ফাল্গুন-চৈত্র মাসে আগুনে পুড়িয়ে জুম চাষের জন্য জঙ্গল পরিষ্কার করে জমিকে উপযুক্ত করে তোলা হয়।
এরপর বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে প্রস্তুত পোড়া জুমের মাটিতে দা দিয়ে গর্ত খুড়ে একসাথে ধান, মারফা, মিষ্টি কুমড়া, তুলা, তিল, ভুট্টাসহ বিভিন্ন সবজি, মশলা ও ফলের বীজ রোপন করেন জুম চাষিরা।
তবে জুম চাষের ক্ষেত্রে তাদের মাটিতে লাঙ্গল এবং কোনো কীটনাশক ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে না।
কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা জানান, পাহাড়ে স্থানীয় জাতের ধানের পাশাপাশি উচ্চ ফলনশীল ধান ও সবজির আবাদ করতে জুম চাষিদের পরামর্শসহ যাবতীয় সুবিধা দেয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকার ফলে ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে। জুমে এবারও ফলন ভালো হয়েছে।
রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শান্তিময় চাকমা বলেন, রাঙ্গামাটি জেলায় এ বছর মোট পাঁচ হাজার ৯০ হেক্টর পাহাড়ে জুম চাষ করা হয়েছে। এসব জুমে এবারের আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ও সঠিক বৃষ্টিপাতের কারণে জুমের ফলন ভালো হয়েছে।
রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক পবন কুমার চাকমা বলেন, পাকা ধান আর জুমের ফসল বাড়িতে তোলার পর পর পাহাড়িদের ঘরে ঘরে শুরু হবে ‘নবান্ন উৎসব’।