তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সরকারের অঙ্গীকার এবং জাতীয় এসডিজি যোগাযোগ কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা এ অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে 'ইউনাইটেড ইন প্রোগ্রেস: শেয়ারিং ন্যাশনাল এসডিজিস কমিউনিকেশনস স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান ২০২৪-২০৩০' শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে জাতিসংঘ প্রকল্প সেবাসমূহের কার্যালয়ের (ইউএনওপিএস) সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক ইউনিট।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন ধারণা ও দর্শন হচ্ছে, শুধু উন্নয়ন নয়, উন্নয়ন হতে হবে টেকসই এবং সুষম। কারণ উন্নয়ন যদি টেকসই ও সুষম না হয় তাহলে তা সত্যিকার অর্থে কাজে আসে না। টেকসই ও সুষম উন্নয়ন সমাজে পরিবর্তন আনতে পারে।
মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাসহ জাতীয় পরিকল্পনা কাঠামোতে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রাগুলোকে একীভূত করা হয়েছে। এটি শুধুমাত্র একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নয়, এটি টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের প্রতি সরকারের অঙ্গীকারের প্রমাণ।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নের বর্তমান প্রেক্ষাপটে জাতীয় এসডিজি যোগাযোগ কৌশল এবং কর্মপরিকল্পনা তৈরির উদ্যোগ সময়োপযোগী এবং গুরুত্বপূর্ণ। এই কৌশল এসডিজির লক্ষ্যমাত্রাগুলো স্থানীয় পর্যায়ে সম্পৃক্ত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি প্রতিটি নাগরিককে তাদের অবস্থান নির্বিশেষে উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সচেতন ও সম্পৃক্ত করবে। এটি কাউকে পেছনে না রাখার জন্য সরকারের অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ।
তিনি বলেন, জাতীয় এসডিজি যোগাযোগ কৌশল বাস্তবায়নে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এ মন্ত্রণালয় সরকারের নীতি এবং জনগণের বোঝাপড়া ও অংশগ্রহণের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। মন্ত্রণালয়ের সম্পদ, নেটওয়ার্ক এবং প্ল্যাটফর্মগুলো কাজে লাগিয়ে এসডিজির বার্তাগুলো নগর কেন্দ্র থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত দেশের প্রতিটি কোণায় পৌঁছানো নিশ্চিত করতে চাই। এসডিজি এজেন্ডার সাফল্য জনগণের সচেতনতা ও অংশগ্রহণের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি হলো একজন সচেতন এবং নিযুক্ত নাগরিক। যখন মানুষ এসডিজির তাৎপর্য এবং সেগুলো অর্জনে তাদের ভূমিকা বুঝতে পারে, তখন তারা উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হয়ে ওঠে।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকায় বসে আমরা যা আলোচনা করি এবং যোগাযোগের যে পদ্ধতির কথা ভাবি সেটি গ্রামাঞ্চলে কার্যকর নাও হতে পারে। তাই স্থানীয় প্রাসঙ্গিকতা বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর ভিত্তিতেই আমাদের যোগাযোগ কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। তাহলে সেটি সমাজে পরিবর্তন আনতে পারবে।’
তিনি আরও বলেন, উদ্দিষ্ট ব্যক্তির নিকট বার্তা পৌঁছে দেওয়া তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অন্যতম দায়িত্ব। এক্ষেত্রে জাতীয় এসডিজি যোগাযোগ কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে এই মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবে। তবে এসডিজি বাস্তবায়নে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি খাত, উন্নয়ন সহযোগী, বিদেশী বন্ধু সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) সম্পর্কিত প্রথম জাতীয় কমিউনিকেশনস স্ট্রাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান ২০২৪-২০৩০ এর চূড়ান্ত খসড়া উপস্থাপন করা হয়। এটি উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক অতিরিক্ত সচিব মো. মনিরুল ইসলাম এবং জাতিসংঘ প্রকল্প সেবাসমূহের কার্যালয়ের (ইউএনওপিএস) এসডিজি কমিউনিকেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নুসরাত আমিন।
সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন জাতিসংঘ প্রকল্প সেবাসমূহ কার্যালয়ের কান্ট্রি ম্যানেজার সুধীর মুরলীধরন।
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আখতার হোসেন, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মো. কাউসার আহমেদ এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস।