পাইলট পর্যায়ে ঢাকার কল্যাণপুর ও সাততলা (মহাখালী) এলাকায় ১০ হাজার পরিবারের ৫০ হাজার সদস্যকে তাদের মৌলিক খাদ্য চাহিদা পূরণে সহায়তা হিসেবে প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা (৩৫ ইউএস ডলার) করে প্রদান করা হবে। এ এলাকাগুলো শনাক্ত করা হয়েছে কেননা এখানে বসবাসরত পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত যেমন পোশাক কারখানার শ্রমিক অথবা গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এদের অনেকেই কোভিড-১৯-এর কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির প্রভাবে চাকরি হারিয়েছেন।
বাংলাদেশে ডব্লিউএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর রিচার্ড রেগান বলেন, ‘ব্যাপক পরিসরে চাকরি হারানো এবং খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি লাখ লাখ মানুষকে চরম দারিদ্র্য ও খাদ্য ঘাটতির দিকে ঠেলে দিয়েছে, বিশেষত বাংলাদেশের নগর এলাকাগুলোতে। এ দুঃসময়ে নগরের দরিদ্র পরিবারগুলো প্রতিনিয়ত যেসব বিপত্তির সম্মুখীন হচ্ছেন সেগুলোর সমাধানে এ প্রোগ্রাম একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
যেসব পরিবারে করোনায় আক্রান্ত রোগী রয়েছেন, বিশেষত যারা কোয়ারেন্টাইনে আছেন, এ প্রোগ্রামের আওতায় ডব্লিউএফপি তাদের ভেতরে ফলের বাস্কেট বিতরণ করবে।
ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের অর্থায়নে পরিচালিত এ প্রোগ্রামটি বাস্তবায়ন করবে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক। এ প্রোগ্রাম বিশেষভাবে খেয়াল রাখবে এসব পরিবারের কাছে যেন পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্যসামগ্রী যেমন সতেজ শাকসবজি পৌঁছে দেয়া যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে একযোগে কাজ করে ডব্লিউএফপি এবং অন্য অংশীদাররা এটা নিশ্চিত করবে যে নির্ধারিত স্থানে বা দোকানে সঙ্গত মূল্যে শাকসবজি ও অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারের যোগান যেন অব্যাহত থাকে।
সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলি খান খসরু এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এ পাইলট প্রোগ্রাম থেকে অর্জিত জ্ঞান আকস্মিক অভিঘাত যেমন কোভিড-১৯-এর সময়ে অরক্ষিত জনগণের জন্য সরকারের হস্তক্ষেপমূলক কর্মকাণ্ডকে আরও উন্নত করতে সহায়তা করবে। এ প্রোগ্রাম এ জাতীয় সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ডের বর্ধিত পরিসরে সম্ভাব্য অনুকরণের মডেল হিসেবে ভূমিকা রাখছে।’
অগাস্ট মাসে ডব্লিউএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর রিচার্ড রেগান, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম কল্যাণপুর বস্তি পরিদর্শন করেন এবং এ প্রোগ্রামে যেসব পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তাদের অনেকের সাথে দেখা করেন।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বিশ্বের সব থেকে বড় মানবহিতৈষী সংগঠন যা মূলত জরুরি অবস্থায় জীবনরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়নের পাশাপাশি সংঘাত, দুর্যোগাক্রান্ত ও জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার কমিউনিটিকে উন্নত ভবিষ্যৎ নির্মাণে সহযোগিতা প্রদান করে।