পত্রিকায় কলাম লেখার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর অবমাননা ও ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানকে চাকরি থেকে অপসারণের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসাথে তাকে চাকরিতে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার ওই অধ্যাপকের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দু কুমার রায়।
পরে জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানকে চাকরি থেকে অপসারণ করে গত বছরের ৬ অক্টোবর চিঠি দেন। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যান্সেললের কাছে ১১ অক্টোবর আপিল করা হয়। কিন্তু আপিল দায়ের করার সাত মাস পরও কোনো ফল না পেয়ে অবশেষে তিনি রিট করেছেন। ওই রিটের শুনানি শেষে উচ্চ আদালত গত ৬ অক্টোবর অপসারণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে এবং কেন তাকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে নির্দেশ দেয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।
আরও পড়ুন: ডিআইজি মিজানের জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক। ২০১৮ সালের ২৬ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকের স্বাধীনতা দিবস সংখ্যায় তার লেখা ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ শিরোনামে এক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। ওই নিবন্ধে বঙ্গবন্ধুর অবমাননা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের অভিযোগ তোলে ছাত্রলীগ। এরপর একই বছরের ২ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মোর্শেদ হাসান খানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়ে উপ-উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
পরে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেট সভায় অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে চাকরি থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত হয়। সেটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে গত বছরের ৬ অক্টোবর জানায়। পরে ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১১ অক্টোবর আপিল করেন অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান। কিন্তু আপিলের রেজাল্ট না পেয়ে রিট করেন।