ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) 'ডি' ইউনিটের পরীক্ষা বাতিল করার প্রস্তাবিত পদক্ষেপে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
শিক্ষকদের দাবি, এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়নি।
অনুষদের অধ্যাপক সাদেকা হালিমের মতে, ২০২০ সালে ডিন কমিটির এক সভায় উপাচার্য ও অন্যান্য অনুষদের প্রধানরা এই বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছিলেন।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে কমছে ভর্তির আসন সংখ্যা, থাকছে না ‘ঘ’ ইউনিটও
তিনি বলেন, আমি জানি না আলোচনা কখন সিদ্ধান্তে পরিণত হয়েছে। আমি এটাও জানি না কখন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
তৎকালীন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সাদেকা হালিম ২০২০ সালে অনুষদের ১৬ টি বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেছিলেন এবং পরীক্ষা বাতিল করার যেকোনো পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছিলেন।
তিনি বলেন, সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ভর্তি কমিটির বৈঠকের পর হঠাৎ করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, যার অর্থ আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে 'ডি' ইউনিট থাকবে না।
তবে ভিসি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান এ দাবি অস্বীকার করে বলেন, ‘ডি' ইউনিটের পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নেয়া হয়েছিল।
ইউএনবি দ্বারা প্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নথি থেকে জানা যায় যে ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর ডিন কমিটির বৈঠকের পরে ভর্তি কমিটি পরবর্তীতে 'ডি' ইউনিটের পরীক্ষা বাতিলের সুপারিশ করেছিলেন।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সশরীরের ক্লাস বন্ধ
পরবর্তীতে, ওই বছরের ১৬ আগস্ট একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় 'ডি' ইউনিটের পরীক্ষাগুলো সম্পূর্ণ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
তবে অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলছেন, 'একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে 'ডি' ইউনিটের পরীক্ষা বাতিলের বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আমাদের অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ‘এর আগে, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং বিভাগগুলোর প্রধানদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়েছিল, যেখানে পরীক্ষা বাতিল না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।’
অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, 'ডি' ইউনিট রাখতে তিনি ‘প্রয়োজনে’ আদালতে যাবেন।
যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের প্রধান তৌহিদা জাহান বলেন, ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষা বাতিল করা হলে মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ কমে যাবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান বলেন, অগণতান্ত্রিক উপায়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্টেকহোল্ডারদের মতামত বিবেচনায় নেয়া হয়নি।
'ডি' ইউনিটের পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই বিক্ষোভে নেমেছে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, যদি 'ডি' ইউনিটের পরীক্ষা বাতিল করা হয়, তবে শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের বিভাগ পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে।