প্রধানমন্ত্রী ও তার সফর সঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট সকাল সোয়া ৮টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। সকাল ১০টায় (স্থানীয় সময়) বিমানটির নয়াদিল্লীর পালাম এয়ারফোর্স স্টেশনে অবতরণের সময়সূচি রয়েছে।
এ সফরে প্রতিবেশী দুদেশের সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদারে ১৮টি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে।
চুক্তিগুলোর মধ্যে- হোয়াইট শিপিং ইনফরমেশন, এয়ার সার্ভিসেস এবং ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য পরিবহনের জন্য চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের ব্যবহার সংক্রান্ত তিনটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তিও থাকবে বলে কূটনৈতিক সূত্র ইউএনবিকে জানিয়েছে।
সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে থাকবে- যুব ও ক্রীড়া, বিএসটিআই, সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম, বস্ত্র ও পাট, বাণিজ্য প্রতিকার ব্যবস্থা, উপকূলীয় নজরদারি ব্যবস্থা, দুই দেশের মধ্যে যৌথ চলচ্চিত্র তৈরি, সমুদ্রবিষয়ক গবেষণা, মিরসরাই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাইড্রোকার্বন খাতে সহযোগিতা, দুর্যোগ ত্রাণ, এক্সিম ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার স্থায়ী অফিস প্রতিষ্ঠা, আইসিটি, স্টার্ট-আপস-উদ্ভাবন এবং ইনকিউবেশনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা দিল্লীতে অনুষ্ঠিত হবে ৫ অক্টোবর। একই দিন তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ইন্ডিয়ান ইকোনমিক সামিটে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ যোগ দিবেন। নয়া দিল্লীতে আগামী ৩-৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ সম্মেলনে ৪০টি দেশের ৮০০ এরও বেশি নেতা অংশ নেবেন।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী ৩ অক্টোবর বাংলাদেশের ওপর ডব্লিউইএফের ‘কান্ট্রি স্ট্র্যাটেজি ডায়ালগে’ যোগ দেবেন এবং ৪ অক্টোবর ডব্লিউইএফ সমাপনী আলোচনায়ও অংশ নেবেন।
বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট (বিজি-২০৩০) প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে ৩ অক্টোবর সকাল ৮টায় দিল্লীর উদ্দেশে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় নয়াদিল্লীতে পৌঁছার কথা রয়েছে। সফরকালে হোটেল তাজ মহলে অবস্থান করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী একই দিন বাংলাদেশ হাইকমিশনের মৈত্রী হলে এক সংবর্ধনা এবং বাংলাদেশ হাউজে তার সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেবেন। বাংলাদেশের হাইকমিশনার এ নৈশভোজের আয়োজন করবেন।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর), প্রধানমন্ত্রী আইটিসি মহুয়াতে ভারত-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরামের (আইবিবিএফ) নির্বাচিত সিইও ও শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক ও মতবিনিময় করবেন এবং ডব্লিউইএফ সমাপনী আলোচনায়ও অংশ নেবেন। ভারত সফররত সিঙ্গপুরের উপ-প্রধানমন্ত্রী হেঙ সোয়ে কীট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় ঐতিহাসিক হায়দ্রাবাদ হাউজে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। দুপুর দেড়টায় মধ্যাহ্ন ভোজ করবেন এবং বিকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সাথে সাক্ষাৎ করবেন।
একই দিনে কয়েকটি বিনিময় চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হবে এবং দুই প্রধানমন্ত্রী হায়দ্রাবাদ হাউজ থেকে যৌথভাবে কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।
পরের দিন রবিবার (৬ অক্টোবর) সকালে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
এছাড়া ভারতের কংগ্রেস পার্টির প্রধান সোনিয়া গান্ধী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের ওপর চলচ্চিত্র নির্মাণের দায়িত্ব পাওয়া ভারতের বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক শ্যাম বেনেগা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদাভাবে সাক্ষাৎ করবেন।
ওই দিনই ভারত সফরের ইতি টেনে প্রধানমন্ত্রী রাত ১১টায় বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এসে পৌঁছবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।