আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য বিচার নিশ্চিত করতে চাই। আমরা প্রতিশোধ বা প্রতিহিংসার বিচার চাই না, বরং আমরা সুবিচার নিশ্চিত করতে চাই।
তিনি বলেন, গত জুলাইয়ে হত্যাকাণ্ড জনগণ নিজ চোখে দেখেছেন। একটি বৃদ্ধ প্রজন্ম দেশের তরুণ প্রজন্মকে উন্মত্তভাবে খুনের নেশায় মেতেছিল।
আমাদের বুকের ভেতর যত কষ্ট, হতাশা ও ক্ষোভ থাকুক না কেন এই খুনের বিচারকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে বলেও জানান তিনি।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩’ সংশোধন বিষয়ক একটি মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থী-জনতাকে ধৈর্য ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান আসিফ নজরুলের
উপদেষ্টা বলেন, অতীতে দেখেছি, এদেশে বিচারের নামে কী ধরণের অবিচার হয়েছে। আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ ও আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য বিচার নিশ্চিত করার চেষ্টা করব।
আসিফ নজরুল বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমকে সচল করার লক্ষ্যে প্রসিকিউশন ও ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করা হয়েছে। এখন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ট্রাইব্যুনালকে পুনর্গঠন করা।
তিনি আরও বলেন, আমরা এখন ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩’ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। সংস্কার কার্যক্রম এখানেই থেমে থাকবে না। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে আইন সংশোধন করা হবে।
সভায় ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩’ সময়োপযোগী করার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত খসড়া সংশোধনী উপস্থাপন করা হয়।
প্রস্তাবিত খসড়া সংশোধনীতে ৪এ, ১৩এ ও ২০এ নামে ৩টি নতুন ধারা ও ৩(৩) ও ১২(২) নামে ২টি নতুন উপধারা যুক্ত করা হয়। এছাড়া ৩(২)(এ), ৪(২) ও ১৯ ধারায় সংশোধন আনার প্রস্তাব করা হয়।
আইনটির প্রস্তাবিত সংশোধনী নিয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন, সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ, শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম রব্বানী, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব (চলতি দায়িত্ব) ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী, নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. বদিউল আলম মজুমদার, সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ ইকতেদার আহমেদ, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ও অধ্যাপক নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. বেগম আসমা সিদ্দীকা, রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের যুগ্মসচিব (ড্রাফটিং) মো. রফিকুল হাসান, ঢাকাস্থ জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী অফিসের কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন, সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, সোস্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট ড. জাহেদুর রহমান, সাংবাদিক সাঈদ আব্দুল্লাহ, সানজিদা ইসলাম, শরিফ ভূঁইয়া প্রমুখ তাদের নিজ নিজ মতামত তুলে ধরেন।