দেশীয় বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স আজ তাদের দ্বাদশ বছরে পদার্পণ করেছে। ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই ঢাকা-যশোর রুটে একটি ড্যাশ ৮-কিউ৪০০ উড়োজাহাজ দিয়ে যাত্রা শুরু করা সংস্থাটি এখন দেশের অন্যতম বৃহৎ এয়ারলাইন্স হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত।
বর্তমানে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বহরে রয়েছে মোট ২৪টি উড়োজাহাজ, যার মধ্যে ২টি এয়ারবাস এ৩৩০-৩০০ এবং ৯টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ রয়েছে। সংস্থাটির দাবি, তাদের ফ্লাইটগুলোর ৯০ শতাংশেরও বেশি নির্ধারিত সময়ে পরিচালিত হচ্ছে।
ইউএস-বাংলা বর্তমানে অভ্যন্তরীণভাবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর ও রাজশাহীতে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ২০১৬ সালে ঢাকা-কাঠমান্ডু রুট দিয়ে আন্তর্জাতিক যাত্রা শুরু করা সংস্থাটি বর্তমানে কলকাতা, চেন্নাই, মালে, মাস্কাট, দোহা, দুবাই, শারজাহ, আবুধাবি, জেদ্দা, রিয়াদ, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক ও চীনের গুয়াংজুতে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
সংস্থাটি জানায়, শিগগিরই বহরে যোগ হতে যাচ্ছে আরও একটি এয়ারবাস এ৩৩০-৩০০। ইউরোপের লন্ডন ও রোমসহ ২০২৬ সালের মধ্যে নতুন গন্তব্যে ফ্লাইট চালুর প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া ২০২৮ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক এবং কানাডার টরন্টোতে ফ্লাইট পরিচালনার লক্ষ্যও রয়েছে।
২০২৪ সালে ‘বেস্ট ডমেস্টিক এয়ারলাইন্স’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ইউএস-বাংলা। এর আগে ২০২২ ও ২০২৩ সালেও একই পুরস্কার পেয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি, যা একটি হ্যাটট্রিক অর্জন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এছাড়া ২০১৫ সালেও সেরা অভ্যন্তরীণ এয়ারলাইন্সের স্বীকৃতি পেয়েছিল।
ইউএস-বাংলা যাত্রীদের সুবিধার্থে ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট বুকিংয়ের সুযোগ রেখেছে। এছাড়া দেশ-বিদেশে রয়েছে ৪০টিরও বেশি নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র এবং হাজারো ট্রাভেল এজেন্সি। নিয়মিত যাত্রীদের জন্য চালু রয়েছে ‘স্কাইস্টার’ লয়ালটি প্রোগ্রাম।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, আন্তর্জাতিক রুটে মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে লাগেজ ডেলিভারি দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করেছে ইউএস-বাংলা, যা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি অনন্য উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত।
বর্তমানে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে প্রায় ৩ হাজার কর্মী কর্মরত আছেন। সংস্থাটি নিয়মিত ট্যাক্স ও সারচার্জ প্রদান করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে অর্থনীতিকে আরও সুসংহত করছে বলে দাবি প্রতিষ্ঠানটির।
দ্বাদশ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে আমরা যেকোনো ধরনের প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে প্রস্তুত। বর্তমান বিশ্বে যাত্রীদের সঠিক সেবা প্রদানের জন্য আধুনিক এয়ারক্রাফটের কোনো বিকল্প নেই। ইউএস-বাংলা যাত্রীদের আরামদায়ক সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই প্রতিনিয়ত নতুন নতুন এয়ারক্রাফট বহরে যুক্ত করে চলেছে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পেরে ইউএস-বাংলা পরিবার অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের সাফল্যে ভরা এগারো বছরের সঙ্গে যেসব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্ট, ট্যুর অপারেটর, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন করপোরেট অফিস, বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ এবং সর্বোপরি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রয়েছেন—তাদের সবার প্রতি ইউএস-বাংলা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।’