প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার বলেছেন, সরকার প্রতিরক্ষা আধুনিকীকরণের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে আরও অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধ সরঞ্জাম সংযোজন করার পরিকল্পনা করেছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভবিষ্যতে আমরা অধিক উন্নতমানের যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজন করার পরিকল্পনা করেছি।’
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মিডশিপম্যান-২০১৯ আলফা এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ২০২১ ব্রাভো পাসিং আউট ক্যাডেটদের রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: চেইন অব কমান্ড মেনে চলুন, বিজিবি সদস্যদের প্রধানমন্ত্রী
চট্টগ্রামের পতেঙ্গাস্থ বাংলাদেশ নেভাল একাডেমির মূল অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৭ সালে ‘বিএনএস নবযাত্রা’ এবং ‘বিএনএস জয়যাত্রা’- দুটি সাবমেরিন সংযোজনের মাধ্যমে নৌবাহিনীকে সত্যিকারের একটি পূর্ণাঙ্গ ‘ত্রিমাত্রিক’ বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, নৌবাহিনী এখন প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ দেশের বিস্তীর্ণ সামুদ্রিক অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি মানব পাচার ও চোরাচালান রোধ এবং জেলেদের নিরাপত্তা ও নিরাপদ পথ নিশ্চিত করতে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম।
এছাড়া সাবমেরিন ও যুদ্ধ জাহাজগুলোকে পোতাশ্রয়ে নিরাপদ জেটি সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে কক্সবাজারের পেকুয়াতে আধুনিক বেসিন সুবিধা সম্বলিত স্থায়ী সাবমেরিন ঘাঁটি ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণই আমাদের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, সরকার বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যুদ্ধজাহাজ সংগ্রহ এবং বিদ্যমান জাহাজের পরিচালনা সক্ষমতা জোরদারে কাজ করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে সরকার 'ফোর্সেস গোল-২০৩০' বাস্তবায়নের মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া শুরু করে।
তিনি বলেন, ‘নৌবাহিনীকে একটি আধুনিক ও আঞ্চলিক শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে, সরকার বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন, নৌবাহিনীতে যুদ্ধজাহাজ অন্তর্ভুক্ত করা এবং বিদ্যমান জাহাজের অপারেশনাল ক্ষমতা জোরদার করার মতো বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ইতোমধ্যেই অত্যাধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সম্বলিত উল্লেখযোগ্য আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার, মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ারক্রাফ্ট (এমপিএ) এবং সাবমেরিন বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সংযোজন করেছে।
আরও পড়ুন: দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মালদ্বীপ যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, গত নভেম্বর ২০২১ সালে জার্মানি থেকে একজন নতুন এমপিএ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এভিয়েশন উইংয়ে যুক্ত হয়েছে। আরেকজনকে ২০২২ সালের মে মাসে যুক্ত করা হবে।
হেলিকপ্টার ও এমপিএ পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আধুনিক সব সুবিধা সম্বলিত দ্বিতীয় হ্যাঙ্গার নির্মাণের কাজ চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।