পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, যেসব দেশ মিয়ানমারে গণহত্যা স্বীকার করছে তাদের এটাও স্বীকার করতে হবে যে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাংলাদেশে গণহত্যা করেছিল।
তিনি বলেন, ‘আমরা শিগগিরই এই দেশগুলোর কাছে এ বিষয়টি উত্থাপন করব।
সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘রিকগনিশন অব বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১’- শীর্ষক সেমিনার শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেহেতু জাতিসংঘে ইতোমধ্যে একটি গণহত্যা দিবস রয়েছে, তাই দুর্ভাগ্যবশত বিশ্বসম্প্রদায় ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে জাতিসংঘের গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেবে না।
বিষয়টিকে জটিল আখ্যায়িত করে শাহরিয়ার আশা প্রকাশ করেন, সরকারিভাবে সেসব দেশের স্বীকৃতি না পেলেও বাংলাদেশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের জনগণের কাছ থেকে স্বীকৃতি পাবে।
সরকার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার জন্য জাতিসংঘের স্বীকৃতি অর্জনের জন্য তার প্রচেষ্টা জোরদার করেছে, যা বিশ্বের অন্যতম জঘন্য অপরাধ।
আওয়ামী লীগ সরকার ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
আরও পড়ুন: বিদেশি মিশনের সঙ্গে নথি শেয়ারের কারণ জানালেন শাহরিয়ার আলম
২০১৭ সালের ২০ মার্চ প্রস্তাবটি করা হয়েছিল।
এর আগে একই বছরের ১১ মার্চ সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে দিবসটি পালনের প্রস্তাব পাস হয়।
২০১৭ সালের মার্চ মাসে সংসদে উত্থাপিত হওয়ার পর থেকে জাতিসংঘের স্বীকৃতি অর্জনের বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অগ্রাধিকার হিসেবে ছিল।
সরকারের প্রচেষ্টা জাতিসংঘের স্বীকৃতি অর্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় কারণ জাতিসংঘ ৯ ডিসেম্বরকে গণহত্যার অপরাধের শিকার এবং এই অপরাধ প্রতিরোধের আন্তর্জাতিক স্মরণ ও মর্যাদা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে।
সরকার সর্বোচ্চ সংখ্যক দেশের কাছ থেকে গণহত্যার স্বীকৃতি চায়।
বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যার বিষয়টি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছিল, কিন্তু দ্রুতই গণহত্যার বিষয়টি বিস্মৃত হয়ে যায়।
২৫শে মার্চকে 'গণহত্যা দিবস' হিসেবে পালন করা হবে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মত্যাগের জন্য জাতির চিরন্তন স্মারক এবং এটা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত নৃশংস গণহত্যার সাক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
২৫ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানি সামরিক স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া খান বাংলাদেশে অপারেশন সার্চ লাইট নামে গণহত্যার নির্দেশ দিয়ে গোপনে পাকিস্তানে যান।
সেই রাত থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সদস্যরা এবং তাদের স্থানীয় সহযোগী রাজাকার, আল-বদর ও আল-শামস বাহিনী পরবর্তী ৯ মাসে সারা দেশে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করে।
আরও পড়ুন: ‘বিজিবি সতর্ক, মিয়ানমার থেকে এখন কেউ ঢুকতে পারবে না’: শাহরিয়ার আলম