বাংলাদেশে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভিকেন্তিয়েভিচ মানতিৎস্কি বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করার কারণে এই মুহূর্তে সত্যিকারের কূটনীতির কোনো জায়গা নেই।
মঙ্গলবার এক সেমিনারে বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, পশ্চিমা কূটনীতিকরা জোরালোভাবে রাশিয়ার পরাজয়ের দাবি করছে এবং ইউক্রেনকে শেষ পর্যন্ত লড়াই করার আহ্বান জানাচ্ছে।
তিনি বলেন ‘আমরা কখনই ইউক্রেনীয়দের সাথে কথা বলতে অস্বীকার করিনি, যা বেলারুশ এবং তুরস্কে অনুষ্ঠিত বৈঠক থেকে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু এই বৈঠকগুলো ফলপ্রসূ হওয়ার জন্য, কিয়েভ থেকে একটি গঠনমূলক অবস্থানের প্রয়োজন যা বর্তমানে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেনীয় পৃষ্ঠপোষকরা কিয়েভকে মস্কোর সাথে কোনও গঠনমূলক আলোচনা করতে বাধা দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, যা রাশিয়ার প্রচেষ্টাকে নিষ্ফল করে তোলে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, মস্কো সব সময় কূটনৈতিক আলোচনাকেই প্রাধান্য দিয়ে আসছে। তারা বিশ্বাস করে যে এই কূটনৈতিক আলোচনার জন্য একাধিক পক্ষের প্রয়োজন যা এ মুহূর্তে অনুপস্থিত।
৭ জুন (মঙ্গলবার) ‘বর্তমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে কূটনীতির গুরুত্ব’ শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এটি আয়োজন করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইন্সিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (এসআইপিজি)’র সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস)।
সেমিনারে বাংলাদেশে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা ওসমান তুরান, জার্মানির পিআরআইএফ’এর পরিচালক অধ্যাপক ড. নিকোল ডিটেলহফ, নরওয়ের আর্কটিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গুনহিল্ড হুগেনসেন জর্ভ এবং বাংলাদেশ সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও বর্তমানে এসআইপিজির প্রফেসরিয়াল ফেলো রাষ্ট্রদূত শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এনএসইউর উপ উপাচার্য অধ্যাপক এম. ইসমাইল হোসেন।
পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে: আসন্ন বাজেট প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী
মুস্তফা ওসমান তুরান বলেন, তুরস্ক সবসময় ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও তার অখণ্ডতাকে সমর্থন করে এবং রাশিয়ার আগ্রাসনকে জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মনে করে। যুদ্ধরত উভয় পক্ষই বর্তমানে সামরিক লাভের দিকে মনোনিবেশ করছে, তবে যুদ্ধের সমাপ্তি এবং শান্তি স্থাপন শুধুমাত্র আলোচনার টেবিলেই হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমরা একটি কূটনৈতিক সমাধানের আশা ছেড়ে দিতে পারি না। এবং যুদ্ধের অবসানে বহুপাক্ষিক প্রচেষ্টা ও আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির গুরুত্বের উপর তিনি জোর দেন।
মুস্তফা ওসমান বলেন, তুরস্ক ইউক্রেনে শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় যার ফলস্বরূপ ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চলগুলো সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধার করা হবে। তিনি আরও দাবি করেন যে ইউক্রেনের সাথে তুরস্কের কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে এবং একই সাথে রাশিয়ার সাথেও তাদের কার্যকর সম্পর্ক রয়েছে যা দুই দেশের মাঝে শান্তি স্থাপনে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে।