ইউক্রেন
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের সমাপ্তি চায় ইউক্রেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রাশিয়ার সঙ্গে সাময়িক যুদ্ধবিরতি নয়, বরং ইউক্রেন চলতি বছরেই পুরোপুরি যুদ্ধের সমাপ্তি চায় বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা।
শনিবার (১২ এপ্রিল) তুরস্কে আন্তালিয়া কূটনীতি ফোরামে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এ বছরই এই যুদ্ধের সমাপ্তি চাই। কিন্তু, এতে যেন কোনো ধরনের কারসাজি না করা হয়।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউরোপ: ম্যাঁখো
তিনি জোর দিয়ে বলেন, সংঘাতের একটি শান্তিপূর্ণ ও কূটনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজে বের করাই আমাদের লক্ষ্য। কারণ, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের ফলাফলই ইউরোপের ভবিষ্যতের নিরাপত্তা কাঠামো গড়ে তুলবে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা আন্তর্জাতিক এজেন্ডায় উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থায় ইউক্রেনের সম্ভাব্য সদস্যপদ রাখার উপরও জোর দেন। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের ১১০টি যুদ্ধ করার মতো ব্রিগেড প্রস্তুত রয়েছে, যা ট্রান্সআটলান্টিকের নিরাপত্তায় অবদান রাখতে পারে।’
৪ দিন আগে
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউরোপ: ম্যাঁখো
রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা দিতে প্রস্তাবিত নিজস্ব সেনাবাহিনী মোতায়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউরোপ। কিয়েভের গুরুত্বপূর্ণ শহর ও কৌশলগত স্থাপনাগুলোতে এই সেনা মোতায়েন করা হতে পারে জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো। বাহিনীতে থাকতে পারে ১০ থেকে ৩০ হাজার সেনা।
এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) প্যারিসে ৩১টি দেশের নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ফরাসি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
সেনা মোতায়ন নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান ম্যাঁখো। এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বৃহস্পতিবার প্যারিসের এলিসি প্রাসাদে ৩০টি দেশের নেতাদের অংশগ্রহণে শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি।
ম্যাঁখো বলেন, ‘ইউক্রেনের মাটিতে যারাই হামলা চালাবে, তাদেরও পাল্টা হামলার মুখোমুখি হতে হবে। আমাদের রণকৌশল অনুযায়ী সেনারা শত্রুদের মোকাবিলা করবে।’
ইউক্রেনে সেনা মোতায়েনে যেসব দেশ সহায়তা করতে আগ্রহী; তাদের নিয়ে একটি জোট গঠন করতে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তিনি কাজ করছেন বলে জানান ম্যাঁখো।
আরও পড়ুন: ‘ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে’ থাকা ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিতের তাগিদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর
ইউক্রেনে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত ও রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলা প্রতিহত করতে এই উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে অভিমত দেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। তবে রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলার জবাবে কি ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে; সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।
ম্যাঁখো জানান, প্রস্তাবিত সশস্ত্র বাহিনীর সেনারা শুরুতেই ফ্রন্টলাইনে (সম্মুখযুদ্ধে) রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না। এমনকি এই বাহিনী ফ্রন্টলাইনে অবস্থানও করবে না। ইউক্রেনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহর ও কৌশলগত ঘাঁটিগুলোর নিরাপত্তায় থাকবে তারা।
ম্যাঁখো বলেন, ইউক্রেনকে সমর্থন জানাতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও জোটগুলো এই উদ্যোগ নিয়েছে। যু্দ্ধ জড়াতে নয় বরং ইউক্রেনে সংঘাত বন্ধে এটি একটি শান্তি প্রস্তাব বলে মনে করেন তিনি। এছাড়া সংঘাত একমাত্রই রাশিয়াই চায় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ৩১টি দেশের নেতার উপস্থিতি আশা করা হচ্ছে। এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে নিরাপত্তা সম্মেলন আয়োজন করে প্যারিস। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোসহ ৭টি দেশের নেতারা সম্মেলনে অংশ নেয়।
এই সম্মেলনে উপস্থিত না থাকলেও আলোচনায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে শান্তিচুক্তির পর ইউক্রেনের স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় সেনা মোতায়েনের প্রস্তাবে প্রকাশ্যে কোনো আগ্রহ দেখায়নি যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন।
অবশ্য ইউরোপীয় নেতাদের এই পরিকল্পনায় অনাগ্রহ দেখিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। সেনা মোতায়েনের কোনো প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন না তিনি।
আরও পড়ুন: ইউরোপকে জেগে ওঠার আহ্বান গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীর
তবে ইউরোপের নেতারা জানান, রুশ প্রেসিডেন্টের অতীত কার্যকলাপের ফলে তার প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন না তারা।
এ সময় ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল ও ২০২২ সালের পূর্ণমাত্রায় ইউক্রেনে হামলা চালানোর ঘটনা উল্লেখ করে তারা বলেন, শান্তিচুক্তি হওয়ার পরও পুনরায় হামলা চালাতে পারে পুতিন। সম্ভাব্য এই হামলা প্রতিহত করতেই ইউক্রেনে সেনা মোতায়ন প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ফরাসী কর্মকতা জানান, ইউরোপীয় জোটের সেনাবাহিনী ফ্রন্টলাইন থেকে কিছুটা দূরে ইউক্রেনের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে, দিনিপার নদীর তীরে মোতায়ন করা হতে পারে।
আবার ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চল বা প্রতিবেশী কোনো দেশেও সেনা মোতায়েন করা হতে পারে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
ব্রিটিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছে, প্রস্তাবিত ওই বাহিনীতে ১০ থেকে ৩০ হাজার সেনা থাকতে পারে। স্নায়ুযুদ্ধের পর সেনা সংকুচিত করা ইউরোপের দেশগুলোর সেনাবাহিনী গঠনের এই উদ্যোগকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
২১ দিন আগে
পুতিন কি রাজি হবেন এক মাসের যুদ্ধবিরতিতে?
যুদ্ধবিরতিতে ইউক্রেন সম্মতি দেওয়ার পর এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে রাশিয়া। যদিও ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া বর্তমানে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। এখন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কী যুদ্ধবিরতিতে সায় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির সুযোগটি কাজে লাগাবেন, নাকি প্রত্যাখ্যান করবেন?
সৌদি আরবের জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এক মাসের একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ইউক্রেন। এরপরে রাশিয়াকেও একই প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শেষে জানিয়েছেন, শিগগিরই রাশিয়া-ইউক্রেনকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব দেওয়া হবে।
এরইমধ্যে ইউক্রেন এ প্রস্তাবের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে উল্লেখ করে রুবিও বলেন, যদি রাশিয়াও শান্তির হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে এতদিনের চলমান যুদ্ধ বন্ধ হতে খুব বেশি দেরি নেই। কিন্তু রাশিয়া যদি এ প্রস্তাব মেনে না নেয়, তাহলে শান্তি আলোচনায় অনিশ্চয়তা দেখা দেবে বলে মত দেন তিনি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, যুদ্ধ বিরতিতে রাশিয়ার রাজি হওয়া না-হওয়া বহুমুখী হিসাব-নিকাশের ওপর নির্ভর করছে।
চলতি বছর জানুয়ারি অবধি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাফ জানিয়ে এসেছেন, কোনো ধরনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার আগ্রহ তার নেই। যদি শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতেই হয়, সেটি হতে হবে স্থায়ী সমাধান।
বর্তমানে যুদ্ধে অনেকটাই কোণঠাসা ইউক্রেন, রাশিয়ার সেনারা ভালো অবস্থানে রয়েছে। তাছাড়া পুতিন বারংবার বলেছেন, সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা শক্তি সঞ্চয়ের সুযোগ পাবেন। এই পরিস্তিতিতে পুতিন কি ট্রাম্পের মন রাখবেন, নাকি যুদ্ধ চালিয়ে ইউক্রেনে জয়ের পথেই হাঁটবেন তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই।
মূলত, জানুয়ারির ২০ তারিখ ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেয়ার পর পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টে গেছে। বিশেষ করে ১২ ফেব্রুয়ারি পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের একান্ত ফোনালাপ এবং এরপর একের পর এক রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মার্কিনিদের বৈঠকই চলমান যুদ্ধের আশু সুরাহার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন কূটনীতিবিদরা।
তবে রাশিয়ার পদক্ষেপ এখনও স্পষ্ট করে বোঝা যাচ্ছে না বলে মনে করেন তারা। সৌদিতে বৈঠকের পর বেশ কৌশলের সঙ্গেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ক্রেমলিন। ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে কি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে বিস্তারিত না জেনে কোনো মন্তব্য জানানো হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে চায় না বলেই রাশিয়া এমন কৌশলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: মুখোমুখি বসবেন ট্রাম্প-পুতিন, চলছে প্রস্তুতি
রুশ-মার্কিনিদের সাপে-নেউলের সম্পর্কের বাইরে গিয়ে ট্রাম্প-পুতিন সখ্য কিন্তু বিশ্ব পাড়ায় মোটেই অজানা নয়। তবে এই সখ্যই সব নয়: এর বাইরে আছে ইউক্রেনের খনিজের প্রতি ট্রাম্পের চোখ আর কিয়েভের ভূমির ওপর পুতিনের লোভ।
শেষ কদিনের যুদ্ধে ভালোই এগিয়েছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ শহর কুরুস্কের বেশিরভাগ এলাকা এখন রাশিয়ার দখলে। দর কষাকষিতে কুরুস্ককে নিজেদের হাতে রাখতে চান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে দিনদিন তা কঠিন হয়ে উঠছে তার সৈন্যবাহিনীর জন্য।
আবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভেন্স এবং খোদ ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নজিরবিহীন বাকবিতণ্ডা এবং পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রকে অসম্মান করার অভিযোগ নিয়ে আমেরিকা ত্যাগের মতো ঘটনা এতদিন জেলেনস্কিকে ভালোই ভুগিয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনকে সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, শান্তি চুক্তির প্রতি যতদিন না আগ্রহ দেখাবে ইউক্রেন, ততদিন বন্ধ থাকবে সব ধরনের সামরিক সহযোগিতা। নিজের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদেই বর্তমান বাস্তবতাকে মেনে নিতে হচ্ছে জেলেনস্কির।
কিন্তু পুতিন কেন আপস করবে? বাইডেন প্রশাসনের সময়ে হাজারখানেক নিষেধাজ্ঞার ভারেও নতজানু না হওয়া পুতিন কেন এত সহজে রাজি হবে যুদ্ধবিরতিতে?
এ প্রশ্নের উত্তর মিলবে নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি এস পেশকভের সাক্ষাৎকারে। পেশকভ জানিয়েছেন, জেদ্দার আলোচনার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়ও পর্যবেক্ষণ করছে মস্কো। এখনি হলফ করে কিছু বলা না গেলেও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের আরেক দফা ফোনালাপের পর রাশিয়া নিজের সিদ্ধান্ত জানাতে পারবে।
প্রথমবার ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপে রাশিয়ার ইতোমধ্যে দখলকৃত ইউক্রেনের ভূমি নিয়ে ফয়সালা, কোনোভাবেই ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদান করতে না দেওয়ার ওয়াদা এবং পূর্ব-মধ্য ইউরোপে ন্যাটোর হম্বিতম্বি কমিয়ে আনার ব্যাপারে পুতিন জোরালো দাবি তুলেছেন বলে জানা যায়।
চলতি সপ্তাহেই ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আবারও পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ করবেন তিনি। বার্তাসংস্থা এপির নিশ্চিত করা এই তথ্য থেকেই চূড়ান্ত দর কষাকষির আভাস পাচ্ছেন কূটনীতিক বিশ্লেষকরা।
এর আগে ট্রাম্প বেশ কয়েকবার তার বক্তব্যে আভাস দিয়েছেন, এই চুক্তিতে ইউক্রেনকে ছাড় দিতে হবে। এতদিন ইউক্রেন ছাড় দিতে রাজি না থাকলেও এবার বাধ্য হয়েই আপসের পথে হাঁটতে হতে পারে দেশটি।
রুশ রাজনৈতিক বিশ্লেষক এলিয়া গ্রাশ্চিনেকভ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সাদা চোখে এই চুক্তিতে কারও বিজয় হয়নি মনে হলেও রাশিয়া কৌশলগত বিজয় নিশ্চিত করেই চুক্তি স্বাক্ষরে সম্মতি দেবে।’
রাশিয়া কৌশলগত বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এ কথা উঠে এসেছে মস্কোর সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনেও। বলা হয়েছে, রুশ প্রতিনিধিরা জেদ্দায় না থাকলেও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ প্রধান জন র্যাটক্লিফ নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন রুশ প্রশাসনের সঙ্গে।
উপরন্তু ট্রাম্পের প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ গত মাসেও রাশিয়ায় পুতিনের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা শেষে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরেছেন এবং আগামীতেও তার রাশিয়া সফরের সম্ভাবনা রয়েছে।
এখানে একটা বিষয় লক্ষ্য করার মতো তা হলো, এই পুরো আলোচনায় ইউরোপকে তোয়াক্কাই করছে না ট্রাম্প প্রশাসন।
ইউরোপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের ঘটনায় ইতোমধ্যে দুই ভূখণ্ডের সম্পর্ক অনেকটাই শীতল। ন্যাটো নিয়েও ট্রাম্প খুশি না; শপথ নিয়েই দাবি জানিয়েছেন ন্যাটোর বাজেট বাড়ানোর। আবার ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও তার উপদেষ্টা ইলন মাস্কও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাটো থেকে বের হয়ে যাওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: ওভালকাণ্ড: পুতিনের পৌষমাস, জেলেনস্কির সর্বনাশ!
এদিকে ডেনমার্কের থেকে গ্রিনল্যান্ড আদায় চেষ্টার ইস্যুতেও ইউরোপের সঙ্গে কয়েক দফা মন কষাকষি হয়েছে ট্রাম্পের। সব মিলিয়ে ইউরোপ-আমেরিকার ঐতিহাসিক সম্পর্ককে ভেঙে রাশিয়ামুখী হওয়াকে খোদ যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কংগ্রেস সদস্য ভালো চোখে না দেখলেও, এটাই এখন বাস্তব।
এই বাস্তবতার ভিতকে পুঁজি করেই রুশ কূটনৈতিক বিশ্লেষক স্যামুয়েল শ্যারাপ বলেন, ‘ওয়াশিংটনের সঙ্গে বর্তমানে মস্কোর সম্পর্ক যেকোনো সময়ের তুলনায় ভালো। ট্রাম্প-পুতিনের মধ্যকার উষ্ণতার বিচার-বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায়, যে যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছে তা মস্কো মেনে নিলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।’
শুরুতে সাময়িক যুদ্ধবিরতি দিয়ে যুদ্ধ বন্ধের পথ রচিত হলেও পরবর্তীতে হয়তো এই এক মাসের যুদ্ধবিরতিই স্থায়ী যুদ্ধ বন্ধের সূচনা করবে এবং তিন বছর ধরে চলা এই সংঘাতের অবসান হবে বলে মত আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক।
৩৪ দিন আগে
যুদ্ধবিরতিতে সম্মত: ফের মার্কিন সামরিক সহায়তা পাচ্ছে ইউক্রেন
ইউক্রেনকে দেওয়া সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ৩০ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইউক্রেন সম্মত হওয়ায় পরেই এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সৌদি আরবের জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন। মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এমন খবর দিয়েছে।
বৈঠক শেষে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ওয়াশিংটনের সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কিয়েভ সম্মত হয়েছে। একই প্রস্তাব মস্কোকেও দেওয়া হবে।
রুবিও বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছে। এবার মস্কোর সিদ্ধান্ত জানানোর পালা। মস্কো সম্মত না হলে তারা শান্তির পথে বড় একটি প্রতিবন্ধকতা হবে।’এ বিষয়ে ট্রাস্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ জানান, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি আলোচনায় বসতে ট্রাম্পের সঙ্গে কিয়েভ একমত বলে নিশ্চিত করেছেন ইউক্রেনের কর্মকর্তারা। ইউক্রেনে দীর্ঘমেয়াদে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতেও আলোচনা শুরু হয়েছে।’
এছাড়া ইউক্রেনকে দেওয়া বিলিয়ন ডলারের মার্কিন সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তাৎক্ষণিকভাবে তুলে নেওয়ায় ট্রাম্প সম্মতি দিয়েছেন বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌদি যুবরাজের বৈঠক
মঙ্গলবারের এই বৈঠক কিছুদিন ধরে চলা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের সম্পর্কের তিক্ততা কিছুটা হলেও প্রশমিত করেছে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে নজিরবিহীন বাকবিতণ্ডায় জড়ান ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ওভাল অফিসের একটি বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার মাত্র কয়েকদিন পরে সামরিক সহায়তা স্থগিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ট্রাম্প।
চলমান এই উত্তেজনার মধ্যে জেদ্দার এই বৈঠক ইউক্রেনের জন্য কিছুটা হলেও স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জেদ্দার বৈঠক সম্পর্কে হোয়াইট হাউসে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা আশা করছি, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই একটি চুক্তি চূড়ান্ত রূপ নিতে পারে।’
যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ইউক্রেন সম্মত হওয়ায় তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেন সম্মত হয়েছে, এটা ভালো।’ তিনি এ বিষয়ে মস্কোর সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানান।
এদিকে সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে পৃথক এক বৈঠকে জেলেনস্কি জানান, ‘আমাদের অবস্থান প্রথম থেকেই স্পষ্ট। ইউক্রেন দীর্ঘমেয়াদে শান্তি চায়। তবে সেই সঙ্গে নিরাপত্তাও চান ইউক্রেনীয়রা, যেন যুদ্ধ আবার ফিরে না আসে।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছেন ট্রাম্প
যুক্ররাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রে ইয়ারমার্ক জানান, ‘আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে। ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি ফেরাতে একই লক্ষ্যে তারা কাজ করছেন।’
তবে এই বৈঠক বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি রাশিয়া। যদিও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আগেই জানিয়েছেন, ‘তারা সাময়িক কোনো যুদ্ধবিরতি চান না। বরং তারা স্থায়ী শান্তি চুক্তি চান।’
এছাড়া ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়া ও ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল তারা দখলে নিয়েছে সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র কোনো ছাড় দিয়ে তারা কোনো চুক্তি করবে না বলেও জানিয়েছে মস্কো। ক্রিমিয়া উপদ্বীপসহ ইউক্রেনের ভূখণ্ডের এক–পঞ্চমাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। ২০১৪ সালের যুদ্ধে ক্রিমিয়া দখল করে রাশিয়া।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসার ব্যাপারে ক্রেমলিন রাজি আছে বলেও জানিয়েছে রুশ প্রশাসন।
৩৬ দিন আগে
ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছেন ট্রাম্প
ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে চাপ দিতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি।
তিন বছর আগে ইউক্রেনে রাশিয়া আক্রমণ করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভে ১৮০ বিলিয়ন ডলারের বেশি সামরিক সহায়তা পাঠিয়েছে। মার্কিন এই সহায়তার জন্য জেলেনস্কি যথেষ্ট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেননি বলে অভিযোগ করেন ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। ওভাল অফিসের একটি বৈঠক উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডার মধ্যে ভেস্তে যাওয়ার মাত্র কয়েকদিন পরে সামরিক সহায়তা স্থগিত করার পদক্ষেপটি নিলেন ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ট্রাম্প একটি শান্তি চুক্তিতে পৌঁছানোর দিকে মনোনিবেশ করছেন এবং জেলেনস্কিকে সেই লক্ষ্যে 'প্রতিশ্রুতিবদ্ধ' দেখতে চান।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি সমাধানে ভূমিকা রাখছে কিনা তা নিশ্চিত করতে ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন সহায়তা 'স্থগিত ও পর্যালোচনা' করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা সহায়তার বিষয়ে এসব কথা বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) জানান।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠক: শূন্যহাতে ফিরলেও প্রশংসায় ভাসছেন জেলেনস্কি
ওই কর্মকর্তা বলেন, যতক্ষণ না রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের আলোচনায় বসার প্রতিশ্রুতি পান, ততক্ষণ ট্রাম্পের এই আদেশ কার্যকর থাকবে।
ইউক্রেনকে কংগ্রেসের অনুমোদিত সহায়তা আটকে রাখার প্রায় পাঁচ বছর পর সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া হলো। ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করতে জেলেনস্কিকে চাপ দেন ট্রাম্প।
২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি গর্ব করেও বলেছিলেন যে, তিনি একদিনের মধ্যে লড়াই বন্ধ করতে পারেন।যুদ্ধ নিয়ে জেলেনস্কির প্রতি ক্রমবর্ধমান হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি। একই সঙ্গে নিজের আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন যে, যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছালে শান্তি বজায় রাখার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বিশ্বাস করা যেতে পারে। এমনকি তিনি দীর্ঘদিন ধরে পুতিনের প্রশংসাও করে আসছিলেন।
এর আগে সোমবার ট্রাম্প জেলেনস্কির সমালোচনা করে বলেন, যুদ্ধের সমাপ্তি সম্ভবত 'এখনও অনেক দূরে'। অন্যদিকে গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সম্পর্কের বিষয়ে ইতিবাচক প্রস্তাব দেওয়ার চেষ্টা করেন জেলেনস্কি। এসময় তিনি বলেছিলেন, যুদ্ধ অবসানে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে সময় লাগবে।
৪৪ দিন আগে
ইউক্রেনের পাশে থাকার আশ্বাস ইউরোপীয়দের
হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাকবিতণ্ডার পর ইউক্রেনের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে ইউরোপীয় দেশগুলো। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এই অপ্রত্যাশিত ঘটনাটি ঘটেছে। হোয়াইট হাউসের আমন্ত্রিত একজন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এমন আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকে।
ট্রাম্পের এই আচরণের পর সরব হয়েছেন ইউরোপের নেতারাও। গত মাসে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ইউরোপের নেতাদেরও তুলোধুনা করতে দেখা গিয়েছিল মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সকে।
আগে থেকেই তার আচরণে অসন্তুষ্ট ইউরোপের নেতারা, তাই বেশ জোরে-সোরেই জেলেনস্কির পক্ষ অবলম্বন করেছেন এবার। এ ঘটনায় যুক্তরাজ্যের ডাউনিং স্ট্রিট থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের প্রতি দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের নিরবচ্ছিন্ন সমর্থন অব্যাহত রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্থায়ী শান্তির পথে অগ্রসর হওয়ার উপায় খুঁজে পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্টারমার।
শুক্রবার রাতে জেলেনস্কিকে সমর্থন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে পোস্ট দিয়েছেন। এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন লিখেছেন, ‘আপনার এই ব্যক্তিত্ব ইউক্রেনের জনগণের সাহসিকতাকে সম্মানিত করেছে।’
জেলেনস্কিকে সাহসী ও নির্ভীক থাকতে অনুপ্রেরণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি একা নন সম্মানিত প্রেসিডেন্ট, আমরা রয়েছি আপনার পাশে।’
জার্মানির সম্ভাব্য চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মেরৎস এক্সে লিখেছেন, ‘প্রিয় ভলোদিমির জেলেনস্কি, ভালো-খারাপ উভয় সময়ে আমরা ইউক্রেনের পাশে আছি।’
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান ট্রাম্পের প্রশংসা করে এক্স পোস্টে লিখেছেন, ‘শক্তিশালীরা শান্তি চায়, আর দুর্বলরা যুদ্ধ। এ কারণে নানা ধরনের বাধা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শান্তির জন্য সাহসিকতার সঙ্গে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ধন্যবাদ মি. প্রেসিডেন্ট।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ইউরোপীয়দের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠক চলতি সপ্তাহে
আবার ইউক্রেনের পক্ষ সমর্থন করে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উল্ফ ক্রিস্টারসন এক্সে লিখেছেন, ‘আপনারা শুধু নিজেদের স্বাধীনতার জন্যই নয়, সমগ্র ইউরোপের স্বাধীনতার জন্যই লড়ছেন।’
ওই পোস্টে তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার আগ্রাসন যদি ছড়িয়ে পড়ে, তবে নর্ডিক ও বাল্টিক দেশগুলোর জন্যও ঝুঁকি তৈরি হবে। শুক্রবারের ঘটনার পর ইউক্রেনসহ অন্যান্য বিষয়ে ইউরোপীয়দের সাথে খোলাখুলি আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি।
এ ছাড়াও ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর খালি হাতে হোয়াইট হাউস ছাড়লেও জেলেনস্কি নিজ দেশের জনগণের কাছ থেকে অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছেন।
৪৭ দিন আগে
ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা রাশিয়ার
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটিতে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া বলে অভিযোগ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, রাতভর দুই শতাধিক ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।-খবর এনডিটিভির
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এটিই ছিল রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা।’
এই হামলাকে ‘আকাশ সন্ত্রাস’ আখ্যা দিয়ে মিত্রদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ শুরু হওয়ার তৃতীয়বার্ষিকীর রাতে ২৬৭টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।’
ইউক্রেনের শহর ও গ্রামগুলোতে ইরানি ড্রোন হামলা শুরু করার পর এটিই ছিল সবচেয়ে বড় আঘাত বলে জানান জেলেনস্কি।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার হয়ে যেতে পারে ইউক্রেন: ট্রাম্প
ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী জানিয়েছে, ‘১৩৮ বিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। আর ১১৯টি রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে গেছে। এ সময়ে রাশিয়া তিনটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রও নিক্ষেপ করেছে। এতে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিতে গেল কয়েক মাস ধরে দেশটিতে সমন্বিত ড্রোন হামলা চালাচ্ছে মস্কো। জেলেনস্কি বলেন, ‘গেল সপ্তাহে প্রায় এক হাজার ১৫০টি ড্রোন, এক হাজার ৪০০ সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলায় সক্ষম বোমা ও বিভিন্ন ধরনের ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।’
এ সময়ে ইউক্রেনীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনাকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। ন্যায় ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় মিত্রদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট।
৫৩ দিন আগে
মুখোমুখি বসবেন ট্রাম্প-পুতিন, চলছে প্রস্তুতি
ফোনালাপ পর্ব শেষে এবার মুখোমুখি বসতে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ায় তার সমকক্ষ ভ্লাদিমির পুতিন। বিশ্বের আলোচিত এই দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে। এই বৈঠকের মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে গেল তিন বছর ধরে চলা মার্কিন নীতিতে বড় পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সময় শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এই তথ্য নিশ্চিত করেছে রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। পুতিন-ট্রাম্পের সম্ভাব্য বৈঠকে শুধু ইউক্রেন যুদ্ধ নয়; বৈশ্বিক নানা বিষয়ে বৃহত্তর পরিসরে আলোচনা হবে বলে জানান তিনি।
সের্গেই রিয়াবকভ জানান, ‘এই বৈঠক দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ। তবে বৈঠক আয়োজন একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-ট্রুডোর ফোনালাপ
এ সময় বৈঠকের প্রস্তুতি বিষয়ে আলোচনা করতে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে দেশ দুটির রাষ্ট্রদূতদের সাক্ষাৎ হবে বলে নিশ্চিত করেন তিনি। এর আগে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ওভাল অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করতে একমত হওয়ার কথা জানান ট্রাম্প। তাদের দীর্ঘ ফোনালাপের বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয় তখন। ওভাল অফিসে ট্রাম্প বলেন, ‘এই যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা করতে পুতিন ও আমি একমত।’
ওভাল অফিসের বৈঠকের পর নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘তিনি ও রুশ প্রেসিডেন্ট একমত হয়েছেন, তাদের নিজ নিজ কূটনৈতিক দল অবিলম্বে আলোচনা শুরু করবে এবং আলোচনার জন্য একে অপরকে নিজেদের রাজধানীতে আমন্ত্রণ জানাবে।’
এরপর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সৌদির দিরিয়াহ প্রাসাদে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ও রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে সৌদি আরবে প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসেন দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-জেলেনস্কি দ্বন্দ্বে
তবে সেই বৈঠকে ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ না জানানোতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন ইউক্রেনের প্রসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। কিয়েভকে ছাড়া করা বৈঠকের কোনো সিদ্ধান্ত মেনে না নেওয়ার কথাও সুস্পষ্ট করে জানান দেন তিনি।
এছাড়াও আলোচনায় ইউরোপকে অর্ন্তভুক্ত না করায় তাদের পাশ কাটিয়ে শান্তি চুক্তির আলোচনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন ইউরোপীয় নেতারা।
৫৩ দিন আগে
রুশ-মার্কিন বৈঠক: যুদ্ধ বন্ধ ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়নে গুরুত্ব
ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ও রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে সৌদি আরবে প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসেছেন দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারা। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে এই বৈঠক। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সৌদির দিরিয়াহ প্রাসাদে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
দ্বিপাক্ষিক এই বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধ বাদে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যে স্নায়ুযুদ্ধ চলছে দেশদুটিতে; সেখানে আসতে পারে পরিবর্তন। তাছাড়া এই আলোচনা ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে সাক্ষাতের পথও সুগম করবে বলেও মনে করা হচ্ছে।
রিয়াদে শীর্ষস্থানীয় মার্কিন ও রুশ কর্মকর্তাদের নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকটির আয়োজন করেছে মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরব। তবে মঙ্গলবার শুরু হওয়া এই বৈঠকে ইউক্রেন বা ইউরোপের কোনো দেশের প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, যা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে ইউরোপীয় নেতাদের কপালে।
বৈঠকের পর ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‘এই আলোচনাকে তারা রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের সূচনা হিসেবে দেখছেন।’ আলোচনার অগ্রগতি হলে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে দুই দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠক আয়োজিত হবে বলে জানান তিনি।
ওয়াশিংটনের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেছেন, মঙ্গলবারে বৈঠক সমঝোতা আলোচনা শুরু করার জন্য নয়; বরং ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে রাশিয়া ‘আন্তরিক’ কি না, সেটা বোঝার জন্য আয়োজন করা হয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন ও মস্কোতে দূতাবাসকর্মীদের ফিরিয়ে সেগুলো সচল করার বিষয়ে একমত হয়েছে দেশ দুটি। পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো দুই পক্ষ খতিয়ে দেখবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় নেই ইউক্রেন
অন্যদিকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব দেশ দুটিতে অবস্থিত নিজেদের দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেবেন তারা। দূতাবাসগুলোতে ব্যাংক লেনদেন বাধা অপসারণসহ কূটনৈতিক মিশনের প্রতিবন্ধকতা দূর করা হবে।
এর আগে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন শেষে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সৌদি বৈঠকে কিয়েভকে আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের এই আলোচনায় খোদ ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ না জানানোতে উদ্বেগ প্রকাশ করে কিয়েভ। তিনি বলেন, ইউক্রেনকে ছাড়া আয়োজিত বৈঠকের কোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে না।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ওভাল অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করতে একমত হওয়ার কথা জানায় ট্রাম্প। তাদের মধ্যে ফোনালাপের বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়।
ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপে ইউরোপীয় দেশগুলো আশঙ্কা করেছে, তাদের বাদ দিয়েই হয়তো এমন একটি শান্তি চুক্তি হতে যাচ্ছে, যা তাদের নিজেদের নিরাপত্তার ওপরও প্রভাব ফেলবে। বিশেষত সেটি যদি রাশিয়ার অনুকূলে হয়।
আরও পড়ুন: যুদ্ধ বন্ধে ‘কার্যকর আলোচনায়’ থাকবে ইউক্রেন ও ইউরোপীয়রা
তবে তাদের এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, সৌদিতে যুদ্ধ বন্ধের আলোচনার কেবল সূত্রপাত হতে যাচ্ছে। অগ্রগতি হলে অবশ্যই ইউক্রেন ও ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোকে আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানো হবে।
রুবিও সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই কথা বলেছেন মুখপাত্র ব্রুস। তিনি নিশ্চিত করেছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার শুরু হয়েছে কেবল। ক্রমান্বয়ে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করবে ওয়াশিংটন।
৫৭ দিন আগে
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় নেই ইউক্রেন
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে বৈঠক শুরু করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা। যদিও এই বৈঠকে অংশীদার হিসেবে রাখা হয়নি ইউক্রেনকে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সৌদির দিরিয়াহ প্রাসাদে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এতে মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, আর রাশিয়ার সের্গেই লাভরভ।
বৈঠকে রুবিওর সঙ্গে যুক্ত আছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ ও হোয়াইট হাউসের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ। রাশিয়ার পক্ষে সের্গেই লাভরভ ছাড়াও ক্রেমলিনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ আছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, রাশিয়াকে কোণঠাসা করে রাখতে দীর্ঘদিন ধরে যে নীতি অবলম্বন করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র, এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে সেখান থেকে সরে এসে এসেছে দেশটি। এই আলোচনা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে সাক্ষাতের পথও সুগম করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন শেষে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সৌদি বৈঠকে কিয়েভকে আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ইউক্রেনকে ছাড়া আয়োজিত বৈঠকের কোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে না।
তবে সৌদির এই বৈঠককে ‘সম্পূর্ণ দ্বিপাক্ষিক’ হিসেবে দেখেছেন উপদেষ্টা উশাকভ। এ কারণেই ইউক্রেনকে যুক্ত করা হয়নি বলে জানান তিনি। সৌদির মালিকানাধীন স্যাটেলাইট চ্যানেল আল আরবিয়াও এই বৈঠককে মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে একটি স্বাভাবিক আলোচনা হিসেবেই নিশ্চিত করেছে।
রাশিয়া ২০২২ সালে ইউক্রেনে অভিযান শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছায়। প্রায় তিন বছর পর এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে দেশ দুটির সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধ বন্ধে ‘কার্যকর আলোচনায়’ থাকবে ইউক্রেন ও ইউরোপীয়রা
ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের এই আলোচনায় খোদ ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ না জানানোতে উদ্বেগ প্রকাশ করে কিয়েভ। এর পাশাপাশি আলোচনায় ইউরোপকে অর্ন্তভুক্ত না করায় তাদের পাশ কাটিয়ে শান্তি চুক্তির আলোচনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন ইউরোপীয় নেতারা।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সময় সোমবার প্যারিসে ইউক্রেনে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে ইউরোপের নেতাদের জরুরি বৈঠকে ডাকেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাকরন।
এছাড়াও মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন তিনি।
৫৮ দিন আগে