ফেনীতে মাদকের মামলায় ১৫ বছরের সাজা পাওয়া পুলিশের বরখাস্ত পলাতক কর্মকর্তা আদালতে আত্মসমর্পণের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ মো. কায়সার মোশাররফ ইউসুফ তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশের বরখাস্ত ওই কর্মকর্তার নাম মো. বিল্লাল হোসেন প্রকাশ বেলাল (৪০)। তিনি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জিরুইন মতিন মেম্বারের বাড়ির আবদুল মতিনের ছেলে এবং তৎকালীন কক্সবাজার পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক (এসআই)।
গত ৬ মার্চ মাদকের মামলায় বিল্লালসহ ১৩ জন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন আদালত।
আরও পড়ুন: খুলনায় নাশকতার মামলায় বিএনপির ৬৬ নেতাকর্মী কারাগারে
রায়ে মো. বিল্লাল হোসেনসহ ছয় জনকে ১৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
আদালতে হাজির হয়ে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং তিনি ওই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন। তিনি ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়েছেন বলেও দাবি করেন।
তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও তাকে জামিন দেয়া হলে তিনি পালাবেন না। তার পক্ষে জামিন আবেদন শুনানি করেন ফেনীর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী।
উল্লেখ্য, ফেনীতে গত ৬ মার্চ বহুল আলোচিত এই মাদকের (ইয়াবা) মামলায় পাঁচ পুলিশ সদস্য, একজন আইনজীবী, একজন আইনজীবী সহকারীসহ ১৩ জনের বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়।
দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ছয় জনকে ১৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওযা হয়।
ছয় জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও চার মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং একজনকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এছাড়াও, তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা হারে জরিমানা অনাদায়ে আরও চার মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডদেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, একই মামলায় গ্রেপ্তার ঢাকা এসবির উপপরিদর্শক মাহফুজুর রহমানের প্রাইভেটকার চালক জাবেদ আলীকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
রায় ঘোষণাকালে দণ্ডপ্রাপ্ত ১৩ জন আসামির মধ্যে আট আটজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্র জানা যায়, ২০১৫ সালের ২০ জুন দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী সদর উপজেলার লালপোল এলাকায় একটি প্রাইভেটকারে অভিযান চালিয়ে ছয় লাখ ৮০ হাজার পিস ইয়াবাসহ পুলিশের এএসআই মাহফুজুর রহমান ও তার গাড়িচালক জাবেদ আলীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব সদস্যরা।
এ ঘটনায় র্যাবের নায়েক সুবেদার মো. মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় চারজনের নামে একটি মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২৫ মে ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন ফেনী মডেল থানার তৎকালীন সিআইডি কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন আহম্মদ।
মামলা চলাকালেই রুবেল সরকার নামের একজন আসামি মারা যান।