ফেনী
ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটির নতুন কমিটির কোষাধ্যক্ষ হলেন ইউএনবির রিপন
ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটির ২০২৬ সালের কার্যকরী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন সভাপতি ও দিদারুল আলম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
শাহাদাত হোসেন দৈনিক নয়া দিগন্তের ফেনী অফিস প্রধান, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসসের ফেনী প্রতিনিধি ও দৈনিক ফেনীর সময় সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন। অপরদিকে দিদারুল আলম এটিএন নিউজের ফেনী প্রতিনিধি।
নতুন কমিটিতে কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পেয়েছেন বার্তা সংস্থা ইউএনবি ও দৈনিক দেশ রূপান্তরের ফেনী প্রতিনিধি মো. শফি উল্লাহ রিপন।
রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হয়। তবে সব পদে একক প্রার্থী থাকায় নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন খাঁন ১৯ সদস্যবিশিষ্ট প্যানেলের প্রত্যেককে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেন। নির্বাচন কমিশনের অপর দুই সদস্য হলেন মোহা. আলমগীর চৌধুরী ও তৌহিদুল ইসলাম তুহিন।
কমিটির নির্বাচিত অন্য সদস্যরা হলেন: সহ-সভাপতি মো. মাঈন উদ্দিন (দৈনিক স্টারলাইন), যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তোফাফেল আহমদ নিলয় (দেশ টিভি) ও জসিম উদ্দিন ফরায়েজী (গাজী টিভি), দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (সাপ্তাহিক নীহারিকা), প্রচার সম্পাদক আজিজ আল ফয়সাল (দৈনিক স্টার লাইন ও দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ), ক্রীড়া সম্পাদক তানজিদ উদ্দিন শুভ (ফেনীর প্রত্যয়), সাহিত্য সম্পাদক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান (দৈনিক আমার সংবাদ), প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক হাবীব উল্যাহ মিয়াজী (দৈনিক ইত্তেফাক), সাংস্কৃতিক সম্পাদক আলাউদ্দিন (দৈনিক আমার কাগজ)।
এ ছাড়াও কমিটির নির্বাহী সদস্য হয়েছেন শুকদেব নাথ তপন (সাপ্তাহিক ফেনীর আলো), আরিফুল আমিন রিজভী (দৈনিক ফেনী), এনামুল হক পাটোয়ারী (দৈনিক নয়াপয়গাম), যতীন মজুমদার (দৈনিক যুগান্তর), আলী হায়দার মানিক (দৈনিক ফেনীর সময় ও নয়া শতাব্দী), মো. ওমর ফারুক (দৈনিক ইনকিলাব) ও নুর উল্যাহ কায়সার (দৈনিক বণিক বার্তা ও দৈনিক স্টার লাইন)।
ফেনী জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রতিষ্ঠার ১৬ বছরে পদার্পণ করেছে। ২০১০ সালে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করে আসছে সংগঠনটি। বর্তমানে জেলায় পেশাদার সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন এটি।
২ দিন আগে
ফেনীতে থানার পাশের দীঘিতে মিলল মরদেহ
ফেনী মডেল থানার পেছনের দীঘি থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে থানা-সংলগ্ন রাজাঝির দিঘির পশ্চিম পাশ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, নিহত ব্যক্তির নাম মো. শুক্কুর (৪০)। গাজীপুর সদর উপজেলার হাতিমারা এলাকার বাসিন্দা ওই ব্যক্তি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। কাজের সন্ধানে গেল সোমবার সকালে তিনি ফেনীতে আসেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাত পৌনে ৯টার দিকে দিঘির নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি তার মরদেহ দেখতে পান। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল যায়। ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় এক ঘণ্টা পর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
দিঘির নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আবু কাউছার নিপু বলেন, রাতে দিঘির পশ্চিম পাশে হাঁটার সময় লাইটের আলোতে পানিতে মানুষের মাথার মতো কিছু দেখতে পাই। পরে স্থানীয়দের জানালে তারা এসে পুলিশকে খবর দেয়।
ফেনী ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা আবদুল মজিদ বলেন, মরদেহটি পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় ছিল। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
ফেনী মডেল থানা পরিদর্শক (তদন্ত) সজল কান্তি দাশ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় মরদেহ উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। মরদেহ এখন হাসপাতালের মর্গে আছে। তার পরনে ছিল শার্ট, লুঙ্গি ও মাফলার।
তিনি আরও জানান, কয়েক দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছি। পরিচয় শনাক্ত, মরদেহটি এখানে কীভাবে এসেছে এবং মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পুলিশ কাজ করছে।
৭ দিন আগে
৬ ডিসেম্বর ফেনীতে উড়েছিল মুক্ত বাংলার পতাকা
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর। মুক্তিযোদ্ধারা সম্মুখ সমরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ফেনীর মাটিতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছিলেন। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদর-আলশামস বাহিনীর নৃশংস বর্বরতায় ক্ষত-বিক্ষত ফেনী শহরে স্বাধীনতাকামী বাঙালিরা বিজয়ের নিশান উড়িয়ে উল্লাস করেছিলেন আজকের দিনেই।
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় ফেনী। সেই থেকে এ দিনটি ফেনী মুক্ত দিবস হিসেবে পরিচিত। বছর ঘুরে এলেই নানা আনুষ্ঠানিকতায় পালিত হয় দিবসটি।
দিনটি যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন আয়োজন করেছে নানা আয়োজন। ফেনী মুক্ত দিবস উপলক্ষে কলেজ রোডের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে র্যালি বের হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন দিবসটি উদযাপনের নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভোর থেকে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধারা ফেনীর পূর্বাঞ্চল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ২ নম্বর সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন জাফর ইমামের নেতৃত্বে ফেনী শহরে প্রবেশ করতে থাকেন। পরে শহরের রাজাঝির দীঘির পাড়ে ডাকবাংলোর সামনে স্বাধীন বাংলাদেশের ফেনীতে প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেখানে জড়ো হওয়া মুক্তি সংগ্রামীরা মিছিল থেকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে স্লোগানে শহর প্রকম্পিত করে।
মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই ফেনী প্রেসক্লাবের সামনে মিছিল দেখে উৎফুল্ল হয়ে ওঠেন। বিকেল নাগাদ সেখানে বিএলএফ কমান্ডার জয়নাল আবেদিনের নেতৃত্বে যুক্ত হন মুক্তিযোদ্ধারা। সেখানে ‘ফেনীর রাজা’ খ্যাত খাজা আহম্মদ সব মুক্তিযোদ্ধাদের দেশ গড়ার কাজে নেমে পড়তে আহ্বান জানিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
একপর্যায়ে সাধারণ মানুষ মিছিলে অংশ নিতে শুরু করে। স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধের লক্ষণ দেখে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাক বাহিনী আর তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আল-শামস বাহিনী ফেনীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ফেনী শহর হয়ে চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে যায়। এভাবেই দীর্ঘ ৯ মাসের বজ্রকঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মুক্তিকামীরা ফেনীর জমিনে লাল-সবুজের এক টুকরো পতাকা ওড়ান।
মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য ফেনীর ৩১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় খেতাবে ভূষিত করা হয়। খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে চারজন বীর উত্তম, সাতজন বীর বিক্রম এবং ২০ জন বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত হন।
সেদিনের বিবরণ দিতে গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা সকালেই ফুলগাজীর বন্দুয়া থেকে এসে ফেনী সার্কিট হাউজে (বর্তমান ফেনী সড়ক ও জনপথ বিভাগের রেস্ট হাউজ) প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। বিকেলের মধ্যেই মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক জয়নাল আবেদীন ভিপির নেতৃত্বে মুজিব বাহিনী রাজাপুর, কোরাইশ মুন্সী ও সোনাগাজীর নবাবপুর থেকে ট্রাংক রোডে চলে আসেন। সন্ধ্যায় সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা সমাবেশ করেন।
ফেনী মুক্ত দিবস সম্পর্কে বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন ভিপি বলেন, ডিসেম্বরের শুরুতেই গেরিলা যুদ্ধের নীতি ‘হিট অ্যান্ড রান’ প্রয়োগ করে যুদ্ধ করতে করতে আমরা পাঁচগাছিয়া এলাকার কাছাকাছি চলে আসি। রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এদিকে এসে হিট (হামলা) করে আবার চলে যাই। ৫ ডিসেম্বর আমরা ঠিক ফেনীর কাছাকাছি যখন আসি, তখন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী রণে ভঙ্গ দিয়ে শেষ রাতের দিকে শুভপুর ও বারইয়ারহাট হয়ে চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে যায়।
ফেনী জেলা প্রশাসক মনিরা হক বলেন, ‘৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এদিন বীর মুক্তিযোদ্ধারা ফেনীকে হানাদারমুক্ত করেছিল। দিনটিকে আমরা নানা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করে থাকি। সেদিন ফেনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা যে অসামান্য বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন, সেটিকে আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করব।’
১১ দিন আগে
ফেনীতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস উল্টে পড়ল দোকানে, নিহত ৩
ফেনীর দাগনভূঞায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বাস উল্টে গিয়ে সড়কের পাশের দোকানে পড়েছে। এতে দুই নারীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের সিলোনিয়া বাজারসংলগ্ন লাকি রোডের মুখে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন—ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার খুশিপুর এলাকার শহিদুল্লাহর স্ত্রী শামীম আরা বেগম (৫০) ও একই উপজেলার দক্ষিণ জয়লস্কর গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে মো. শ্রাবণ (২০)। নিহত অন্য নারীর এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, ফেনীর মহিপাল থেকে নোয়াখালীগামী সুগন্ধা পরিবহনের বাসটি সিলোনিয়া বাজারসংলগ্ন লাকি রোডের মুখে পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ধাক্কা দেয়। পরে বাসটি উল্টে একটি দোকানের ভেতরে পড়ে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্র নিহত
স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ডা. শাহরিয়ার মাহমুদ বলেন, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৭ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গুরুতর আহত একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
মহিপাল হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারুন অর রশিদ বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মরদেহ ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মূলত বেপরোয়া গতি ও বৃষ্টির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনা কবলিত বাসটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৭৬ দিন আগে
ফেনীতে ট্রাকে বাসের ধাক্কায় নিহত ২
ফেনীতে একটি বালুভর্তি ট্রাকের পেছনে বাসের ধাক্কায় দুইজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন হলেন বাসের সুপার সুপারভাইজার রবিউল (৩০)। অপরজনের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর লালপোল হাফেজিয়া এলাকায় ঢাকামুখী লেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনের লালপোল হাফেজিয়া এলাকায় বালুভর্তি একটি ট্রাক হঠাৎ ব্রেক কষলে বেপরোয়া গতির শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস তার পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে শ্যামলী পরিবহনের হেলপার ঘটনাস্থলে নিহত হন। এ ছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় বাসের সুপারভাইজার ও চালককে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে সুপারভাইজারেরও মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত চালককে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ট্রাকচালক পলাতক রয়েছেন।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে বাস দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ৫
মহিপাল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারুন অর রশিদ জানান, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
তিনি আরও জানান, ট্রাকচালককে আটকের চেষ্টা চলছে। দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও ট্রাক দ্রুত সড়ক থেকে অপসারণ করে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
১০১ দিন আগে
ফেনীতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৫
ফেনীর পরশুরামে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে মঞ্চের সামনে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে দলটির দুপক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে ৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পরশুরাম জিরো পয়েন্ট এলাকায় স্টেশন রোডে পরশুরাম উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে এই র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল হালিম মানিক ও বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু তালেবের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দলের নেতা ও পুলিশের হস্তক্ষেপে প্রায় আধা ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আহতদের মধ্যে চিথলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ইসমাইলের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
পরশুরাম উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল হালিম মানিক জানান, গ্রাম ও ইউনিয়ন থেকে আগত নেতাকর্মীরা মঞ্চের সামনে আসতে চাইলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয় হবে বলেও জানান তিনি।
পড়ুন: হত্যার উদ্দেশ্যেই নুরকে আঘাত করা হয়: মির্জা ফখরুল
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু তালেব জানান, দলীয় কোনো পক্ষ নেই। মঞ্চের সামনে বসাকে কেন্দ্র করে যারা বিশৃঙ্খলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরশুরাম মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম জানান, বিশৃঙ্খলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক ও ফেনী ১ আসনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক রফিকুল আলম মজনু।
১০৫ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ফেনীর শিক্ষার্থী নিহত
অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনায় মো. আদিব ফারহান (২০) নামে এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। রবিবার (৩১ আগস্ট) স্থানীয় সময় ভোর ৬টার দিকে নিউক্যাসল শহরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আদিব ফারহান ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের জগৎপুর গ্রামের মোশাররফ হোসেনের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে তার পরিবার ঢাকার নাখালপাড়া এলাকায় বসবাস করছে। ছয় মাস আগে উচ্চশিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় যান তিনি।
পড়ুন: যশোরের মনিরামপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্রী নিহত, আহত বাবা-মা
পরিবার সূত্রে জানা যায়, আদিব চার বন্ধুসহ ভোরে নাশতা করতে বেরিয়েছিলেন। পথে তাদের প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এতে আদিব ফারহানসহ সবাই গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক আদিবসহ দুই শিক্ষার্থীকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্য দুজনও চিকিৎসাধীন।
নিহতের চাচা আবুল হাসনাত বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আদিব ছিলেন পরিবারের বড় সন্তান। তিনি এ লেভেল, ও লেভেল শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলেন। মাত্র দুই মাস আগে তিনি ছুটিতে দেশে এসেছিলেন। ছেলের মৃত্যুর খবরে মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন, বাবা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
এ ঘটনায় প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আদিবের লাশ দ্রুত দেশে আনার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
১০৮ দিন আগে
ফেনীতে নদীর করাল গ্রাসে বিদ্যালয় ভবন
ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার কাটাখালী নদীর ভাঙনে মাতুভূঞা ইউনিয়নের করিম উল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। সম্প্রতি ভারী বৃষ্টিপাত ও নদীর তীব্র স্রোতে ধুয়ে গেছে ভবনের নিচের মাটি। এতে ভবনের উত্তর পাশের একটি অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে যেকোনো সময় ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে ভবনটি।
এমনকি ভাঙন অব্যাহত থাকায় যেকোনো সময় পুরো ভবনটি নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের উত্তর পাশের অংশ ভেঙে নদীর দিকে ঝুলছে এবং ভবনের পাশে লাগোয়া শহীদ মিনারের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে।
শিক্ষক ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অতিবৃষ্টির কারণে নদীর তীব্র স্রোতে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। নদী ভাঙনের কারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
জানা গেছে, বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা রহিম উল্যাহ চৌধুরীর দুই ছেলে তারেক মাহতাব রহিম ও জাবেদ সালাম রহিম তাদের ব্যক্তিগত অর্থায়নে ২০১৬ সালে পাঁচ কক্ষবিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণ করেন। ভবনটিতে সপ্তম শ্রেণির পাঠদান ছাড়াও নবম ও দশম শ্রেণির গ্রুপ বিষয়গুলোর পাঠদান, বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি ও ছাত্রীদের জন্য নামাজ স্থান রয়েছে।
আরও পড়ুন: কাজ শেষ হওয়ার আগেই রংপুরে নদী তীর রক্ষা বাঁধে ধস
দশম শ্রেণির ছাত্র আদনান বিন আলম বলে, ওই ভবনে আমাদের দশম শ্রেণির গ্রুপ বিষয়গুলোর পাঠদান চলে। কখন পুরো ভবন নদীতে তলিয়ে যায়, তা নিয়ে আমরা আতঙ্কিত। বিদ্যালয়ের এই ভবনটি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
১১২ দিন আগে
ভারতে অনুপ্রবেশ করা ৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল বিএসএফ
অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করা পাঁচ বাংলাদেশিকে ফেনী সীমান্তে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। কাজের সন্ধানে ভারতে যাওয়ার পর ওই দেশের পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাগারে ছিলেন তারা।
সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের বিজিবির নিকট হস্তান্তর করা হয়। পরে রাতে তাদের ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করে বিজিবি।
সীমান্তে অপমানজনক পুশইনের ঘটনা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত হওয়ায় এবার পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকদের হস্তান্তর করেছে বিএসএফ।
হস্তান্তর করা বাংলাদেশিরা হলেন— ফেনীর পরশুরাম উপজেলার উত্তর গুথুমা গ্রামের খায়েজ আহাম্মদের ছেলে সাইদুজ্জামান ভূঞা (২৯), একই উপজেলার নিজকালিকাপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. এমদাদ হোসেন (২৭), ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার দূর্গাপুর সিংহ নগরের ফয়েজ আহাম্মদের ছেলে মো. গিয়াস উদ্দিন (২৯), নওগা জেলার আবু জাফরের ছেলে মো. রাফি (২৫) ও চাঁদপুর জেলার কদরা গ্রামের হেদায়েত উল্লাহর ছেলে আবুল বাশার (৫৫)।
আরও পড়ুন: মেহেরপুর সীমান্তে ৩৯ নারী পুরুষকে হস্তান্তর বিএসএফের
পুলিশ ও বিজিবি সূত্র জানিয়েছে, ওই পাঁচজনের মধ্যে সাইদুজ্জামান, এমদাদ, গিয়াস ও রাফিকে ১২ এপ্রিল ভারতের মনুমুখ এলাকা থেকে আটক করে দেশটির পুলিশ। ভারতের অবৈধভাবে প্রবেশের দায়ে আটকের পর তারা ৩ মাস যাবৎ সেখানে কারাগারে ছিলেন। মুক্তির পর ১৬ আগস্ট পর্যন্ত তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়, পরে বিএসএফের কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়।
অন্যদিকে, আবুল বাশারকে ৯ জুন ভারতের উদয়পুর থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি ১ মাস যাবৎ ভারতীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন।
ফেনী মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, বিজিবির মাধ্যমে ৫ জন বাংলাদেশি নাগরিককে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। আমরা তাদের নাম ঠিকানা যাচাই করে দেখছি। তাদের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ বিষয়ে পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হবে।
এর আগে, ফেনীর বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে আইনবহির্ভূতভাবে ৪ দফায় ৬৭ জন বাংলাদেশি নাগরিককে পুশইন করে বিএসএফ।
১১৩ দিন আগে
সংস্কার হয়নি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৮৪ বিদ্যালয়, ফেরত গেল সাড়ে ১২ কোটি টাকা
ফেনীর ৬ উপজেলায় ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩১৪টি ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেরামত ও সংস্কারের জন্য ১২ কোটি ৯৯ লাখ ৭০ হাজার ৮১২ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার। তার মধ্যে ৩০টি বিদ্যালয়ের মেরামত ও সংস্কার কাজে মাত্র ৩১ লাখ ৭৩ হাজার ৩৩৪ টাকা ব্যয় হলেও বাকি ২৮৪টি বিদ্যালয়ের সংস্কার না করেই অবশিষ্ট ১২ কোটি ৬৭ লাখ ৯৭ হাজার ৪৭৮ টাকা ফেরত গিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলীর দাবি, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে কোনো নির্দেশনা না পাওয়ায় বিদ্যালয়গুলোর মেরামত সম্ভব হয়নি। যে কারণে বরাদ্দকৃত টাকা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে ফেরত চলে গিয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়গুলোর সংস্কারে চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে সময়মতো ২৮৪টি বিদ্যালয়ের সংস্কার কার্যক্রম শুরু না করায় সেই অর্থ ফেরত চলে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ফেনীতে বন্যা: সব হারিয়ে নিঃস্ব ৪৯ পরিবার, ক্ষতিগ্রস্ত ৯১৫ ঘরবাড়ি
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেড় লাখ টাকার নিচে বরাদ্দ পাওয়া ৩০টি বিদ্যালয় মেরামত সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ২৮৪টি বিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি দেড় লাখ টাকার বেশি বরাদ্দ পাওয়ায় সেগুলো মেরামতের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে চিঠি দেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। তবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে কোনো নির্দেশনা না পাওয়ায় উপজেলা প্রকৌশলী মেরামত কাজে অনীহা প্রকাশ করেন। এরপর সময়মতো টেন্ডার আহ্বান না করায় প্রকল্পের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ফলে জেলার অধিকাংশ বিদ্যালয়ের মেরামত বাকি থাকলেও বরাদ্দকৃত অবশিষ্ট টাকা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে ফেরত যায়।
ফেনীতে ৫৫৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় ১৫১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১১৫টি বিদ্যালয় মেরামতের জন্য ৫ কোটি ২ লাখ ২৬ হাজার ৫১৪ টাকা বরাদ্দ আসে। এর মধ্যে ৫ লাখ ৬২ হাজার ১৫৯ টাকা ব্যয়ে মাত্র পাঁচটি বিদ্যালয়ের সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ১১০টি বিদ্যালয়ের মেরামত ও সংস্কারের জন্য বরাদ্দ ৪ কোটি ৯৬ লাখ ৬৪ হাজার ৩৫৫ টাকা ফেরত গেছে।
দাগনভূঞা উপজেলায় ১০২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে গত বছরের বন্যায় ১৬টি বিদ্যালয়ের আসবাবপত্রসহ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মেরামতের জন্য সেখানে মোট ৭৬ লাখ ১১ হাজার ৯৬০ টাকা বরাদ্দ পেলেও মেরামত কাজ বাস্তবায়নের জন্য দাগনভূঞা উপজেলা প্রকৌশলীর কোনো সহযোগিতা না পাওয়ায় টাকাগুলো ফেরত চলে যায়।
সোনাগাজী উপজেলার ১১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১০২টি বিদ্যালয় মেরামতের জন্য ২ কোটি ৮৩ লাখ ২৯ হাজার ৯৪১ টাকা বরাদ্দ আসে। এর মধ্যে ২৫টি বিদ্যালয়ের সংস্কারে ২৬ লাখ ১১ হাজার ১৭৫ টাকা ব্যয় করা হয়। বাকি ৭৭টি বিদ্যালয়ের বরাদ্দকৃত ২ কোটি ৫৭ লাখ ১৮ হাজার ৭৬৬ টাকা ফেরত গেছে।
এ ছাড়া ছাগলনাইয়া উপজেলায় ৭৮টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬৫টি বিদ্যালয় মেরামতের জন্য ৩ কোটি ৫১ লাখ ৬৬ হাজার ৯৭৮ টাকা, পরশুরাম উপজেলায় ৭টি বিদ্যালয়ের জন্য ২৯ লাখ ৫৮ হাজার ৮৭৫ টাকা এবং ফুলগাজী উপজেলায় ৯টি বিদ্যালয়ের জন্য ৫৫ লাখ ৭৬ হাজার ৫৪৬ টাকা ফেরত চলে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষকরা জানান, সময় কম থাকায় বরাদ্দ পেলেও তা কাজে লাগানো যায়নি। এতে বিদ্যালয়গুলো পাঠদানের উপযোগী হয়ে ওঠেনি। অনেক শিক্ষক বাধ্য হয়ে নিজ পকেটের টাকা খরচ করে জরুরি সংস্কার কাজ করেছেন যা ফেরত পাওয়ার ব্যাপারেও এখন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয়েছিল ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা নাসরিন কান্তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বরাদ্দ বাস্তবায়নে দরপত্র করার মতো সময় ছিল না বলেই অর্থ ফেরত গেছে। তবে বিষয়টি যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ, তাই আগামী অর্থবছরে ফের বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: মেরামত হয়নি বেড়িবাঁধ, বন্যার আশঙ্কায় আতঙ্কে ফেনীবাসী
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফিরোজ আহাম্মেদ বলেন, ‘গত অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই এই বরাদ্দ আসে। সময় কম থাকায় অর্থ ব্যয় সম্ভব হয়নি। তবে বছরের শুরুতে এই বরাদ্দ এলে বা মেয়াদ বৃদ্ধি করলে তা সংস্কার কাজে ব্যয় করা যেত।’
তিনি আরও জানান, দেড় লাখ টাকার কম বরাদ্দ হলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরাসরি খরচ করতে পারে। তার বেশি হলে উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে ব্যয় করতে হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহমুদ আল ফারুক বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয় মেরামত ও সংস্কার কাজের বরাদ্দকৃত টাকা ফেরত যাওয়ার কথা জানা নেই। এ ব্যাপারে আমার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি।’
ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফাতিমা সুলতানা বলেন, ‘আমরা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছি। আশা করছি, চলতি অর্থবছরের আগস্ট মাসের মধ্যে অর্থ ফেরত পাব এবং নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলোর সংস্কারকাজ শুরু করা হবে।’
১১৬ দিন আগে