বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এসট্রুপ পেটারসেন, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকেন এবং সুইডেনের রাষ্ট্রদূত চার্লোটা স্লাইটার নবায়নযোগ্য জ্বালানী থেকে সমূদ্র অর্থনীতি ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ তাদের অগ্রাধিকারের খাতগুলো সম্পর্কেও ধারণা দেন এবং বাধা অতিক্রম করে বাংলাদেশে বিনিয়োগ সহজীকরণের বিষয়গুলোও তুলে ধরেন।
শনিবার রাজধানীর সিক্স সিজন হোটেলে 'বাংলাদেশ ও নর্ডিক দেশসমূহ: অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা' শীর্ষক একটি সংলাপে তিন দেশের রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
চলমান রোহিঙ্গা সংকেটর সমাধান চাওয়ার পাশাপাশি তিন নর্ডিক দেশের রাষ্ট্রদূত বলেন, জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত- আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিজে) কর্তৃক অন্তবর্তীকালীন আদেশ জবাবদিহিতার আওতায় আনার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
রোহিঙ্গাদের নিরাপদে তাদের নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার দায়িত্বও মিয়ানমারের বলেও উল্লেখ করেন ওই তিন রাষ্ট্রদূত।
নিজের বক্তব্য উপস্থাপনকালে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকেন আশা প্রকাশ করে বলেন, মিয়ানমার আন্তর্জাতিক আদালতের আদেশ পূর্ণাঙ্গভাবে মেনে চলবে।
নর্ডিক দেশসমূহের রাষ্ট্রদূতরা কক্সবাজার ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের এবং তাদের আশ্রয় দেয়া স্থানীয়দের জন্য তাদের অব্যাহত সহায়তারও আশ্বাস দেন।
এদিকে, শ্রম অধিকারসহ এবং অন্যান্য অধিকার সম্পর্কিত বিষয়গুলো, বেসরকারি খাতের ভূমিকা, সমুদ্র দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন, নদী দূষণ, বায়ু দূষণ, নারী অধিকার এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসহ (এসডিজি) সংলাপে আরও নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের সাথে তাদের অংশীদারিত্বকে ‘অত্যন্ত গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী’ অভিহিত করে রাষ্ট্রদূতরা বলেন, তাদের দেশগুলোকে আরও বেশি অর্জন (ভালো সম্পর্ক) করতে হবে।
ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের প্রিন্সিপাল রিসার্চ ফেলো ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী সংলাপে সভাপতিত্ব করেন।
এর আগে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান নর্ডিক দেশেগুলোর সাথে ভালো সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে, এ বন্ধুত্বকে সব পরিস্থিতির বন্ধুত্ব হিসাবে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, নর্ডিক দেশগুলো শুরু থেকেই সমর্থন ও সহায়তার উৎস ছিল এবং দাতা হিসাবে শুরু করে এই দেশগুলো এখন বিস্তৃত পরিসরে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও অগ্রগতিতে সহযোগী হিসাবে কাজ করছে।
‘বাংলাদেশও উৎসাহের সাথে নর্ডিক দেশগুলোর সাথে এক হয়ে কাজ করছে যা বিশ্বব্যাপী অনুকরণীয়’, বলেন এনায়েতুল্লাহ খান।
বাংলাদেশের পাশাপাশি অন্যান্য দেশেও আন্তর্জাতিক উন্নয়নে নর্ডিক প্রতিশ্রুতি ও অবদান প্রতিফলিত হয়েছে বলে জানান কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান।
ড. ইফতেখার বলেন, এ ধরণের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার উদ্দেশ্য হল মূল বিষয়গুলো নিয়ে কূটনীতিক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করা।
সরকারী নীতিমালায় ভূমিকা রাখতে কসমস ফাউন্ডেশন যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তার প্রশংসা করেন ড. ইফতেখার।
কসমস গ্রুপের জনহিতকর প্রতিষ্ঠান কসমস ফাউন্ডেশন, ‘কসমস সংলাপের অ্যাম্বাসেডর লেকচার সিরিজের’ আওতাধীন এ সংলাপের আয়োজন করেছে।
উল্লেখ্য, পাঁচ নর্ডিক দেশ- ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে এবং সুইডেন- সবাই ১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি একই দিনে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।