নর্ডিক দেশ
সবুজ ভবিষ্যৎ নির্মাণে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ ও নর্ডিক দেশগুলো: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশ ও নর্ডিক দেশগুলো আরও সবুজ ও জলবায়ু সহিষ্ণু ভবিষ্যতের জন্য একসঙ্গে কাজ করবে।
নর্ডিক দেশগুলোর পরিবেশ রক্ষায় দৃষ্টান্তমূলক অঙ্গীকারের প্রশংসা করে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশও একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গঠনে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) ঢাকার হোটেল রেডিসনে আয়োজিত নর্ডিক দিবস স্মরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান পরিবেশমন্ত্রী। ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে ও সুইডেনের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব উদযাপন করতে এ্ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি নর্ডিক দেশগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিয়েছিল। সে কথা তুলে ধরে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, এটি আমাদের সংহতি ও সমর্থনের ভিত্তিতে একটি সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে: জাতিসংঘ পরিবেশ সম্মেলনে পরিবেশমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও নর্ডিক দেশগুলোর মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার উদাহরণ। এটি আসলে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, অভিন্ন মূল্যবোধ এবং টেকসই ও সমৃদ্ধির প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত অংশীদারিত্ব।
টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সবচেয়ে টেকসই এবং সমন্বিত ব্যবস্থা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নর্ডিক কাউন্সিলের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর জোর দেন সাবের হোসেন চৌধুরী।
পরিবেশ সংরক্ষণের ওপর জোর দিয়ে নর্ডিক অঞ্চলের মোহনীয় প্রাকৃতিক দৃশ্যের প্রশংসা করেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: পরিবেশ ও জলবায়ু মোকাবিলার ভিত্তিতে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে: পরিবেশমন্ত্রী
এছাড়াও জলবায়ু সহনশীলতা, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রের রূপরেখা তুলে ধরেন পরিবেশমন্ত্রী।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং উদ্ভাবন ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতাকে আরও গভীর করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিক্টার-সভেনডসেন, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার ও ভারতের নয়া দিল্লিতে ফিনল্যান্ড দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ড. টিটো গ্রোনোও বক্তৃতা করেন।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সচেতন করতে অলিম্পিয়াডের আয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী
৮ মাস আগে
বিদেশি দূতাবাসের সামনে কুরআন পোড়ানোকে অবৈধ ঘোষণা করতে পারে ডেনমার্ক
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোকে রাসমুসেন স্থানীয় সময় রবিবার (৩১০ জুলাই) বলেছেন, নর্ডিক দেশে বিদেশি দূতাবাসের সামনে কুরআন বা অন্যান্য ধর্মীয় পবিত্র গ্রন্থের অবমাননাকে বেআইনি ঘোষণা করার কথা ভাবছে সরকার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেনিশ পাবলিক ব্রডকাস্টার ডিআর-এর সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পোড়ানো ‘এমন একটি বিশ্বে বিভাজন সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়েছে, যার আসলে ঐক্যের প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘তাই আমরা সরকারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা দেখব কিভাবে বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্যান্য দেশের বিদ্রুপ বন্ধ করতে পারি। যা ডেনিশ স্বার্থ এবং ডেনিশদের নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক।’
ডেনমার্ক এবং প্রতিবেশী সুইডেনে মুষ্টিমেয় কিছু ইসলামবিরোধী মানুষের প্রকাশ্যে কুরআন অবমাননার সাম্প্রতিক ঘটনায় মুসলিম দেশগুলোতে প্রচণ্ড বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
লোকে রাসমুসেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেনের মন্ত্রিসভা মত প্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে আপস না করে এই ধরনের কাজ নিষিদ্ধ করার জন্য ‘একটি আইনী পন্থা’ খুঁজে বের করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে এটি সহজ হবে না।
তিনি ডিআরকে বলেছেন, ‘অবশ্যই ধর্মীয় সমালোচনার জায়গা থাকতে হবে। একটি ব্লাসফেমি ধারা পুনঃপ্রবর্তনের কোনো চিন্তা আমাদের নেই।’
আরও পড়ুন: পবিত্র কোরআন অবমাননা নিয়ে বাংলাদেশ ও সুইডেনের আলোচনা
তিনি বলেন,‘কিন্তু আপনি যখন বিদেশি দূতাবাসের সামনে দাঁড়িয়ে কুরআন পোড়ান বা ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে তাওরাত পোড়ান; তখন তা বিদ্রুপ করা ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে হয় না।’
রবিবার ডেনিশ সরকারের জারি করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ড্যানিশ সমাজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধ।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তবে ডেনমার্কে মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থের অবমূল্যায়নের ফলে জাতিটি বিশ্বের অনেক জায়গায় ‘এমন একটি দেশ হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে, যারা অন্যান্য দেশের সংস্কৃতি, ধর্ম ও ঐতিহ্যের অপমান ও অবমাননার সুযোগ দেয়।’
এতে আরও বলা হয়েছে, সরকার আবারও এই ধরনের অবমাননার নিন্দা করেছে এবং বলেছে যে তারা ‘গভীরভাবে আপত্তিকর ও বেপরোয়া কাজটি নির্দিষ্ট কিছু মানুষ করেছে’ এবং ‘তাদের এই কাজ ডেনিশ সমাজ যে মূল্যবোধের উপর নির্মিত তা প্রকাশ করে না।’
সুইডেনে প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন রবিবার ইনস্টাগ্রামে বলেছেন, তার সরকার কুরআন এবং অন্যান্য পবিত্র গ্রন্থের অবমাননা সংক্রান্ত আইনী পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করছে। কেননা শত্রুতার পরিপ্রেক্ষিতে এই ধরনের কাজগুলো সুইডেনের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করছে।
ক্রিস্টারসন বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে আমরা সবচেয়ে গুরুতর নিরাপত্তা নীতির মধ্যে আছি।’
সুইডেন ও ডেনমার্কে কোরআন পোড়ানোর বিষয়ে আলোচনার জন্য সোমবার একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)।
আরও পড়ুন: পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় সুইডেনের সরকার আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে: সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সুইডেনে মসজিদের বাইরে কোরআন পোড়ানোর তীব্র নিন্দা বাংলাদেশের
১ বছর আগে
ডেনমার্কে উচ্চশিক্ষা: উপায়, খরচ ও সুযোগ-সুবিধা
৫৭ লাখেরও বেশি মানুষের নর্ডিক দেশ ডেনমার্ক মূলত ৪৪৩টি দ্বীপের এক দ্বীপপুঞ্জ। নিম্নভূমির এই দেশটির আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ। বিশ্বের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশগুলোর মধ্যে ডেনমার্ক অন্যতম। শিক্ষাক্ষেত্রে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোর তুলনায় কোনো অংশেই কম নয়। বরং দেশটির উচ্চমানের জীবনযাত্রার কারণে হাজারো শিক্ষার্থী ডেনমার্ক অভিমুখী হন উচ্চশিক্ষার জন্য। এই ডেনমার্কে উচ্চশিক্ষার নানা দিক নিয়েই আজকের আয়োজন।
ডেনমার্কে উচ্চশিক্ষার যোগ্যতা
শিক্ষাগত যোগ্যতা
বাংলাদেশ থেকে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী স্নাতকোত্তরের জন্য ডেনমার্ক গেলেও, সেখানে স্নাতক করারও বেশ ভালো সুযোগ রয়েছে। এইচএসসি পাস বা মাধ্যমিক ডিপ্লোমাধারীরা তাদের সনদ দিয়ে ডেনমার্কে ব্যাচেলরের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে এই সনদ ডেনমার্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমমূল্য কি না তা যাচাই করা হয়। এখানে মূলত একাডেমিক মার্কশীটের প্রতিটি বিষয়ের প্রাপ্ত গ্রেড ও জিপিএ (গ্রেড পয়েন্টের গড়) ডেনমার্কের পরীক্ষার নম্বর ব্যবস্থার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়।
ডেনিশ এজেন্সি ফর সায়েন্স অ্যান্ড হায়ার এডুকেশন তাদের আন্তর্জাতিক পরীক্ষার হ্যান্ডবুকের নিয়ম অনুযায়ী বিদেশি গ্রেডগুলোকে ড্যানিশ গ্রেডিং স্কেলে রূপান্তর করে।
আরো পড়ুন: যে ১০টি দেশে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অল্প খরচে পড়তে পারবেন
তাই এই যোগ্যতা পূরণ হয়েছে কি না তা জানতে শিক্ষার্থীদের তাদের পছন্দের বিষয়ের জন্য পছন্দের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ভালো ভাবে অধ্যায়ন করে নেয়া উচিত।
এছাড়া ডেনমার্কের স্নাতক শিক্ষার জন্য এখানে নিবন্ধন করে যোগ্যতা যাচাই করে নেয়া যেতে পারে। অথবা এই ফর্মটি পূরণ করে সরাসরি ইউনিভার্সিটিতে পাঠালে তারা ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর যোগ্যতা যাচাই করে দেয়।
মাস্টার্স ও পিএইচডিসহ যে কোনো স্নাতকোত্তর অধ্যায়নের জন্য যোগ্যতা ন্যূনতম ৪ বছরের ব্যাচেলর ডিগ্রী। তবে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। এক্ষেত্রে ডেনিশ ডিগ্রীগুলোর সমতূল্য বাংলাদেশের ব্যাচেলর ডিগ্রীগুলো একটা স্বচ্ছ ধারণা দিতে পারে।
আরো পড়ুন: দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার আগে যে অভ্যাসগুলো গড়ে তোলা জরুরি
ভাষাগত যোগ্যতা
ইংরেজি ভাষার স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামের আবেদনকারীদের ইংরেজি ভাষা দক্ষতা ন্যূনতম ইংরেজি-বি ক্যাটাগরির হতে হবে। এটি মূলত ডেনিশ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রণীত ইংরেজি ভাষা দক্ষতা যাচাই ব্যবস্থা। কোনো কোনো প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে ইংরেজি-এ প্রয়োজন হয়।
ইংরেজি-বি এর সমতূল্য আইইএলটিএস স্কোর ৬ দশমিক ৫ পয়েন্ট, যেটা ইংরেজি-এ এর ক্ষেত্রে ৭ পয়েন্ট।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ডেনমার্কের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
ডেনমার্ক বোলোগনা প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। তাই শিক্ষার্থীরা ডেনিশ প্রতিষ্ঠানে যে ডিগ্রি অর্জন করেন তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ২০২৩-এর কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংয়ের ৮২-তম অবস্থানে আছে ডেনমার্কের কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ডেনমার্কের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো-
- আরহাস বিশ্ববিদ্যালয়
- ডেনমার্কের কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়
- ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ডেনমার্ক
- আলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়
- কোপেনহেগেন বিজনেস স্কুল
- রসকিল্ড ইউনিভার্সিটি
এছাড়াও ডেনমার্কের আন্তর্জাতিক ভাবে স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদেরকে তাদের পছন্দ অনুসারে বিভিন্ন বিষয় বেছে নেয়ার জন্য স্বাগত জানায়।
আরো পড়ুন: নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের উপায়
ডেনমার্কে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন পদ্ধতি
ডেনমার্কে পড়াশোনার জন্য যাবতীয় যোগ্যতা নির্বাচিত প্রতিষ্ঠান দ্বারা স্বীকৃত হওয়ার পর আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা যায়। এক্ষেত্রে আগে থেকেই যোগ্যতা প্রমাণের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি যোগাড় করে রাখা আবশ্যক।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- স্নাতকের জন্য শুধু এইচএসসি/ডিপ্লোমার মূল প্রশংসাপত্র
- আইইএলটিএস/টোফেল স্কোরের সনদ
- যদি কোনো নথিতে নামের পরিবর্তন থাকে তাহলে নাম পরিবর্তনের নথি প্রয়োজন হবে; যেমন: বিবাহের সনদপত্র
- যোগ্যতা মূল্যায়নের জন্য দ্বিতীয়বার আবেদন করা হয়ে থাকলে পূর্বের মূল্যায়ন এবং স্বীকৃতির সিদ্ধান্তের নথি সংযুক্ত করতে হবে
- স্নাতকোত্তরের জন্য উপরোক্ত নথিপত্রের সাথে স্নাতক ডিগ্রি এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সংযুক্ত করতে হবে|
আরো পড়ুন: জার্মানিতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন?
এছাড়াও বিষয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে ডেনিশ এজেন্সি ফর হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড সায়েন্স শিক্ষার্থীর যোগ্যতা যাচাইয়ের নিমিত্তে আরও কাগজপত্র চাইতে পারে।
ডেনমার্কে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদনের উপায়
ডেনমার্কে স্নাতক উচ্চশিক্ষার আবেদনগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বিত হয়। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদেরকে সরাসরি একক কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবেদন না করে জাতীয় ভর্তির ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। এই অনলাইন আবেদন চলাকালে কাগজপত্র আপলোড করার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি।
- মূল নথিগুলোর প্রতিটি আলাদা ভাবে উভয় পিঠ স্ক্যান করতে হবে।
- স্ক্যান করা নথির ছবি অবশ্যই রঙিন হতে হবে। আর খেয়াল রাখতে হবে যেন, নথির তথ্যগুলো স্পষ্ট পড়া যায়।
- শুধুমাত্র পিডিএফ ফাইল গ্রহণযোগ্য
- স্ক্যানের পর প্রতিটি নথির ফাইলের তার স্ব-স্ব নাম দিয়ে কম্পিউটারে রাখতে হবে। তারপর আবেদনের সময় প্রয়োজন অনুসারে আপলোড করতে হবে|
আরো পড়ুন: জার্মানিতে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
প্রতিটি প্রোগ্রামে আবেদনের বেলায় শিক্ষার্থীকে অবশ্যই পৃথক পৃথক স্বাক্ষর করা পৃষ্ঠা পাঠাতে হবে। ডিজিটাল আবেদন সম্পন্ন করার পর সেই জাতীয় ভর্তির ওয়েবসাইটেই পাওয়া যাবে স্বাক্ষর করার পৃষ্ঠা। সেটি প্রিন্ট করে স্বহস্তে স্বাক্ষর করে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানায় পাঠাতে হবে।
তবে মাস্টার্স বা পিএইচডির বেলায় শিক্ষার্থীকে সরাসরি সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এখানেও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা স্বাক্ষর করার নথি পাবেন। এখানেও একই ভাবে প্রিন্ট করে স্বহস্তে স্বাক্ষর করে পাঠিয়ে দিতে হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানায়।
সাধারণত স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য আবেদনগুলো স্নাতক ডিগ্রির আবেদনের তুলনায় সহজ।
আরো পড়ুন: নরওয়েতে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
অনলাইন আবেদনের পর কাগজপত্র পাঠানোর উপায়
স্নাতকের ক্ষেত্রে সমস্ত নথি পাঠানোর ঠিকানা হলো- Danish Agency for Higher Education and Science, Haraldsgade 53, 2100 Copenhagen
কুরিয়ারের সময় খামের ওপর শিক্ষার্থীর পুরো নাম এবং জন্ম তারিখ উল্লেখ করতে হবে। স্নাতকোত্তরের ক্ষেত্রে সব একই শুধু ঠিকানার জায়গায় থাকবে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানা। শিক্ষার্থীর যোগ্যতা যাচাই সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথে মূল নথিগুলো ডাকযোগে আবেদনে উল্লেখিত শিক্ষার্থীর ঠিকানায় ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়।
আরো পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
ডেনমার্কে পড়াশোনার খরচ
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রোগ্রামের উপর নির্ভর করে পড়াশোনার খরচ প্রতি বছরে প্রায় ৬ হাজার থেকে ১৮ হাজার ইউরো হয়ে থাকে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬ লাখ ৮ হাজার থেকে ১৮ লাখ ২৪ হাজার।
সবচেয়ে সাশ্রয়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতি বছর ৬ হাজার থেকে ৯ হাজার ইউরোর (প্রায় ৬ লাখ ৮ হাজার থেকে ৯ লাখ ১২ হাজার বাংলাদেশি টাকা) মধ্যে চার্জ করে থাকে। স্বভাবতই স্নাতক ডিগ্রীগুলো স্নাতকোত্তর ডিগ্রীর চেয়ে কম খরচের হয়ে থাকে।
ডেনমার্কে জীবনযাত্রার জন্য আর্থিক ব্যবস্থাপনা
শুধু ডেনমার্কেই নয়; জীবনযাত্রার খরচ সাধারণত মানুষের জীবনধারণের পদ্ধতির উপর নির্ভর করে। ডেনমার্কে বাসা ভাড়া, খাবার, যাতায়াত এবং কেনাকাটা সব মিলিয়ে মাসে খরচ পড়তে পারে প্রায় ৭৫০ থেকে ৯০০ ইউরোর মত, যা বাংলাদেশি টাকায় ৭৫ হাজার ৯৭০ থেকে ৯১ হাজার ১৬৪ টাকা। কোপেনহেগেনের মত উচ্চ খরচের শহরে যা সর্বোচ্চ এক হাজার ২০০ ইউরোর (এক লাখ ২১ হাজার ৫৫২ বাংলাদেশি টাকা) মতো উঠতে পারে।
আরো পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
ডেনমার্কে পড়াশোনার পাশাপাশি খন্ডকালীন চাকরির সুযোগ
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদেরা ডেনমার্কে পড়াশোনার পাশাপাশি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করতে পারেন। তবে জুন, জুলাই এবং আগস্ট মাসে এরকম কোনো বিধি নিষেধ নেই; পুরোটা সময়ই কাজ করা যায়।
ডেনমার্কে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপের সুবিধা
ডেনমার্কের ব্যয়বহুল উচ্চশিক্ষার খরচ চালানোর জন্য সেরা উপায় হচ্ছে স্কলারশিপ। আর ডেনমার্ক তার আন্তর্জাতিক মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বেশ ভালো স্কলারশিপের ব্যবস্থা রেখেছে। স্থানীয় শিক্ষার্থী ও স্কলারদের নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত থাকার মাধ্যমে এই স্কলারশিপগুলোতে সহজেই আবেদন করা যেতে পারে। সবচেয়ে জনপ্রিয় স্কলারশিপ প্রকল্পগুলোর মধ্যে ইরাসমাস মুন্ডাস/জয়েন্ট মাস্টার ডিগ্রি এবং ডেনিশ সরকারি বৃত্তি অন্যতম।
এছাড়াও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও জীবনযাত্রার খরচ পুষিয়ে নেয়ার জন্য ডেনমার্কের বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপের সুযোগ আছে।
আরো পড়ুন: শাবিপ্রবিতে পিটার হোর-মোস্তাক রহমান স্কলারশিপ পেলেন ৬ শিক্ষার্থী
ডেনমার্কে পড়াশোনা শেষে চাকরির সুযোগ
স্নাতক হওয়ার পরে চাকরি খুঁজে পেতে ছয় মাস সময় পাওয়া যায়। আর এর মধ্যেই রেসিডেন্স পারমিটের মেয়াদ বাড়িয়ে নেয়ার জন্য আবেদন করতে হয়। উত্তম উপায় হলো ডেনমার্কে পড়াশোনা করার জন্য রেসিডেন্স পারমিটের আবেদন করার সময়েই ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করা। এছাড়া পরবর্তীতে ডেনমার্ক ইমিগ্রেশন সার্ভিস নেয়ার সময়েও ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করা যায়।
পরিশিষ্ট
আমাদের উপরোক্ত আলোচনায় ডেনমার্কে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদনের পদ্ধতি, খরচ, স্কলারশিপের ধারণা এবং উচ্চশিক্ষা শেষে কি করতে পারেন এ বিষয়গুলো সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেয়া হয়েছে। আশা করা যায় ডেনমার্কে পড়াশোনার জন্য পূর্বপ্রস্তুতি নেবার ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। দেশটিতে পদার্পনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীর সামনে খুলে যাবে পুরো ইউরোপে দরজা। তাই মনোরম প্রকৃতির সান্নিধ্যে জীবন ধারণের স্বাদ পাবার তৃপ্তি তো আছেই। তার পাশাপাশি এক কাঙ্ক্ষিত ক্যারিয়ারের জন্য দারুণ গন্তব্যের অন্বেষণে অনায়াসেই ভাবা যেতে পারে ডেনমার্কের কথা।
আরো পড়ুন: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা আটলান্টিক ইউনিভার্সিটি
২ বছর আগে
বাংলাদেশের সাথে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক জোরদার করতে চায় নর্ডিক দেশসমূহ
সবুজ প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধিকে প্রাধান্য দিয়ে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশের সাথে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক জোরদারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিন নর্ডিক দেশ- ডেনমার্ক, নরওয়ে ও সুইডেনের রাষ্ট্রদূতেরা।
৪ বছর আগে
রাজধানীতে ‘নর্ডিক দেশসমূহের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক’ নিয়ে কসমস সংলাপ
রাজধানীতে শনিবার 'বাংলাদেশ ও নর্ডিক দেশ: অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা' শীর্ষক একটি সংলাপ শুরু হয়েছে।
৪ বছর আগে
‘নর্ডিক দেশসমূহের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক’ নিয়ে কসমস সংলাপ শনিবার
রাজধানীতে শনিবার 'বাংলাদেশ ও নর্ডিক দেশ: অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা' শীর্ষক একটি সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
৪ বছর আগে