বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ১৫৪ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (৪ আগষ্ট) বিকালে বাকৃবির রেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। এই বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা যায়, মোট তিনটি কেস স্টাডিতে এই শান্তি দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণের কারণে নির্যাতন ও হয়রানি এবং বিগত ২৪ সালের ৪ আগস্ট ‘শান্তি মিছিল’ এর মাধ্যমে জুলুম, নির্যাতন ও গণহত্যার উসকানি ও সমর্থন দেওয়ায় মোট ৫৭ জন শিক্ষক, ২৪ কর্মকর্তা ও ২১ কর্মচারীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষকদের মধ্যে ৬ জনকে বরখাস্ত, ১২ জনকে অপসারণ, ৮ জনকে নিম্নপদে অবনমিত ও ৩১ জনকে ভৎসনা করা হয়েছে।
কর্মকর্তাদের মধ্যে ৮ জনকে বরখাস্ত, ৮ জনকে অপসারণ, ৭ জনকে ভর্ৎসনা এবং ১ জনকে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কর্মচারীদের মধ্যে ২ জনকে বরখাস্ত এবং ১৯ জনকে ভর্ৎসনা করা হয়েছে।
গত সালের ৪ আগস্ট বাকৃবি ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের যেসকল সন্ত্রাসীরা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ‘শান্তি মিছিল’ এর নামে একটি সন্ত্রাসী মিছিল ও আন্দোলনকারীদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করায় মোট ৩১ জন ছাত্রকে শাস্তির আওতায় এনেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদের মধ্যে সার্টিফিকেট বাতিল করা হয়েছে ২৪ জন ছাত্রের এবং আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে ৭ জন ছাত্রকে।
এ ছাড়া ২০২২ সালে আশরাফুল হক হলে চারজন শিক্ষার্থীকে ছাত্রদল ও শিবির ট্যাগ দিয়ে নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ২ জন শিক্ষক, ১৮ জন ছাত্র ও একজন কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করে শান্তি দেওয়া হয়েছে। দুই শিক্ষকের মধ্যে একজনকে নিম্নপদে অবনমিত ও একজনকে পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধি স্থগিত করা হয়েছে।
ছাত্রদের মধ্যে সার্টিফিকেট বাতিল করা হয়েছে ১৫ জনের এবং আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে ৩ ছাত্রকে।
এর আগে, গত ১৮ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২৮তম সিন্ডিকেট অধিবেশনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিশনের করা বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির সুপারিশের অনুমোদন দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আজ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন।
এই বিষয়ে বাকৃবির গণতদন্ত কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান সরকার বলেন, তদন্ত কমিশন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করেছিল। সেই সুপারিশের প্রেক্ষিতে আজ বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। একইসঙ্গে আশরাফুল হক হলের ঘটনার জন্য ও অভিযুক্তদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।