বাকৃবি
বাকৃবিতে অসম্পূর্ণ প্ল্যান্ট দেখিয়েই গবেষণা দাখিল
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস হোসেন বাকৃবি রিসার্চ সেন্টারের (বাউরেস) অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণায় মিনি প্রসেসিং প্ল্যান্ট স্থাপন সম্পূর্ণ না করেই গবেষণা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
বাউরেসের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. পরেশ কুমার শর্মা নিশ্চিত করেছেন, প্রকল্পটি ২০২৪ সালে শেষ হয়ে গেছে।
বাউরেস সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত বাউরেসের বার্ষিক কর্মশালায় অধ্যাপক ইলিয়াস বাকৃবির পোল্ট্রি খামারে প্রসেসিং প্ল্যান্ট স্থাপনের ওই তথ্য উপস্থাপন করেছিলেন।
বাউরেসের কর্মশালার প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে অধ্যাপক ইলিয়াস বলেন, ‘প্রকল্পের কার্যক্রম দুটি ধাপে সম্পন্ন হয়েছে। প্রথমত; ময়মনসিংহের স্থানীয় বাজারে পোল্ট্রি জবাই এলাকার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা ও স্থানীয় বাজার এবং প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট থেকে উৎপাদিত মুরগির মাংসের জীবাণু ও গুণাগুণ মূল্যায়ন করা। দ্বিতীয়ত; বাকৃবি পোল্ট্রি খামারে একটি মিনি প্রসেসিং প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছিল। সেই খামারে একটি ১৫০ বর্গফুট খোলা-পার্শ্বযুক্ত প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্ট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ওই তথ্য মতে, গতবছর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল সেই মিনি প্রসেসিং প্লান্ট।’
এদিকে সরজমিনে দেখা যায়, বাকৃবির পোল্ট্রি খামারে নেই অধ্যাপক ড. ইলিয়াসের কোনো সম্পূর্ণ প্রসেসিং প্ল্যান্ট। তবে রয়েছে ছাদ ও দেয়ালবিহীন একটি কাঠামো।
বাকৃবি পোল্ট্রি খামারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রভাষক তানভীর আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান খামারে কোনো প্রসেসিং প্ল্যান্ট নেই। তবে একটি প্রসেসিং প্ল্যান্ট তৈরির কাজ চলমান।’
এছাড়া বাউরেসের নিয়ম অনুযায়ী, গবেষণা শেষে ফলাফল যাচাই করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটিতে ছিলেন— পশু প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন, পশু পুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল-মামুন বলে জানা যায়।
কোনো প্রকার প্রসেসিং প্ল্যান্ট ছাড়াই কিভাবে গবেষণা ফলাফল জমা পড়েছে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে পশু প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ওই গবেষণার যাচাই দলে আমি ছিলাম। তবে যাচাই টিমের কাজ হলো গবেষণা প্রবন্ধের ফাইন্ডিংস, অবজারভেশন অর্থাৎ গবেষণা সংক্রান্ত বিষয়সমূহ পর্যবেক্ষণ করে মূল্যায়ন করা। আর্থিক মনিটরিংয়ের কাজ আমাদের নয়, এটি করে থাকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেম (বাউরেস)। আসলে প্রসেসিং প্ল্যান্টের বিষয়ে ওই গবেষণা প্রবন্ধে কিছু ছিল কিনা, সেটা আমরা দেখি না।’
১১ দিন আগে
সারাদেশের ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে মধ্যরাতে উত্তাল বাকৃবি
মাগুরার ৮ বছরের শিশু আছিয়াসহ সারাদেশে অসংখ্য ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা দেশে ধর্ষণের বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ষকদের ফাঁসির দাবি জানান।
রবিবার (৯ মার্চ) দিবাগত রাত তিনটার দিকে ওই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি জব্বারের মোড় থেকে শুরু হয়ে উপাচার্যের বাসভবন, কৃষি কন্যা হল এবং কে. আর মার্কেট প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যালিপ্যাডে এসে শেষ হয়। এ সময় প্রায় আড়াইশো শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা— “আমি কে? তুমি কে? আছিয়া আছিয়া”; “উই ওয়ান্ট জাস্টিস, নো মোর রেপিস্ট”; “একটা একটা ধর্ষক ধর, ধইরা ধইরা বিচার কর”; “আমার বোনের কান্না আর না, আর না”; “আমার বোন ধর্ষিত কেন? ইন্টারিম জবাব চাই”; “ফাঁসি ফাঁসি, ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই”; “ধর্ষকের শাস্তি মৃত্যু, মৃত্যু”; “ধর্ষকের ঠিকানা, এই বাংলাদেশে হবে না”- সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের প্রতিবাদে মধ্যরাতে জাবিতে বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ
মিছিলে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা জানান, “মাগুরায় ৮ বছরের শিশু আছিয়া বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে বোনের শ্বশুরের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়। ঘটনাটি ৬ মার্চ, বৃহস্পতিবারের। এ ধরনের বর্বরতা, নিষ্ঠুরতা- মধ্যযুগীয় কায়দায় একজন শিশুকে ধর্ষণ করা কল্পনাতীত। ধর্ষকের বিচারের দাবিতে আজ আমরা বাকৃবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়েছি।”
এ সময় বাকৃবি শিক্ষার্থী মেজবাউল হক বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমরা বলব, এর এমন বিচার করতে হবে যেন বাংলার জমিনে আর কোনো ব্যক্তি এমন হীন কাজ করতে সাহস না পায়। আমাদের বাংলাদেশের মা ও বোনদের নিরাপত্তার জন্য যদি কোনো আইন সংস্কার করতে হয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে সেই আইনও বাস্তবায়ন করতে হবে।”
১৩ দিন আগে
বাকৃবিতে ৬ শতাধিক কৃষি বিষয়ক নতুন গবেষণা উপস্থাপন
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদের শতাধিক গবেষক পোস্টার ও মৌখিক আকারে ছয় শতাধিক কৃষিভিত্তিক গবেষণা উপস্থাপন করেছেন। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষসহ কয়েকটি স্থানে পোস্টার ও মৌখিক উপস্থাপনাগুলো নেওয়া হয়।
বাকৃবি রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) গবেষণা অগ্রগতির তিন দিনব্যাপী বার্ষিক কর্মশালায় ২৩টি টেকনিক্যাল সেশনে উপস্থাপনাগুলো সম্পন্ন হয়েছে।
বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাম্মাদুর রহমান বলেন, ‘১৯৮৪ সালে বাউরেস প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৪ হাজার ৫৩৭টি গবেষণা প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করেছে ও ৬৭৪টি গবেষণা প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অনুষ্ঠানে ২৩টি টেকনিক্যাল সেশনে উপস্থাপিত হবে এবং তা থেকে পরবর্তী গবেষণার পরিকল্পনা করা হবে। পরবর্তীতে সেশনভিত্তিক বেস্ট ২১ জন উপস্থাপনকারীকে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হবে।’
এছাড়া পোষ্টার সেশন মোট ৬ জনকে সেরা পোস্টার উপস্থাপনকারী হিসেবে পুরস্কৃত করা হবে বলেও জানান ড. মো. হাম্মাদুর রহমান।
সরজমিনে দেখা যায়, গবেষকরা কৃষিখাতে বিভিন্ন রকম নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করছেন। কেউ কাজ করেছেন ডায়াবেটিস কমানোর বিভিন্ন পদ্ধতি ইঁদুরের ওপর প্রয়োগ করে; কেউ কাজ করছেন গবাদি পশু, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের মান উন্নয়নে; বাজারে থেকে কিনে আনা মুরগি, ডিমের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে; গবাদিপশুর বিভিন্ন রোগ নির্ণয় ও এর সমাধান; জৈব সারের মানোন্নয়ন ও উৎপাদন পদ্ধতি নিয়ে; ফসল উৎপাদনের বিভিন্ন সমস্যা ও নতুন নতুন উদ্ভাবন; মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও জলজ সম্পদের অধিকতর ব্যবহার; কৃষি প্রযুক্তিতে উন্নয়ন; গ্রামীণ সমাজ ব্যবস্থায় কৃষি অর্থনীতির নানা দিক ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে গবেষণা অগ্রগতির বার্ষিক কর্মশালার উদ্বোধন
এ সময় ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী মো. আশিকুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক গবেষণায় বাজার থেকে আমরা যে পোল্ট্রি মুরগি কিনে আনি তাতে অ্যান্টিবায়োটিকের পাশাপাশি কক্সিডিওস্ট্যাটও থাকে। এর প্রভাবে মানুষের লিভার, কিডনি, স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। এছাড়া কক্সিডিওস্ট্যাটও অতিরিক্ত শরীরে প্রবেশ করলে উচ্চ রক্তচাপ ও ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়তে পারে। প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে নেপালি শিক্ষার্থী দীপেশ আরিয়াল ও আসমিতা ভূজেলের সহযোগিতায় প্রাথমিক গবেষণাটি সম্পন্ন হয়েছে।
স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী কাজী ফারাহ তাসফিয়া বলেন, বাউরেসে আমার গবেষণা উপস্থাপনের সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। এটি আমাকে বৈশ্বিক গবেষকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ করে দিয়েছে, যা ভবিষ্যতে আরও কার্যকর গবেষণার পথ সুগম করবে। আমি আশা করি, আমার কাজ কৃষি ও প্রাণিসম্পদ খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়ক হবে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) গবেষণা কার্যক্রম সূক্ষ্মভাবে পরিচালনার জন্য ১৯৮৪ সনের ৩০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ১৬১তম অধিবেশনে ‘বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেম (বাউরেস) অধ্যাদেশ’ অনুমোদন লাভ করে। তখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষকদের পরিচালিত প্রকল্প-গবেষণা কার্যক্রমের তদারকি, ব্যবস্থাপনা ও পর্যবেক্ষণের যাবতীয় দায়িত্ব বাউরেস পালন করে আসছে।
৩২ দিন আগে
বাকৃবিতে গবেষণা অগ্রগতির বার্ষিক কর্মশালার উদ্বোধন
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ‘গবেষণা অগ্রগতির’ বার্ষিক কর্মশালা শুরু হয়েছে।
কর্মশালায় বাউরেস দেশের কৃষিতে অসামান্য অবদান রাখার জন্য সংবর্ধনা ও সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বাউরেসের তত্ত্বাবধানে বাকৃবির সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন এ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
এ বছর শিক্ষকদের এইচ-ইনডেক্স মানের উপর ভিত্তি করে মোট ১৭ জনকে গ্লোবাল রিসার্চ ইম্প্যাক্ট রিকগনাইজেশন অ্যাওয়ার্ড-২০২৪, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকদের মধ্যে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি স্বর্ণপদক পুরস্কার প্রাপ্তির অসামান্য কৃতিত্বের স্বীকৃতি স্বরুপ বাউরেস থেকে পাঁচজনকে গ্লোবাল সায়েন্টিস্ট রিকগনিশন অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ ও ২০২৪ সালে বিশ্ব র্যাঙ্কিয়ে স্ট্যানফোর্ড-এলসেভিয়ায়ের শীর্ষ ২ শতাংশ বিজ্ঞানীর তালিকায় বাকৃবির আটজন শিক্ষককে তাদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ বাউরেস থেকে তাদের সম্মাননা-২০২৫ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতির উন্নয়নে বাকৃবি-মারডক বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণা
এছাড়া কৃষি উৎপাদনে বিশেষ অবদান রাখার জন্য খামার পর্যায়ের পাঁচজন কৃষককে অধ্যাপক ড. আশরাফ আলী খান স্মৃতি কৃষি পুরস্কার-২০২৫ দেওয়া হয়েছে। এ বছর কৃষি বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বাকৃবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. রায়হান আবিদকে কৃষি সাংবাদিকতা অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ দেওয়া হয়।
বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাম্মাদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফজলুল হক ভূইঁয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপদেষ্টা ও ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘বাকৃবির অনন্য ও সেরা বিষয়টি হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষক নারী। কৃষিসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের অগ্রগতি জরুরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদালয়ে গবেষণার পাশাপশি গবেষণার সংস্কৃতিও থাকা দরকার। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে গবেষণার সংস্কৃতি বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে আরও পরিচিত করে তুলবে।’
এ সময় বাকৃবি উপাচার্য বলেন, ‘বাকৃবির প্রয়াস আগামীতে বাংলাদেশের কৃষিকে আরও শক্তিশালী ও খাদ্য নিরাপত্তায় স্বচ্ছল করবে। আমদেরকে একটি টেকসই ও খাদ্য নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার পথে একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে। উদ্ভাবনী গবেষণা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে, কৃষক এবং গবেষকরা একযোগে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ, তার ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে, কৃষির জন্য এক অনিশ্চিত ভবিষ্যত মোকাবিলা করছে। তবে, কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বাকৃবির একাগ্রতা এবং উদ্ভাবনী শক্তি আমাদের কৃষি ব্যবস্থাকে আরও টেকসই ও সহিষ্ণু করে তুলবে।’
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ও কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী চেয়ারম্যান কৃষিবিদ ড. নাথুরাম সরকার।
আরও পড়ুন: বাকৃবির মধ্যে রিকশাভাড়া নির্ধারণ করল প্রশাসন
উল্লেখ্য, তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে ২৩টি টেকনিক্যাল সেশন উপস্থাপিত হবে এবং তা থেকে পরবর্তী গবেষণার পরিকল্পনা করা হবে। পরবর্তীতে সেশন ভিত্তিক বেস্ট ২১ জন উপস্থাপনকারীকে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হবে। এছাড়াও পোষ্টার সেশন মোট ছয়জনকে সেরা পোস্টার উপস্থাপনকারী হিসেবে পুরুস্কৃত করা হবে।
৩৪ দিন আগে
কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতির উন্নয়নে বাকৃবি-মারডক বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণা
কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতির দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে যৌথভাবে গবেষণা চালাচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ও অস্ট্রেলিয়ার মারডক বিশ্ববিদ্যালয়। গবেষণায় বাংলাদেশের মাটি ও পানি সম্পদের ওপর সংরক্ষণমূলক কৃষির প্রভাব, সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাব্য ঝুঁকি বিশ্লেষণ করা হবে।
গবেষণা দলের প্রধান বাকৃবির মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান জাহাঙ্গীর ইউএনবিকে বলেন, ‘মাটি ও পানি সম্পদের ওপর কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতির দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এবং এই পদ্ধতির সম্প্রসারণের উপযুক্ত কৌশল নির্ধারণ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি জানান, সংরক্ষণমূলক কৃষি বা কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি টেকসই চাষাবাদের একটি আধুনিক পদ্ধতি যা মাটির স্বাস্থ্য সংরক্ষণ, উৎপাদন বৃদ্ধি ও পরিবেশ রক্ষায় সহায়ক। এতে তিনটি মূলনীতি অনুসরণ করা হয়— ন্যূনতম চাষ, ফসলের আচ্ছাদন বজায় রাখা ও ফসলের বৈচিত্র্য নিশ্চিত করা।
গবেষণায় মারডক বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. রিচার্ড ডব্লিউ বেল ও ড. ডাভিনা বয়েড প্রজেক্ট লিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কৃষি অর্থনীতি বিষয়ের প্রধান গবেষক হিসেবে কাজ করছেন বাকৃবির কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. হাসনীন জাহান।
ড. রিচার্ড ডব্লিউ বেল বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটি অত্যন্ত উর্বর হলেও এর উর্বরতা দ্রুত কমছে। ২০১২ সাল থেকে মারডক বিশ্ববিদ্যালয় এ দেশের কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। বর্তমানে আমরা কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি গ্রহণে সহায়তা এবং মাটি ও পানির গুণগত পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করছি।’
আরও পড়ুন: বৃত্তি পেল বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের ৩৬ শিক্ষার্থী
গবেষণা প্রকল্পের আওতায় ৮টি পিএইচডি ও ৪টি মাস্টার্স ফেলোশিপের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষার্থীরা গবেষণার সুযোগ পাবে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক জাহাঙ্গীর।
এটি দেশের বিজ্ঞানীদের দক্ষতা, শিক্ষা ও গবেষণায় ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক জাহাঙ্গীর।
‘বাংলাদেশে সংরক্ষণমূলক কৃষি গ্রহণে সহায়তা এবং মাটি ও পানির গতিশীলতার পরিবর্তন (সাকা)’ শীর্ষক চার বছর মেয়াদি প্রকল্পটি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছে। এটি অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (এসিআইএআর) ও কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে।
এই প্রকল্পে আরও অংশ নিয়েছে— বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি), বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি), সংরক্ষণমূলক কৃষি সেবা প্রদানকারী সংস্থা (ক্যাসপা) ও পিআইও কনসাল্টিং লিমিটেড।
গবেষকরা আশা করছেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থায় টেকসই পরিবর্তন আসার পাশাপাশি কৃষকদের উৎপাদনশীলতা ও আয় বাড়বে।
৪৫ দিন আগে
বৃত্তি পেল বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের ৩৬ শিক্ষার্থী
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের ৩৬ জন দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। প্রতি শিক্ষার্থী ছয় মাসের জন্য সাড়ে সাত হাজার টাকা বৃত্তি হিসেবে পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) অনুষদীয় মেডিসিন কনফারেন্স হলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছেন ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান।
আরও পড়ুন: ৫ শতাধিক গবেষকের অংশগ্রহণে বাকৃবিতে বৈজ্ঞানিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। এছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন ভেটেরিনারি অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. নাজিম আহমাদ ও ইন্টার অ্যাগ্রো বিডি লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা. একেএম খসরুজ্জামান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘অনুষদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর এই উদ্যোগটি সত্যি প্রশংসনীয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এমন ভালো কাজে কখনও কার্পন্য করবে না। ভেটেরিনারি অনুষদ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে সামনে সব অনুষদ থেকেই এমন আয়োজন করা হবে বলে আশা করি।’
আরও পড়ুন: নানা অভিযোগে ডিন অফিসে তালা দিলেন বাকৃবির ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীরা
৪৫ দিন আগে
৫ শতাধিক গবেষকের অংশগ্রহণে বাকৃবিতে বৈজ্ঞানিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
৫ শতাধিক গবেষক, প্রাণী চিকিৎসক ও ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বাংলাদেশ সোসাইটি ফর ভেটেরিনারি অ্যাডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের (বিএসভিইআর) ৩১তম বৈজ্ঞানিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে ‘প্রাণীর স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তার ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাকৃবির শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী ঘোষণা করেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, ‘মানসম্মত সেবা খামারিদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ভেটেরিনারিয়ানদের এগিয়ে আসতে হবে। কোয়ান্টিটি নয় কোয়ালিটিতে আমাদের বেশি জোর দিতে হবে।’
আরও পড়ুন: নানা অভিযোগে ডিন অফিসে তালা দিলেন বাকৃবির ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীরা
বাকৃবি উপাচার্য বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রযুক্তির ব্যবহার দ্বারা গবাদিপশুর উৎপাদন, মান ও রোগের প্রাদুর্ভাব পরিবর্তিত হচ্ছে। চার দশক আগে খামার ও খামারিদের চিত্রের সঙ্গে বর্তমান অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। খামারিদের দক্ষতা, মন-মানসিকতা, দক্ষতার অবস্থারও পরিবর্তন হচ্ছে। খামারিরা পশুর লালন-পালন ও চিকিৎসায় প্রযুক্তির ব্যবহার করছে। তাই দেশের খামার ও খামারিদের পরিবর্তনের বিষয়টি মাথায় রেখেই ভেটেরিনারিয়ানদের কাজ করতে হবে।’
৪৮ দিন আগে
নানা অভিযোগে ডিন অফিসে তালা দিলেন বাকৃবির ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীরা
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের অধীনস্ত ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিনের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় ফুড শিক্ষার্থীরা জানান, ৪ মাস আগে ক্লাসরুম সংকট, ক্লাসরুমের দুরাবস্থা, নষ্ট প্রজেক্টর, ওয়াশরুমের দুরবস্থাসহ নানা সমস্যা প্রশাসনকে জানানো হলেও সমাধান হয়নি।
এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে বাকৃবির কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো জয়নাল আবেদীন বিষয়টি অস্বীকার করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা আজকে (বুধবার) অভিযোগপত্র দিয়েছে। এর আগে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
এ সময় উপস্থিত ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ক্লাসরুম ৩টি ও এর বিপরীতে ব্যাচ মোট ৬টি। দেখা যায়, অনেক সময় রুটিনে ক্লাস ওভারল্যাপ হলে ক্লাসরুমই পাওয়া যায় না। আজও একজন শিক্ষক ক্লাসরুম ফাঁকা না পেয়ে ক্লাস না নিয়েই চলে যান।
তারা আরও বলেন, ক্লাসের প্রজেক্টর নষ্ট, ফ্যান নষ্ট, ওয়াশরুম নষ্ট, ক্লাসরুমের পাশাপাশি ক্লাসে সিটেরও সংকট, ৩০ জনের ক্লাসে ৫০ জনকে ক্লাস করতে হয়, ল্যাবের অবস্থাও করুণ। আমরা কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিনের কাছে এসব বিষয় নিয়ে প্রায় চার মাস আগে কথা বলি, কিন্তু তিনি শুধু আশ্বাস দিয়েই ক্ষান্ত।
এ বিষয়ে ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগে অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান মজুমদার জানান, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিন ধরে ক্লাসরুম সংকট, ল্যাব ও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিয়ে অভিযোগ করে আসছে। এই বিষয়টা শিক্ষার্থী ও শিক্ষক ডিনকে অবহিত করলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। পরে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দিয়ে আসে।
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থীদের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীদের তুলনায় বেশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে ডিন বলেন, ‘এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া এ বছর নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়াতে ক্লাসরুমের দরকার। বায়োইনফরম্যাটিকসে মাত্র ২টি ক্লাসরুম। ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ২টি মাস্টার্স ডিগ্রি হওয়াতে রুমের সংকট হচ্ছে। রুটিন বিন্যাসে পরিকল্পনা ত্রুটির কারণে ক্লাসের অধিক্রমণ হচ্ছে। ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর এসে মেইন বিল্ডিংয়ে সাময়িকভাবে একটি রুমের ব্যবস্থা করেছেন।’
বাকৃবির কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ বিএসসি এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বায়োইনফরমেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং—তিনটি ডিগ্রি প্রদান করে থাকে।
৫১ দিন আগে
বাকৃবি: ১০ হাজার মানুষের জন্য চিকিৎসক মাত্র ৮ জন
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার মানুষের চিকিৎসাসেবায় বর্তমানে মাত্র ৮ জন চিকিৎসক রয়েছেন। এদের মধ্যে প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তাসহ নিয়মিত চিকিৎসক ৬ জন ও খণ্ডকালীন চিকিৎসক ২ জন। তবে দীর্ঘদিন যাবত ৫ মেডিকেল অফিসারের পদ শূন্য থাকায় ন্যূনতম সেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন সেবাপ্রত্যাশীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথকেয়ার সেন্টারের নিম্নমানের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সেখানকার স্বাস্থ্যসেবা কয়েক প্রকার ওষুধেই সীমাবদ্ধ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নানা সময় এ নিয়ে ওঠে আলোচনা-সমালোচনা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, হেলথকেয়ারে সেন্টারে বর্তমানে কর্মকর্তা আছেন ১০ জন এবং কর্মচারী ১৬ জন। তাদের মধ্যে ৬ জন নিয়মিত, ৭ জন মাস্টার রোলে, আর ৩ জন কর্মচারীর পদ শূন্য থাকায় ঘাটতি মেটাতে অন্য শাখা থেকে ৩ জন কর্মচারীকে এনে জোড়াতালি দিয়ে চলছে কাজ। তাছাড়া সেখানে কোনো নার্সের পদ নেই, নেই কোনো বিশেষায়িত ইউনিট, কোনো ডেন্টাল ইউনিটও নেই।
আরও পড়ুন: ৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রাণিসম্পদ ডিজিকে বাকৃবির সংবর্ধনা
হেলথ কেয়ারের ডেন্টাল বিভাগে ১৪ বছর আগে সর্বশেষ একজন খণ্ডকালীন নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক ছিলেন। ২০১১ সালে তিনি চলে যাওয়ার পর থেকে তার জায়গায় নিয়োগ দেওয়া হয়নি কোনো নতুন চিকিৎসক। বিভাগটির ডেন্টাল চিকিৎসায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিও এখন প্রায় অকেজো।
এছাড়া হেলথকেয়ার সেন্টারে ৭ প্রকার অ্যান্টিবায়োটিক, গ্যাসের ওষুধ, চর্মরোগের মলম ও প্যারাসিটামল বিনামূল্যে প্রদান করা হলেও চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল। দিনের বেলা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর তুলনায় বহিরাগত রোগীর সংখ্যা সেখানে বেশি থাকে। তাছাড়া লিফট বন্ধ থাকায় হাঁটা-চলায় অক্ষম রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, হেলথকেয়ার সেন্টারের নিচ তলার টয়লেট অপরিচ্ছন্ন, কোনোটার দরজা ভাঙ্গা। হেলথকেয়ারের বাইরেই রয়েছে ময়লার ভাগাড়, বিভিন্ন আবাসিক হলের ময়লা ফেলা হয় সেখানে। দিনের বেলা কখনও সেন্টারটির বারান্দা মোটরসাইকেল রাখার পার্কিং হিসেবে ব্যবহার হতে দেখা যায়। তাছাড়া হেলথকেয়ার সেন্টারের তৃতীয় ও চতুর্থ তলা কয়েকবছর আগে থেকেই নারী শিক্ষার্থীদের সাময়িক আবাসনের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের শিক্ষার্থী হাসান তপু বলেন, ‘আমি কয়েকদিন আগে শ্বাসকষ্ট নিয়ে (হেলথকেয়ার সেন্টারে) গিয়েছিলাম। সেখান থেকে আমাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে যেতে বলা হয়। অথচ, বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথকেয়ার সেন্টারে জরুরি চিকিৎসার সব ব্যবস্থা থাকার কথা। সেখানে ডাক্তার নেই, ওষুধ নেই; পুরো ব্যবস্থাপনাই অগোছালো।’
অ্যাম্বুলেন্সের সমস্যা ও সংকটের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মাহিরুজ্জামান নিলয় বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজনের সময় পাওয়া যায় না। তা পাওয়া খুব জটিল প্রক্রিয়া। ডাক্তারের সিগনেচার থেকে শুরু করে আরও অনেক নাটক। তার ওপর অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর ভাঙা, সাইরেন ঠিক নেই, বাজেই না। অ্যাম্বুলেন্স তো নয়, যেন লক্কর ঝক্কর কোনো গাড়ি!’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মো. সাঈদুর রহমান (শওকত) বলেন, ‘আমাদের হেলথ কার্ড রেডি। ভিসি মহোদয় ও অ্যাডভাইজার (উপদেষ্টা) মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে শিগগিরই এটা আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের হাতে পৌঁছে দেব।’
তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ব্যক্তিগতভাবে কোনো ওষুধ কেনে না। সরকারি কিছু ক্রয় নীতিমালা আছে। ওষুধের গুণগত মান ও মূল্য দেখেই এসব ওষুধ কেনা হয়।
হেলথকেয়ার সেন্টারের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যাপারে তিনি জানান, একটা সময় কেবল ৮-১০টা টেস্ট করা হতো, যা এখন করা হয় ২৮টা; তার মধ্যে ১৫টা টেস্টই করা হয় নামমাত্র মূল্যে। ডেঙ্গু টেস্ট, ইউরিন টেস্ট সম্পূর্ণ ফ্রি। বাকি টেস্টগুলোর দামও বাইরের হাসপাতালগুলো থেকে অনেক কম, ছাত্রদের জন্য প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ ছাড়। তাছাড়া এক্সরের জন্য রয়েছে ডিজিটাল মেশিন।
অ্যাম্বুলেন্সের কাঠামোগত ত্রুটি ও সময়মতো না পাওয়ার বিষয়ে নিয়ে ডা. সাঈদুর বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সব গাড়ি পরিবহন শাখার অন্তর্ভুক্ত। দুইটা অ্যাম্বুলেন্স এর মধ্যে একটা সব সময় থাকে, একটা রিজার্ভ থাকে। অ্যাম্বুলেন্স কে নিচ্ছে—সবই রেকর্ড থাকে। অ্যাম্বুলেন্স ভাঙা কি না, জ্বালানি আছে কি না—সব দেখে পরিবহন শাখা।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক বলেন, ‘হেলথকেয়ারের ডাক্তার সংকটের ব্যাপারে আমরা অবগত। সমস্যাটি সমাধানের ব্যাপারে ইতোমধ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং তা নিরসরণে কাজও শুরু হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ডাক্তার নিয়োগের ব্যাপারটি সময়সাপেক্ষ একটি ব্যাপার। তাই এই সমস্যা দূর করতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে ওষুধের ব্যাপারটি খতিয়ে দেখে খুব দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: গবাদিপশুর ম্যাসটাইটিস ভ্যাক্সিন আবিষ্কার করলেন বাকৃবির অধ্যাপক
৫৪ দিন আগে
দেশের কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা ‘রঙিন চাল’, কমাবে ডায়াবেটিস ও স্থূলতা
দেশের কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার আলো নিয়ে এসেছে রঙিন চাল। এই চালের ব্রানে প্রোটিন ও আঁশের পরিমাণ সাদা চালের চেয়ে বেশি হওয়ায় ডায়াবেটিস ও স্থূলতা কমাতে সাহায্য করে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফসল ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ছোলায়মান আলী ফকির ও তার গবেষকদল বিশেষ এই চাল নিয়ে গবেষণা করে এর পুষ্টিগুণ, স্বাস্থ্য উপকারিতা, চাষাবাদ, ফলন ও এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য ইউএনবির কাছে তুলে ধরেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পরিচালিত ওই গবেষণা দলে আরও যুক্ত ছিলেন কো-পিআই অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন এবং স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস ও সাগরিকা খাতুন।
রঙিন চালের পুষ্টিগুণের কারণেই এটি স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বর্তমানে জনপ্রিয় হচ্ছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. ছোলায়মান আলী ফকির বলেন, বর্তমানে পাহাড়ি এলাকায় ও প্রগতিশীল কৃষকরা রঙিন চালের চাষ করছেন। সাধারণ সাদা চালের তুলনায় এই চাল অধিক প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও আঁশ-সমৃদ্ধ। রঙিন চালের ধানের রং সোনালি, লাল, কালো কিংবা বেগুনি বর্ণের হতে পারে, তবে চালের রং লাল, বেগুনি, বাদামি বা কালো রঙের হয়।
তিনি জানান, খোসা ছাড়ানোর পর এই চালের দানা বাইরে থেকে কালো বা লাল রঙের বহিরাবরণ দিয়ে আবৃত থাকে যাকে ব্রান বলা হয় এবং ব্রানের ভেতরে দানা ও ভ্রুণ থাকে। দানা প্রধানত স্টার্চ ও জার্ম প্রোটিন, আঁশ, ফাইটোক্যামিকেলস ও এন্থোসায়ানিন নামক লাল পদার্থ দ্বারা গঠিত। ব্রানের লাল রং সাধারণত এন্থোসায়ানিনের উপস্থিতির কারণে হয়ে থাকে। এন্থোসায়ানিনসহ অন্যান্য ফাইটোক্যামিকেলসের প্রচুর স্বাস্থ্য গুণাগুণ বিদ্যমান। গবেষণায় জানা গেছে, এন্থোসায়ানিন ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও হৃদরোগ প্রশমিত করে।
আরও পড়ুন: গবাদিপশুর ম্যাসটাইটিস ভ্যাক্সিন আবিষ্কার করলেন বাকৃবির অধ্যাপক
রঙিন চালের পুষ্টি ও ঔষধি গুণ সম্পর্কে এই অধ্যাপক জানান, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়দের খাবারে প্রোটিন, ভিটামিন, আঁশ, খনিজ পদার্থ ইত্যাদির প্রায়শই ঘাটতি থাকে। সাদা চালের চেয়ে কালো চালের ব্রানে দুই থেকে তিনগুণ খনিজ পদার্থ, বিশেষ করে আয়রন ও জিঙ্ক বিদ্যমান। অধিকন্তু আমাদের দেশে অটোরাইসমিল থেকে প্রাপ্ত ব্রান/ভূষি পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে এই ভূষিতে মূল্যবান পুষ্টিগুলো চলে যায়। রঙিন চালের ব্রানে প্রোটিন ও আঁশের পরিমাণ সাদা চালের চেয়ে বেশি। এই আঁশ ডায়াবেটিস ও স্থূলতা কমাতে সাহায্য করে।
তার দেওয়া তথ্য অনুসারে, রঙিন চালের ব্রানে প্রোটিন, ফ্লাভোনয়েড, ফেনল ও ভিটামিন রয়েছে যা স্বাস্থ্যগত দিক থেকে খুবই উপকারী। রঙিন চালে বিদ্যমান এন্থোসায়ানিন একটি শক্তিশালী এন্টি-অক্সিডেন্ট যা দেহের ক্ষতিকারক রেডিক্যালসকে বিশোধন করে।
তাছাড়া এই চাল দিয়ে ভাত, বিরিয়ানি, খিচুড়ি, চিড়া, মুড়ি ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পিঠা ও কেক প্রস্তুত করা যায়। তাই সহজেই এটি দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন অধ্যাপক ছোলায়মান আলী ফকির।
৫৫ দিন আগে