বাগেরহাটের মোল্লাহাটের একটি বিল থেকে শিকারিদের ফাঁদে আটক ১ হাজার ২০০ পাখি উদ্ধার করে অবমুক্ত করেছে উপজেলা প্রশাসন।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকালে মোল্লাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা হরেকৃষ্ণ অধিকারীর নেতৃত্বে গাওলা ইউনিয়নের রাজপাঠ গ্রামের বিলে অভিযান চালিয়ে পাখিগুলো উদ্ধার করা হয়।
এসময় পাখি শিকারের বিপুল পরিমান ফাঁদসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। পরে এসব সব ঝুট শালিক ওই বিলে অবমুক্ত করা হয়েছে। শিকারীর জালে আটক এসব পাখি মুক্ত আকাশে ফিরে পেয়েছে আপন ঠিকানা।
তবে পাখি শিকারীদের ধরা না গেলও তাদের শনাক্ত করেছে উপজেলা প্রশাসন। পাখি শিকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরে প্রস্ততি চলছে।
পাখি শিকার বন্ধ করতে প্রশাসন কঠের ভুমিকা রাখবে এমন দাবি পাখি বিশেজ্ঞদের।
জানা গেছে, রাজপাঠ গ্রামের বিলে প্রায় একসপ্তাহ ধরে ধরে জাল দিয়ে ফাঁদ পেতে এসব ঝুট শালিক আটক করে শিকারি চক্র। এর পর বিলের মধ্যে শিকারিদের অস্থায়ী ঘরে পাখি আটক রাখা হয়েছে। এভাবে শীত মৌমুমে দীর্ঘদিন ধরে শিকারি চক্র বাগেরহাটের মোল্লাহাট, চিতলমারী, ফকিরহাটসহ বিভিন্ন বিলে পাখি শিকার করে আসছে।
মোল্লাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হরেকৃষ্ণ অধিকারী জানান, রাজপাঠ গ্রামের বিল থেকে পাখি শিকারের পর বিক্রির প্রস্তুতির খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় বিলের মধ্যে শিকারীদের অস্থায়ী একটি ঘরে জাল দিয়ে আটক এক হাজার দুইশত ঝুট শালিক পাখি উদ্ধার করে পাখিগুলো অবমুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় নির্বিচারে অতিথি পাখি শিকার, বিক্রি হচ্ছে বাজারে
তিনি বলেন, শিকারী চক্রের সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের আটক করা সম্বভ হয়নি। তবে শিকারী চক্রের চার সদস্যকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মোল্লাহাট থানায় নিয়মিত মামলার করবে পুলিশ।
তিনি আরও জানান, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে শিকারী চক্রের সদস্যরা বিলে জাল দিয়ে ফাঁদ পেতে ওই পাখিগুলোকে আটক করেছিল। এর পর তারা পাইকারিভাবে পাখি বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তাদের পৌঁছাতে দেরি হলে ওই পাখিগুলো ক্রেতাদের মাধ্যে একের পর এক হাত বদল হয়ে মার্কেটে চলে যেতে। জীবিত অবস্থায় তারা পাখিগুলোকে উদ্ধার করে অবমুক্ত করতে পেরেছে। জব্দকৃত ফাঁদ ও জালসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। পাখি শিকারীদের ধরতে উপজেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকার বিল,খাল এবং মৎস্যঘেরে শীত মৌমুমে দেশি-বিদেশি পাখিদের আনাগোনা বেড়ে যায়। এসময় আইন ভঙ্গ করে একশ্রেণির শিকারি চক্র পাখি শিকারে মেতে উঠেন। নানাভাবে পাখি শিকার করার পর তারা একের পর এক হাত বদলের মাধ্যমে খুচরা পর্যায়ে পাখি বিক্রি করেন। বাগেরহাটে শিকার করা পাখির অধিকাংশই জেলার অন্যত্র পাঠানো হয়। কিছু লোভী মানুষ মাংস খাওয়ার জন্য উচ্চমূল্যে নানা নামের পাখি ক্রয় করে। কখনও প্রকাশ্যে আবার কখনও বা গোপনে বিভিন্ন স্থানে পাখি বিক্রি হয়। মাঝে মধ্যে পাখি শিকারিদের ধরতে অভিযান চালানো হলেও থামছে না পাখি শিকার।