বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ সংস্থাটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী চার মাসের মধ্যে অনুসন্ধান করে দুর্নীতি দমন কমিশনকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
রুলে বাফুফের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
যুব ও ক্রীড়াসচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুদক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাফুফের সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদককে চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাফুফের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অনুসন্ধান চেয়ে রিট
এর আগে বাফুফের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান চেয়ে গত রবিবার ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন হাইকোর্টে রিট করেন। আজ ওই রিটের ওপর শুনানি হয়। রিটের পক্ষে ব্যারিস্টটার সুমন নিজেই শুনানি করেন। বাফুফে কর্মকর্তাদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ মামুন ও ব্যারিস্টার মারগুব কবির। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
আদেশের পর রিটকারী ব্যারিস্টার সুমন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, একটি ঐতিহাসিক আদেশ হয়েছে। মনে করা হতো, বিদেশ থেকে ফান্ড আসলে বিদেশিদের খুশি করতে পারলেই হতো। কিন্তু আজকের আদেশে প্রমাণিত হলো টাকা যে জায়গা থেকেই আসুক না কেন, বাংলাদেশের মানুষকে বঞ্চিত করা হলে তা আইনের আওতায় আসবে।
তিনি বলেন, ফিফার টাকা আত্মসাত করায় বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের ওপর দুই বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফিফা। কিন্তু তাদের দুর্নীতির ব্যাপারে অনুসন্ধানে নিষ্ক্রিয় থাকায় আমি রিট করি। হাইকোর্ট রিটের শুনানি করে ফিফা থেকে পাঠানো এবং বাংলাদেশ সরকারের যে টাকা বাফুফের ফান্ডে এসেছে হাইকোর্ট সেই ফান্ডের ব্যাপারে দুর্নীতি, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাত ও পাচারের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছেন। দুদককে অনুসন্ধান করে চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।
এর আগে বাফুফের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান চেয়ে ৩ মে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক। এতে ফল না পেয়ে তিনি রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন।
রিটের প্রার্থনায় বলা হয়, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি, সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি কার্যক্রম নিতে অনুসন্ধানে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, সে ব্যাপারে রুল চাওয়া হয়। রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় অভিযোগ অনুসন্ধান করতে বিবাদীদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়ার আরজি জানানো হয়। পাশাপাশি ৩ মে দুদকে করা রিট আবেদনকারীর আবেদনটি নিষ্পত্তি করতে সংস্থাটির (দুদক) চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বাফুফে অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল: ১-১ গোলে ড্র শেখ জামাল-বসুন্ধরা