স্বামী-সন্তান সবই আছে, প্রতিবেশিরাও জানেন তারা স্বামী-স্ত্রী। কিন্তু কাগজে-কলমে তারা হলেন ভাই-বোন।
মুক্তিযোদ্ধার কোটা এবং সরকারি সুযোগ সুবিধা পেতে এমন ব্যতিক্রম ঘটনাটি ঘটিয়েছে এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।
অভিনব প্রতারণার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য।
এর আগে নিজের ভাইকে ভোটার আইডি এবং শিক্ষা সনদ জালিয়াতি করে বাংলাদেশ রেলওয়েতে মুক্তিযোদ্ধার কোটায় চাকরি নিয়ে দেয়ার ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের কুটিনাওডাঙ্গা আমিরটারী তালবেরহাট গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আইনুল হক ও জমিলা বেগম দম্পতির বাড়ি।
তাদের ছেলে-মেয়ে আটজনের মধ্যে বড় ছেলে আনিছুর রহমান। সে রংপুর বেতারে অফিস সহায়ক পদে চাকরি করেন।
২০০৭ সালে আনিছুর জেলার উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের নাগড়াকুরা গ্রামের বাজার এলাকার বাসিন্দা মৃত রবিউল ইসলাম-আছমা বেগমের মেয়ে সোনালী খাতুনকে বিয়ে করেন। সোনালী খাতুন সাত ভাই বোনের মধ্যে ছোট।
আনিছুর-সোনালী খাতুনের সংসার জীবনে তাদের ঘরে রয়েছে ১২ বছরের বড় ছেলে স্বাধীনসহ আরও জমজ দুই সন্তান।
বিয়ের পর সোনালী খাতুন তথ্য গোপন করে শ্বশুর-শাশুড়ি নিজের মা-বাবা দেখিয়ে ২০১৪ সালে ভোটার হন। এর আগে উপজেলার সাপখাওয়া দাখিল মাদরাসায় ২০১০-১১ সেশনে অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসাবে ভর্তি হন। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা দম্পতিকে মা-বাবা দেখিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেন। এই মাদরাসা থেকে সোনালী খাতুন ২০১৩ সালে জিপিএ-২.৯৪ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন।
ভোটার হওয়ার সময় সোনালী খাতুন তার এসএসসি সনদ, জন্ম নিবন্ধন, শ্বশুর বাড়ির ঠিকানা এবং মুক্তিযোদ্ধাকে নিজের মা-বাবা এবং ২৫ মে, ১৯৯৪ সাল জন্ম তারিখ দেখিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণ করেন।
এই বিষয়ে প্রতিবেশি হযরত আলী ও বেলাল বলেন, এনআইডিতে থাকা ছবি সোনালী খাতুনের। সে আনিছুর রহমানের স্ত্রী। তাদের ঘরে তিনটি সন্তান রয়েছে।
প্রতিবেশি রাসেদ বলেন, নিজের বৌকে কেন বোন বানিয়েছে তা তো আমরা জানি না। এই বিষয়টি আগে জানতাম না। আজই প্রথম দেখলাম।
অসৎ উদ্দেশ্য ছাড়া এমনটি কেউ করতে পারে না।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে বন্ধ ঘরে স্বামী-স্ত্রীর লাশ
সন্তোষপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে গ্রাম পুলিশ জহুরুল হক বলেন, আনিছুর রহমান আমার বাল্য কালের বন্ধু। সোনালী খাতুন আনিছুরের স্ত্রী। সে উলিপুর উপজেলায় বিয়ে করেছে। সোনালীর বাবার বাড়ি সেখানেই। ভোটার আইডিতে সোনালী খাতুনের মা-বাবার জায়গায় আনিছুরের মা-বাবার নাম ব্যবহার করেছে এ ঘটনা আমি জানি।