খুলনা জেলার ৯টি উপজেলায় ব্যক্তিমালিকানাধীন ৮০টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ৫৬টি ক্লিনিকের নিবন্ধন থাকলেও বাকিগুলোর নেই। এছাড়া এসব নিবন্ধনহীন ব্যক্তিমালিকানাধীন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে খুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদারকি না করার অভিযোগ রয়েছে। তবে তালিকা তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছে খুলনা সিভিল সার্জন অফিস।
ইতোমধ্যে খুলনা জেলার ৫টি উপজেলার তালিকা করা হয়েছে। বাকি আরও ৪টি উপজেলায় কতটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নেই তার তালিকা তৈরি হচ্ছে। এমনকি প্রতিটি স্বাস্থ্য উপজেলা ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ের (ইউএইচএফপিও) মাধ্যমে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এদিকে নাম না প্রকাশ করার শর্তে খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘অধিকাংশ ব্যক্তি মালিকানাধীন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স থাকলেও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা। প্রায় শতকরা ৯৮ শতাংশ এসব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো নীতিমালা উপেক্ষা করছে। আমরা এসব বিষয় অবগত থাকলেও প্রাথমিক অবস্থায় কিছু করতে পারছি না। আমাদের নেই প্রশাসনিক ক্ষমতা বা পর্যাপ্ত জনবল।’
আরও পড়ুন: খুলনায় শীত উপেক্ষা করে ঝিনুক কুড়িয়ে বাড়তি আয়ে খুশি এলাকাবাসী
তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয় প্রশাসন, প্রভাবশালী মহলদের ছাড়াও রয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব। পাশাপাশি আমাদের স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের কারণে অনেকটা সময়ে আমাদের নিরব থাকতে হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশনায় আবারও কাজের গতি ফিরছে। আমরা এবার কঠোর অবস্থানে যাচ্ছি।’
সচেতন নাগরিক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ‘এর আগেও গেল দুই বছর দেশের সব অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর খুলনায় অভিযান চালিয়ে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মহানগরীতে লাইসেন্সবিহীন ৩৯ ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশনা দেয়। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রাথমিকভাবে বন্ধ করে দেয়। তবে আবারও সবগুলো প্রতিষ্ঠান ব্যবসা পরিচালনা করছে আগের মতো। বন্ধ হয়ে গেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সকল অভিযান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আবারও শুনছি অবৈধ এসব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ ধরনের কাজকে অবশ্যই আমি সাধুবাদ জানাই। স্বাস্থ্য মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। এই মৌলিক চাহিদা ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না। সরকার সাধারণ মানুষের জন্য সরকারিভাবে সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। পাশাপাশি ওষুধ পর্যন্ত বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। তারপরও কেন এসব অবৈধ ক্লিনিক আর ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দৌরাত্ম্য থামছে না। আমাদের সকলকে আরও সচেতন হতে হবে।’
এছাড়া দেখা যায় প্রায় সময়ে প্রশাসনের হাতে ভুয়া ডাক্তার আটক হচ্ছে। এছাড়া ভুয়া মনগড়া পরীক্ষার রিপোর্ট দিচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ বলেও জানান মো. খালিদ হোসেন।
এ ব্যাপারে খুলনা সিভিল সার্জন ডা. সজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে খোঁজ নিচ্ছি কতজন ব্যক্তির স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান আছে। অবৈধ এসব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।’