বাঙালি জাতির শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় দিন আজ। শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটাতে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে স্বাধীনতার জন্য যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, দীর্ঘ নয় মাস পর ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে তার সফল পরিণতি পায়।
অরও পড়ুন: বাংলাদেশ সমানভাবে সব ধর্মের মানুষের: প্রধানমন্ত্রী
আজ সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে তোপধ্বনিতে শুরু হয় বিজয়ের উৎসব।
চলতি বছরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীতে বিজয়ের এ উৎসব বড় পরিসরে উদযাপনের কথা থাকলেও বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে তা হয়নি।
সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নানা সংগঠন সীমিত আকারে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। নানা দেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো গ্রহণ করেছিল বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা।
অরও পড়ুন: বিজয় দিবসের প্রত্যয় স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে নির্মূল করা: তথ্যমন্ত্রী
এবার বিজয় দিবসের দিন জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সশস্ত্র বাহিনীর সম্মিলিত সামরিক কুচকাওয়াজ (প্যারেড) হয়নি। সেই সাথে প্রতিবারের মতো এবার স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতেও যাননি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তবে রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম শামিম উজ জামান এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী বুধবার ভোরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
অরও পড়ুন: স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে কোনো আপস নেই: কাদের
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে দেশে আজ গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত। সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়নসহ আর্থসামাজিক প্রতিটি সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
‘উন্নয়নের এ ধারাকে এগিয়ে নিতে সকলের সহযোগিতা যেমন প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন। তাহলেই দেশ পরিণত হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায়,’ বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি দেশে-বিদেশে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে বিজয়ের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে করোনাভাইরাস মহামারিতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।
অরও পড়ুন: পাকিস্তানে বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদযাপিত
অপদিকে, প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ, গণতন্ত্র ও সরকারবিরোধী যে কোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
একইভাবে করোনা মহামারির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার উপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
অরও পড়ুন: ইবিতে বিজয় দিবসের শ্রদ্ধাঞ্জলিস্থলে কর্মকর্তাদের সংঘর্ষ
আজকের দিনটি ছিল সরকারি ছুটির দিন। আজ বিজয়ের তাৎপর্য তুলে ধরে পত্রিকাগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়। সেই সাথে বিভিন্ন রেডিও ও টিভি চ্যানেলে প্রচার করা হয় বিশেষ অনুষ্ঠান। আর বিজয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যা হতেই রাজধানীসহ সারা দেশের সরকারি-বেসরকারি সব ভবন আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়।