রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (এনপিপি) ইউনিট-২ এর চুল্লি ভবনে মূল কুল্যান্ট পাইপলাইনের (এমসিপি) ঝালাই সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
রূপপুর এনপিপির রাশিয়ান ঠিকাদার রোসাটম জানায়, ২৮টি জোড় জয়েন্টের একত্রীকরণের কাজ, ঢালাই এবং তাপ নিয়ন্ত্রণ কাজটির সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি শেষ করতে ৬০ দিন সময় লেগেছে।
এতে আরও বলা হয়, অস্টেনিটিক স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে বহিরাংশ সম্পূর্ণ করতে আরও ৬ দিনের প্রয়োজন ছিল যা পাইপলাইনকে আক্রমণ থেকে রক্ষা করবে।
প্রধান কুল্যান্ট পাইপলাইন প্রথম সার্কিটের সঙ্গে সংযুক্ত পাইপের একটি সিস্টেম। এটি চারটি লুপ নিয়ে গঠিত, যার প্রতিটি চুল্লি এবং চুল্লি কুল্যান্ট পাম্প এবং বাষ্প জেনারেটরের সঙ্গে সংযুক্ত।
আরও পড়ুন: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ২য় ইউনিটের চুল্লি স্থাপনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
এমসিপি ১৪০ মিটার লম্বা যার ভিতরের ব্যাস ৮৫০ মিমি এবং ওজন ২৩৮ টন।
এএসইর ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং রূপপুর এনপিপি নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক আলেক্সি ডেরি বলেছেন, ‘এনপিপি কার্যক্রম চলাকালীন ৩২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার কুল্যান্ট এমসিপি’র মাধ্যমে সঞ্চালিত হবে। তাই, পাইপলাইন ঢালাই একটি অত্যন্ত দায়িত্বশীল প্রক্রিয়া হওয়ায় সবচেয়ে অভিজ্ঞ ওয়েল্ডারদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়েল্ড জয়েন্ট বিভিন্ন কাজের পর্যায়ে সাতটি পরিদর্শন পাস করে, যা তার নির্ভরযোগ্যতা এবং গুণমানের নিশ্চয়তা দেয়।’
এতে এনারজোসেপেটসমনতাজ-এর প্রায় ১০০ কর্মচারী কাজে নিযুক্ত ছিলেন এবং প্রযুক্তিগত, দক্ষতা এবং পরামর্শ সহায়তা দিয়েছেন এনআইকেআইএমটি-অ্যাটোমস্ট্রয়-এর বিশেষজ্ঞরা।
রূপপুর এনপিপি মোট দুই হজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দু’টি রাশিয়ান ভিভিইআর-১২০০ চুল্লি দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে।
তৃতীয় প্রজন্মের অন্তর্গত ভিভিইআর-১২০০ চুল্লিগুলো সমস্ত আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা শর্ত সম্পূর্ণরূপে মেনে চলে।
রাশিয়ার রোসাটম স্টেট কর্পোরেশনের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ সাধারণ ঠিকাদার হিসাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প বিলম্ব: মন্ত্রী
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (বিএইসি) অনুসারে, ২০১০ সালে দুটি ইউনিটের মোট দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল।
সরকার ২০২২ সালে প্রথম ইউনিট এবং ২০২৩ সালে দ্বিতীয় ইউনিটের নির্মাণ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল।
কিন্তু পরবর্তীতে লক্ষ্য পুনঃনির্ধারণ করা হয় এবং প্রথম ইউনিটটি ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এবং দ্বিতীয় ইউনিটটি ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান সম্প্রতি বলেছেন, সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ করার চেষ্টা করছে।
গত বছরের নভেম্বরে ঢাকার বিদ্যুৎ ভবনে বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে তার মন্ত্রণালয়ের যৌথ বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পরবর্তীতে ডলার সংকটের কারণে প্রকল্পের কাজ কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: রূপপুর পাওয়ার প্ল্যান্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন