শুক্রবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০৪ বিমানযোগে দেশে ফেরেন তারা। এ নিয়ে নভেম্বর মাসের তিন সপ্তাহে মোট ২ হাজার ৬১৫ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন।
বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও ব্র্যাকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১০ মাসে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ২১ হাজার বাংলাদেশি।
বরাবরের মতো শুক্রবারও ফেরত আসাদেরও প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরি সহায়তা প্রদান করা হয়।
ভুক্তভোগী নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজারের আফজাল (২৬) জানান, মাত্র আড়াই মাস আগে তিনি ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। ভাগ্য এতোটাই খারাপ যে রুম থেকে বের হয়েছিলেন বাজার করার জন্য, কিন্তু পথ থেকে ধরে দেশে পাঠিয়ে দিলেন তাকে। কাজের বৈধ অনুমোদনও (আকামা) ছিল আফজালের।
তার মতো ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার কামরুলও ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা খরচ করে আড়াই মাস আগে গিয়েছিলেন সৌদি, কিন্তু তাকেও দেশে ফিরতে হয়েছে শূন্য হাতে।
দুবছর ধরে সেলুনে কাজ করতেন কুমিল্লার নন্দন কুমার। আকামার মেয়াদ শেষ হবার পূর্বেই কফিলকে (নিয়োগকর্তা) সাড়ে ছয় হাজার রিয়াল দিয়েছিলেন, কিন্তু আকামা আর করে দেয়নি নন্দনকে। পুলিশের হাতে নন্দন গ্রেপ্তার হলে কফিলকে ফোন দেন নন্দন, কিন্তু কফিল আর তার দায় দায়িত্ব নেয়নি। পরে শূন্য হাতেই দেশে ফিরতে হলো নন্দনকে।
একইরকম পরিস্থিতির শিকার হয়ে দেশে ফিরতে হয়েছে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার মন্টু মিয়া, সাইদুল ইসলাম, নরসিংদির নাইম, হবিগঞ্জের ফারুক হোসেন, ঢাকার সাইফুল ইসলামসহ আরও অনেককে।
দেশে ফেরা এসব কর্মীদের অভিযোগ করেন, আকামা তৈরির জন্য কফিলকে (নিয়োগকর্তা) টাকা প্রদান করলেও আকামা তৈরি করে দেয়নি। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর কফিরের সাথে যোগাযোগ করলেও গ্রেপ্তার কর্মীর দায়-দায়িত্ব নিচ্ছেনা, বরং কফিল প্রশাসনকে বলেন ক্রুশ (ভিসা বাতিল) দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দিতে।
ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ২২ হাজার বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসের তিন সপ্তায় ফিরেছেন ২ হাজার ৬১৫ জন। প্রায় সবাই খালি হাতে ফিরেছেন। যারা কয়েকমাস আগে গিয়েছিলেন তাদের কেউই খরচের টাকা তুলতে পারেননি। তারা সবাই ভবিষ্যত নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায়।
তিনি আশা করেন, তিনদিন পর সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের যৌথ বৈঠক নারী কর্মীদের পাশাপাশি পুরুষদের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হবে। বিশেষ করে ফ্রি ভিসার নামে প্রতারণা বন্ধ করতে কাজ করতে হবে দুদেশকে।