‘আমরা আশা করি ভবিষ্যতে ভালো দিন আসতে পারে, আমাদের শিশুরা তাদের স্কুলে যেতে সক্ষম হবে, তারা স্বাভাবিকভাবে তাদের পড়াশোনা শুরু করবে। আমরা সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছি,‘ তিনি বলেন।
আরও পড়ুন: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ল
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে মিরপুর সেনানিবাসের জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজে শেখ হাসিনা কমপ্লেক্স ডিএসসিএসসি-তে জাতীয় প্রতিরক্ষা কোর্স-২০২০ এবং সশস্ত্র বাহিনী যুদ্ধ কোর্স-২০২০ এর স্নাতক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার কোভিড-১৯ এর জন্য স্কুল খুলতে পারছে না এবং অনলাইন ও টেলিভিশনের মাধ্যমে ক্লাস নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাবির অনার্স, মাস্টার্সের ফাইনাল পরীক্ষা ২৬ ডিসেম্বর শুরু
‘সর্বোপরি, শিশুরা যদি তাদের স্কুলে যেতে না পারে তবে এটি তাদের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করে,’ বলেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন যে সরকার যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখনই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: এ বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা বাতিল: শিক্ষামন্ত্রী
তিনি আবারও করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশনা অনুসরণ করার জন্য সকলকে আহ্বান জানান।
‘সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকুন’
বাংলাদেশ শান্তিতে বিশ্বাসী এবং শান্তি চায় উল্লেখ করে, প্রধানমন্ত্রী দেশের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তবে দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হলে প্রতিউত্তর দিতেও সর্বদা প্রস্তুত থাকার ওপর জোর দেন তিনি
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই। কিন্তু কেউ যদি আমাদের সার্বভৌমত্বকে আঘাত করতে আসে তাহলে অবশ্যই আমাদের পাল্টা আঘাত করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। এর জন্য আমাদের প্রশিক্ষণ এবং প্রস্তুতি নেয়া উচিত। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্যদের এটি সর্বদা মনে রাখা প্রয়োজন।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মিয়ানমারের ১০ লাখেরও বেশি নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং বাংলাদেশ তাদের সাথে কখনও সংঘাতের পথে যায়নি।
‘বিষয়টি সমাধান করার জন্য আমরা আলোচনা অব্যাহত রেখেছি,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ব অঙ্গনে বাংলাদেশ দ্রুত সকলকে এই সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে কারণ মিয়ানমারের এই নাগরিকরা দেশের জন্য একটি বড় বোঝা
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সশস্ত্র বাহিনী দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং বিশ্ব অঙ্গনে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় সর্বদা প্রস্তুত থাকবে।
‘আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি,’ বলেন তিনি।
‘মানুষের জন্য কাজ করুন’
প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্যকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেকে গড়ে তোলার আহ্বান জানান কারণ মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়েই দেশে সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম হয়েছিল।
দেশের মানুষের পাশে থেকে তাদের জন্য কাজ করতেও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
কোভিড-১৯ মহামারিসহ দেশের সব সংকটে সশস্ত্র বাহিনীর কাজের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, লাখ লাখ মানুষের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল।
‘এই ত্যাগ অবশ্যই বৃথা যেতে দেয়া হবে না। এই স্বাধীনতা আমাদেরকে সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যাবে,’ বলেন তিনি।
এ সময় ‘ভিশন-২০২১’, ‘ভিশন ২০৪১’ ও ‘ডেল্টা প্লান-২১০০’সহ দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারলেও, বিশ্ব অঙ্গনে বাংলাদেশকে এখনও উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজের কমান্ড্যান্ট লে. জেনারেল আতাউল হাকিম সরোয়ার হাসান বক্তব্য দেন।
বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনার কারণে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
গত ১২ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে: শিক্ষামন্ত্রী
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হবার পর ১৭ মার্চ স্কুল, কলেজসহ সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে অনলাইনে ক্লাস চলছে।
তাছাড়া চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান, প্রাথমিক সমাপনি ও সমমান এবং জেএসসি ও সমমান পরীক্ষা বাতিল করে সরকার।
বর্তমানে অফিস-আদালতের কার্যক্রম ধীরে ধীরে চালু হয়ে গেলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও খুলে দেয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া