খ্রিষ্ট্রান সম্প্রদায়ের সবচয়ে বড় ধর্মীয় আয়োজন বড়দিন হলো পুনর্জন্ম, নতুন শুরু, ক্ষমা ও শান্তি এবং ঈশ্বর ও মানুষের সম্পর্কের নবজীবন দেয়ার উৎসব।
রঙিন বাতি দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো, বিশেষ প্রার্থনা, শিশুদের মাঝে উপহার বিতরণ এবং স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ এ উৎসবের মূল অনুষঙ্গ। গির্জায় প্রার্থনা শুরু ও শেষের পর গাওয়া হয় বড়দিনের বিশেষ গান ও বন্দনা সংগীত।
আরও পড়ুন: বড়দিন, নতুন বছর উপলক্ষে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নেয়া হবে: ডিএমপি কমিশনার
এবার করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৃষ্ট নতুন বাস্তবতার মাঝে পালিত হচ্ছে বড়দিন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে আয়োজন করা হচ্ছে গির্জায় প্রার্থনা ও অন্যান্য অনুষ্ঠান।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি গির্জার প্রবেশ পথে হাত ধোয়ার সুযোগ, তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা, জীবাণুনাশের জন্য অটো স্প্রে মেশিন অথবা টানেল বসানোর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। সেই সাথে গির্জার ফাদার ও দায়িত্বরত ব্যক্তিদেরসহ সব দর্শনার্থীদের মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক থাকছে।
আরও পড়ুন: বড়দিনে ঘরেই বানান মজার ফ্রুটকেক
সবখানে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি অসুস্থ, বয়স্ক ও শিশুদের অনুষ্ঠানে আসতে নিরুৎসাহিত করেছে ডিএমপি।
ডিএমপি কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, বড়দিন উপলক্ষে গির্জায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি খ্রিষ্টান অধ্যুষিত এলাকা ও প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত নজরদারি ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে সুখী-সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা সারা বিশ্বে যিশু খ্রিষ্টের শুভ জন্মদিন উপলক্ষে বড়দিন যথাযথ মর্যাদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে উদযাপন করে থাকেন। যিশু খ্রিষ্ট ছিলেন সত্যান্বেষী, মানবজাতির মুক্তির দূত এবং আলোর দিশারি। স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি পৃথিবীকে শান্তির আবাসভূমিতে পরিণত করতে তিনি বহু ত্যাগের বিনিময়ে সৃষ্টিকর্তার মহিমা ও খ্রিষ্ট ধর্মের সুমহান বাণী প্রচার করেন। তিনি পথভ্রষ্ট মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের পথে আহ্বান জানান।
শুভ বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীসহ সবার জন্য অশেষ আনন্দ, কল্যাণ, সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন রাষ্ট্রপতি।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯ মহামারির মাঝে উদযাপিত হচ্ছে ত্যাগের মহিমাময় ঈদুল আজহা
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, বাংলাদেশ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার- এ মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে সবাই একসাথে উৎসব পালন করব।
‘আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। সবাই মিলে যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। তাই এ দেশ আমাদের সকলের। বাংলাদেশ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি,’ বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী জানান, পৃথিবীতে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজব্যবস্থা প্রবর্তনই ছিল যিশু খ্রিষ্টের অন্যতম ব্রত। বিপন্ন ও অনাহারক্লিষ্ট মানুষের জন্য মহামতি যিশু নিজেকে উৎসর্গ করেন। তার জীবনাচরণ ও দৃঢ় চারিত্রিক গুণাবলির জন্য মানব ইতিহাসে তিনি অমর হয়ে আছেন।
আরও পড়ুন: টোকিওতে ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপিত
বড়দিন উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার এবং অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও স্টেশন দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে।