রাজধানীর গুলশানে সাবেক ফুটবলার আব্দুস সালাম মুর্শেদীর সেই বাড়ির মূল লে আউট প্ল্যান (নকশা) সাত দিনের মধ্যে দাখিল করতে রাজউককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে কোর্টের কার্যক্রম ছাড়া এ মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো প্রকার প্রচার-প্রচারণা না চালাতে উভয়পক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এছাড়াও রুল শুনানির জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি দিন রেখেছেন আদালত।
আরও পড়ুন: খুলনা-৪ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী সালাম মুর্শেদী
আদালতে সালাম মুর্শেদীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। রাজউকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন মাসুদ। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
গত ৩০ অক্টোবর গণপূর্তের বাড়ি দখলে রাখায় সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন ব্যারিস্টার সুমন।
রিটে বলা হয়, রাজধানীর গুলশান-২’র ১০৪ নম্বর সড়কে সি ই এন (ডি)-২৭-এর ২৯ নম্বর বাড়িটি ১৯৮৬ সালের অতিরিক্ত গেজেটে ‘খ’ তালিকায় পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত।
আরও পড়ুন: সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা বাড়ির নথি ও তদন্ত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ
কিন্তু আব্দুস সালাম মুর্শেদী সেটি দখল করে বসবাস করছেন।
রিটে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি ও চলতি বছরের ৪ জুলাই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানকে দেয়া গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি চিঠি যুক্ত করা হয়।
২০১৫ ও ২০১৬ সালে দেয়া চিঠিতে পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে বাড়িটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও আব্দুস সালাম মুর্শেদী কীভাবে বাড়িটি দখল করে আছেন, রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে এ ব্যাখ্যা চেয়েছিল পূর্ত মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে চিঠি আমলে না নেয়ায় ফের ৪ জুলাই চিঠি দেয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে ভবনটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও কীভাবে রাজউক চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে সেটির নামজারি ও দলিল করার অনুমতি দেয়া হলো, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে ব্যাখ্যা দিতে অনীহা দেখিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সালাম মুর্শেদীর বাড়ি: দুটি ভিডিও সরাতে ব্যারিস্টার সুমনকে নির্দেশ
এ রিটের শুনানি নিয়ে গত ১ নভেম্বর সরকারের সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
এছাড়া এ সম্পত্তি সম্পর্কিত সব কাগজপত্র আদালতে দাখিল করতে রাজউক, গণপূর্ত বিভাগ ও সালাম মুর্শেদীকে নির্দেশ দেন আদালত।
ডিএজি আমিন উদ্দিন মানিক জানান, আব্দুস সালাম মুর্শেদীর পক্ষে তার আইনজীবী হলফনামা দাখিল করেছেন।
আর রাজউক, গণপূর্ত ও দুদকের পক্ষেও প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে।