রাজধানী
রাজধানীতে চাঞ্চল্যকর সুমন হত্যাকাণ্ডের হোতাসহ গ্রেপ্তার ২
রাজধানীর গুলশান-১ পুলিশ প্লাজার সামনে ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ী সুমনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যাকাণ্ডের হোতাসহ এই অপরাধে সরাসরি অংশগ্রহণকারী দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তাররা হলেন— মো. ওয়াসির মাহমুদ সাঈদ ওরফে বড় সাঈদ (৫৯) ও বেলাল (৪২)। এর মধ্যে বড় সাঈদকে পটুয়াখালীর চৌরাস্তা এলাকা থেকে এবং বেলালকে গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে গুলশান-বনানী এলাকায় ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ী সুমনকে প্রকাশ্যে গুলি করে পালিয়ে যায় অজ্ঞাতনামা অস্ত্রধারী কয়েকজন সন্ত্রাসী। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এই হত্যাকাণ্ডের পর গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা হয়।
আরও পড়ুন: অ্যাডভোকেট আলিফ হত্যাকাণ্ড: চট্টগ্রামের ৬৩ আইনজীবীর জামিন মঞ্জুর
মামলার পর হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামিদের ধরতে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে র্যাব-১, সিপিসি-১-এর একটি আভিযানিক দল। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল দুপুরে ঘটনার মাস্টারমাইন্ড বড় সাঈদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। সেইসঙ্গে রাত পৌনে ৯টার দিকে গ্রেপ্তার হন তাদের দলের অপর সদস্য বেলাল।
এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে র্যাব জানিয়েছে, বড় সাঈদের মাধ্যমে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে গত কয়েক বছর ধরে গুলশান-বাড্ডা এলাকায় চাঁদাবাজি করে আসছিলেন মেহেদী নামের এক ব্যক্তি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মেহেদী পালিয়ে যান। তবে পলাতক অবস্থায়ও বড় সাঈদের মাধ্যমে চাঁদা সংগ্রহ করতেন তিনি।
মেহেদী পালিয়ে গেলে অন্য একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের (রবিন গ্রুপ) হয়ে সুমন গুলশান-বাড্ডা এলাকায় চাঁদাবাজি শুরু করেন। গুলশান এলাকার বিভিন্ন মার্কেটের দোকানে চাঁদাবাজি নিয়ে মেহেদী গ্রুপের সঙ্গে সুমনের বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই বিরোধের কারণে গ্রুপের নেতা মেহেদীর নির্দেশে সাঈদ সুমনকে হত্যা করার পরিকল্পনা করা হয়।
ঘটনার ৮/১০ দিন আগে সুমনকে হত্যার উদ্দেশ্যে বেলাল ও মামুনের নেতৃত্বে মেহেদী গ্রুপের ৪/৫ জন সন্ত্রাসী দিয়ে একটি কিলার গ্রুপ গঠন করেন বড় সাঈদ। সে সময় থেকে সুমনের ওপর নজর রেখে আসছিল ওই গ্রুপটি।
ঘটনার দিন গুলশান এলাকায় গিয়ে সুমনকে গোপনে খুঁজতে থাকে তারা। এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে পুলিশ প্লাজার সামনে ডাক্তার ফজলে রাব্বি পার্কের সামনে বসা অবস্থায় দেখতে পেয়ে গুলি করে তারা। গুলি খেয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে সুমনকে প্রতিপক্ষ আরও কয়েকবার গুলি করে। এরপর তার মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায় তারা।
আরও পড়ুন: কেরানীগঞ্জের অস্থায়ী আদালতে হবে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার
এই ঘটনার পর গা ঢাকা দেন বড় সাঈদ। তবে গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুর আড়াইটার দিকে র্যাব-১ এর দলটি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঝালকাঠি সদর থানার বাসিন্দা সাঈদকে পটুয়াখালী চৌরাস্তা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন বেলাল।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে র্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।
২ দিন আগে
ঢাকার বিকল্প রাজধানী সম্ভব?
রাজধানীর পল্টন দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন জাহিদুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ী। হঠাৎ বাতাসে ধুলোবালি এসে নাকে-মুখে ঢুকে যায় তার। চারপাশে গাড়িগুলো পাল্লা দিয়ে হর্ন বাজিয়ে যাচ্ছে, দুই কান হাত দিয়ে চেপে ধরেও রেহাই পাচ্ছেন না।
তার ভাষ্যে, ‘মানুষ বাস করার মতো অবস্থায় নেই এই শহর। কেবল চাকরি করতে হবে বলে ঢাকায় আছি, নাহলে অনেক আগেই (এই শহর ছেড়ে) চলে যেতাম।’
‘সবকিছু ঢাকাকেন্দ্রিক হওয়ায় নাগরিকদের এই শহরে এসেই ভিড় করতে হচ্ছে। ইচ্ছা থাকলেও নিরাপদ জীবনের খোঁজে অন্যত্র যাওয়া সম্ভব নয়’, বুধবার (১৯ মার্চ) কথাগুলো বলছিলেন তিনি।
নগরীর গণপরিবহনগুলোতে বেশিরভাগ সময়ই যাত্রীদের দাঁড়ানোর মতো জায়গাও থাকে না। বাইরে বের হলে বাসের দরজায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের ঝুলে থাকার দৃশ্য চোখে পড়তে বাধ্য। বারিধারা
ডিওএইচএসে বসে এসব কথারই পুনরাবৃত্তি করছিলেন বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা মারুফুল হক। বলেন, ‘অফিসের সময় বাসে জায়গা পাওয়া যায় না; আবার অফিস কামাইও দেওয়া যাবে না। যে কারণে লোকজন ঠেলেঠুলে হলেও বাসে উঠতে হয়। অনেকসময় ভেতরে একদমই জায়গা থাকে না, সেক্ষেত্রে দেরিতে অফিসে প্রবেশ এড়াতে গেটে ঝুলে পড়া ছাড়া উপায় থাকে না।’
‘ঢাকার সড়কে যানজট, বাসে ভিড়; আবার ফুটপাত দিয়ে হেঁটে চলাচল করবেন, তারও জো নেই। একে তো অনেক ফুটপাত ভাঙাচোরা, কোথাও আবার ম্যানহোলের ঢাকানা নেই; তার ওপর আবার ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের কারণে হাঁটার জায়গাও নেই অনেক জায়গায়।’
মারুফুল বলেন, ‘অর্থাৎ চলাচলের সব বিকল্প বন্ধ। ফলে রাস্তায় বের হলেই দুর্ভোগ পোহাতে হবে—এ একপ্রকার নিশ্চিত।’
‘অথচ এই শহরেই আমাদের বাস করতে হচ্ছে। গাদাগাদি করে বাসে উঠি, যানজট ঠেলে কোনোরকমে অফিসে পৌঁছাই। ক্লান্তি নিয়ে সারা দিন কাজ করি।’
ঢাকার বিকল্প কোনো রাজধানীর দরকার আছে কি না—জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. এম শামসুল হক বলেন, ‘বিশ্বের চল্লিশটির মতো দেশ তাদের রাজধানী অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। কয়েকটি দেশ এ প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। সর্বশেষ ইন্দোনেশিয়া তাদের রাজধানী পরিবর্তন করে নুসানতারায় নিয়ে গেছে। মিসরও চলে যাচ্ছে।’
কাজেই বাংলাদেশের রাজধানীও অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া এমন একটি বাস্তবতা, যা নিয়ে সমীক্ষারও প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন তিনি।
শামসুল হক বলেন, ‘চিকিৎসক যেমন রোগীর রেকর্ড দেখলে বুঝতে পারেন, হার্টবিট ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে, তখন তো চিকিৎসকরা বলেন, এটা বেয়ন্ড রিপেয়ারড (মৃত্যু আসন্ন)। এরকম ঢাকার সবকিছুই এত তলানির দিকে চলে যাচ্ছে যে, এত এত বিনিয়োগ করার পরও অর্থাৎ এত চিকিৎসা করার পরও কোনো উন্নতি হচ্ছে না, একেবারে নন-রেসপন্সিভ।’
ভারত, পাকিস্তান, ব্রাজিল, নাইজেরিয়া, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মিসর ও দক্ষিণ কোরিয়াও তাদের রাজধানী পরিবর্তন করেছে কিংবা করছে। অতিরিক্ত জনসংখ্যা ও যানজটের কারণেই দেশগুলো তাদের রাজধানী পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানি ফুরিয়ে যাওয়া, পরিবেশগত উদ্বেগ, দূষণ, প্রাকৃতিক বিপর্যয়—এমন নানা কারণে বিভিন্ন দেশের রাজধানী সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আরও আধুনিক, স্মার্ট, পরিবেশগত টেকসই ও বিনিয়োগবান্ধব রাজধানী গড়ে তুলছে দেশগুলো।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাস আজ অস্বাস্থ্যকর
বিকল্প রাজধানী হতে পারত পূর্বাচল
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ঢাকারও বিকল্প বের করা একটি চরম বাস্তবতা বলে উল্লেখ করেছেন ড. এম শামসুল হক।
তার ভাষ্যে, ‘অনেকের কাছে শকিং (তাক লাগানো) মনে হতে পারে, অনেকের কাছে এমন কিছু আবেগেরও মনে হতে পারে; কিন্তু আবেগ দিয়ে তো আর দেশ চলে না। যদি আমরা অনেক আগেই (এ বিষয়ে) চিন্তা করতাম, তাহলে অনেক সম্ভাবনা ছিল। এমনকি কম খরচে পূর্বাচলে আমরা বিকল্প রাজধানী করে ফেলতে পারতাম।’
‘পূর্বাচলের জায়গাটা অনেক উঁচু, বন্যামুক্ত। কৌশলগতভাবে একটি রাজধানী শহর বন্যামুক্ত হওয়া উচিত। সেক্ষেত্রে পূর্বাচল উঁচু জায়গায়, মাটিও অরিজিনাল।’
ঢাকার অন্যান্য জায়গায় মাটি ভরাট করে সবকিছু করা হয়েছে। মাটি ভরাট করে অবকাঠামো নির্মাণ করা হলে যেকোনো ভবনের ভিত্তি ব্যয় অনেক বেড়ে যায় বলে উল্লেখ করেন এই নগর প্রকৌশলী।
দুর্বল মাটিতে বিনিয়োগও খুব একটা কার্যকর হয় না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগের একটি অংশ দুর্বল মাটির জন্য নষ্ট হয়ে যায়। ফলে রাজধানী এমন একটি জায়গায় হতে হয়, যেখানকার মাটি ভালো। সে অনুসারে পূর্বাচল ভালো অপশন ছিল।’
‘অথচ সেখানে সাত হাজার একরের একটি টাউনশিপ গড়ে তোলা হয়েছে। প্লট দিয়ে ব্যক্তিকে কোটিপতি বানানো হয়েছে। এত বড় অন্যায় একবিংশ শতাব্দীতে কেউ করবে না, যেটা সেখানে হয়েছে।’
‘যদি আবাসনের কথা বলি, তাহলে ফ্ল্যাট দেওয়া যায়; কিন্তু আমাদের মতো জনবহুল দেশে প্লট দেওয়া যায় না।’
রাজধানী হিসেবে ঢাকার কার্যকারিতা নেই উল্লেখ করে এই অধ্যাপক বলেন, ‘তবে এটি নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্য লাভেই হবে, কারণ তাতে মানুষের মধ্যে কোনো প্রশ্ন থাকলে তা দূর হয়ে যাবে, সিদ্ধান্ত নিতে সরকারের সুবিধা হবে।’
‘কিন্তু কেউ যদি এসব নিয়ে নাড়াচাড়াই না করেন, তাহলে একজন রোগী মারা যাচ্ছেন কিনা, পয়েন্ট অব নো রিটার্নের দিকে চলে যাচ্ছেন কিনা— তা কিন্তু বোঝা যাবে না। এতে আমরা একটি অদূরদর্শী জাতি হিসেবে পরিচিতি পাব।’
ইন্দোনেশিয়ার উদহারণ টেনে তিনি বলেন, ‘তারা জাকার্তা থেকে রাজধানী সরিয়ে নুসানতারায় নিয়ে গেছেন। এতে খরচ হয়েছে ৩৫ বিলিয়ন ডলার। গত অক্টোবরে তাদের কাজের প্রথম ধাপ শেষ হয়েছে। মিসরের রাজধানী কায়রো থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আমরা যে ছয়টি মেট্রো করতে যাচ্ছি, সেটারও ২০ থেকে ২৫ বিলিয়ন ডলার খরচ পড়বে।’
বিনিয়োগ ও পরিবেশবান্ধব, বাসযোগ্য, দূষণমুক্ত, গ্রিনসিটি হিসেবে ভাবলে ঢাকা কখনোই হবে না বলে জানান তিনি।
‘ঢাকায় যেভাবে ভূগর্ভস্থ পানি তোলা হচ্ছে, তাতে প্রতিনিয়ত আমাদের পানির স্তর নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে, ফলে পানি গভীর থেকে গভীরে নেমে যাচ্ছে।’
‘জাকার্তায়ও একই অবস্থা হয়েছিল। সেখানে অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে ভূগর্ভস্থ পানি বেশি তোলা হয়েছিল। একসময় দেখা গেল, পানি পাওয়া যাচ্ছে না। পানি না থাকলে বসতি হবে কীভাবে! ঢাকায়ও ভূগর্ভস্থ পানি দিন দিন তলানির দিকে চলে যাচ্ছে।’
শামসুল হক বলেন, ২০০৫ সালেও ঢাকা শহরে গাড়ির গতি ঘণ্টাপ্রতি ২৫ কিলোমিটার ছিল। এখন সেটা প্রতি ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটারে নেমে এসেছে। ঢাকা শহরের হার্টবিট কমে শূন্যের দিকে যাচ্ছে। আমরা ঢাকাকে বাঁচাতে অনেক কিছু করেছি, কিন্তু ধীরে ধীরে এই শহরের অধঃপতন হয়েই চলেছে।’
৪ দিন আগে
গুলশানে দুর্বৃত্তের গুলিতে যুবক নিহত
রাজধানীর গুলশান পুলিশ প্লাজার সামনে দুর্বৃত্তের গুলিতে সুমন নামে (৩৫) এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাত ৯টার দিকে গুলশান পুলিশ প্লাজার উত্তর পাশে সড়কে এই ঘটনা ঘটে।
মুমূর্ষু অবস্থায় গুলশান থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ১১টার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মারুফ আহমেদ ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করেন জানান, নিহত ব্যক্তি পুলিশ প্লাজার উত্তর পাশের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেখানে কয়েকজনের সাথে হঠাৎ ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
এসআই আরও জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। নিহত সুমনের বাবার নাম মাহফুজুর রহমান। তার মাথা এবং বুকের বাঁ পাশে গুলি করা হয়েছে।
হাসপাতালে নিহত সুমনের স্ত্রীর বড় ভাই বাদশা মিয়া রুবেল জানান, সুমনের বাড়ি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলায়। সুমন স্ত্রী ও এক ছেলে, এক মেয়েকে নিয়ে মিরপুর ভাষানটেক এলাকায় থাকতেন। মহাখালী টিভি গেট এলাকায় ‘প্রিয়জন’ নামে তার ইন্টারনেট ব্যবসা রয়েছে।আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে মাদক কারবারিদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবক নিহত
তিনি বলেন, টিভি গেট এলাকায় ‘একে-৪৭’ গ্রুপের রুবেল নামে এক ব্যক্তি ডিসের ব্যবসা করেন। তার সাথে সুমনের ব্যবসা নিয়ে দীর্ঘ দিনের বিরোধ আছে এবং তিনি মাঝে মাঝে সুমনকে হত্যার হুমকি দিত। ওই পক্ষের লোকই গুলি করেছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি'র অতিরিক্ত কমিশনার নজরুল ইসলাম জানান, নিহতের বিরুদ্ধে গুলশান, বনানীসহ কয়েকটি থানায় চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা করেছে, অন্তঃকোন্দল থেকেই এই হত্যাকাণ্ড। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেয়া হয়েছে। হামলাকারীদের এখনো চিহ্নিত করা যায়নি বলে জানান তিনি।
৭ দিন আগে
রাজধানীতে নারী সাংবাদিককে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’, গ্রেপ্তার ২
রাজধানীর পল্লবী এলাকায় এক নারী সাংবাদিককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে হওয়া মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
সোমবার (১৭ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাটি ঘটে বলে আজ (মঙ্গলবার) রাতে জানিয়েছেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
ইউএনবিকে তিনি বলেন, ভুক্তভোগী দাবি করা ওই নারী নিজেই বাদী হয়ে মামলা করেন। এরপর আজ সকাল ৮টার দিকে অভিযান চালিয়ে এনামুল হক (৩৮) ও মহিদুর রহমান (৫০) নামের দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার দুজনসহ আটজনের নামে এবং অজ্ঞাত আরও আটজনসহ মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ডিসি তালেবুর।
৯ দিন আগে
চালু হলো ‘হেল্প অ্যাপ’, অভিযোগ করলেই এফআইআর
রাজধানীর গণপরিবহনে নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে চালু হয়েছে হ্যারাসমেন্ট এলিমিনেশন লিটারেসি প্রোগ্রাম (হেল্প) অ্যাপ। এই অ্যাপের মাধ্যমে কোনো নারী অভিযোগ করলে তা এফআইআর হিসাবে গণ্য করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ডিএমপি শেখ সাজ্জাদ আলী।
ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) ও সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের যৌথভাবে চালু করা পরিষেবাটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ সাজ্জাদ আলী বলেন, হেল্প অ্যাপের মাধ্যমে কোনো নারী অভিযোগ করলে এক কিলোমিটারের মধ্যের থানায় তা এফআইআর হিসাবে লিপিবদ্ধ হবে। পরবর্তীতে এই অভিযোগকে ভিত্তি ধরেই মামলার প্রস্তুতি নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: এফআইআরে নাম থাকলেই গ্রেপ্তার নয়, পুলিশ আগে তদন্ত করবে: ডিএমপি কমিশনার
নারী নির্যাতনের মতো ঘটনায় অনেক সময় ভুক্তভোগী বা তার পরিবার থানায় যেতে চায় না। তারা নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে চায়। এই অ্যাপ চালু হওয়ায় কাউকে থানায় আসতে হবে না। অভিযোগ পর্যালোচনা করে পুলিশ নিজেই বাদি হিসেবে মামলা রুজু করতে পারবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।
পাইলট প্রকল্প হিসেবে শুরুতে এই সেবা ঢাকার বছিলা থেকে সায়েদাবাদ রুটে বাস্তবায়ন করা হবে। পরবর্তীতে এটিকে সব রুটে চালু করার ওপর জোর দিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এ ব্যাপারে পুলিশ সব ধরনের সাহায্য করবে। রাজধানী এখন অনেক বিস্তৃত। সবকটি রুট ধরে কাজ করতে পারলে নারীরা গণপরিবহনে আর অনিরাপদবোধ করবে না। আর এমন একটি অ্যাপ চালু হয়েছে, এ বিষয়টিও সবাইকে জানাতে হবে।’
অনুষ্ঠানে মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ধর্ষণ প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। বলেন, নারী নির্যাতনের যে-সব চিত্র সামনে আসে তার থেকেও বাস্তবতা অনেক বেশি ভয়াবহ। নির্যাতনরোধে সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: নারীদের জন্য মার্শাল আর্ট: ঢাকার কোথায় শিখবেন কুংফু, জুডো, বা কারাতে
১৩ দিন আগে
যানজটে আটকে রাজধানীবাসীর ইফতার
রাজধানীতে আসরের আজানের আগে থেকে সড়কে বাড়তে শুরু করে গাড়ির চাপ। বিকাল চারটা থেকে একের পর এক অফিস ছুটি হওয়ায় ইফতারের আগমুহূর্ত পর্যন্ত রাস্তায় গাড়ির চাপ থাকে অবর্ণনীয়।
রাজধানীর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে দেখা যায়, দুপুর ২টার পর রাস্তায় গাড়ির চাপ তুলণামূলক কম হলেও বেলা পড়তে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়তে শুরু করে। এতে করে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে প্রায় প্রতিটি রাস্তা থেকে শুরু করে অলিগলিতে সৃষ্টি হয় অসহনীয় যানজট।
ইফতারের আগমূহূর্তে এমন যানজট নিয়ে শান্তিনগর মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্য আবদুস সালাম বলেন, ‘আসরের পর থেকে একেবারে মাগরিবের আজানের আগ-পর্যন্ত রাস্তায় গাড়ির প্রচণ্ড চাপ থাকে। সবাই চায় নিজের বাসায় পরিবারের সঙ্গে ইফতার করতে। একই সময়ে সবাই বের হওয়ায় এমন ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়।’
আরও পড়ুন: বিনা লাভে ইফতার সামগ্রী বিক্রি করছেন চাঁদপুরের শাহ আলম
অন্যদিকে, একাধিক মোড়ের সড়ক বা যেসব সড়কে ফ্লাইওভার এসে মিশেছে কিংবা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নেমেছে, সেসব সড়কে যানজট তুলনামূলক বেশি থাকে বলে জানান তিনি।
নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে মোটরসাইকেল-চালক আলাউদ্দিন বলেন, ‘অন্য সময়ের তুলনায় এবার সড়কে যানজট অনেক বেশি। বিশেষ করে অটোরিকশার চাপে (সড়কে) নড়াচড়াই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে বাইকের জন্য রাস্তার বাম দিকে কিছুটা জায়গা ছেড়ে দেওয়া হলেও, এখন রিকশার চাপে এই লেনটাও বন্ধ হয়ে গেছে। বাইক নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে বসে থাকতে হয়।’
তবে যত্রতত্র বাস থামানো এবং সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াকেই যানজটের জন্য দায়ী করছেন রিকশাচালকরা।
মতিঝিল কর্মস্থল থেকে বাড্ডার বাসায় প্রতিদিন যাতায়াত করেন একটি প্রাইভেট ব্যাংকের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান। যানজটের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘চারটার সময় অফিস থেকে বের হয়ে বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে সন্ধ্যা ৬টা বেজে যায়। অনেক সময় বাসার গলিতে বা সিঁড়িতে পৌঁছাতেই আজান দিয়ে দেয়। সব মিলিয়ে ইফতারের আগে বাসায় পৌঁছানো বিরাট ঝক্কির ব্যাপার।’
শান্তিনগরের বাসিন্দা হানিফ বলেন, ‘পায়ে হেঁটে শান্তিনগর থেকে রমনা যেতে ১৫ মিনিট লাগে, কিন্তু ইফতারের আগে কেউ রিকশা করে যেতে চাইলে এক ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। সবাই ইফতারের আগে বাসায় ফিরতে চায়, সবারই ইচ্ছা পরিবারের সঙ্গে ইফতার করা। এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের এমন কোনো অভিনব ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত যাতে করে ইফতারের আগে এমন অসহনীয় যানজট এড়ানো যায়।’
আরও পড়ুন: প্রথম রোজা: রাজধানীর মোড়ে মোড়ে ইফতারের পসরা
তবে শুধুমাত্র ট্রাফিক পুলিশের ওপর দায়িত্ব ছেড়ে না দিয়ে নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্বশীল হওয়া এবং সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারের ওপর জোর দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এটি বাস্তবায়ন করা গেলে শুধু রমজানে নয়, যেকোনো সময়ে কোনো কারণে সড়কে চাপ সৃষ্টি হলে তা সামলানোর ব্যবস্থাও সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন তারা।
২৪ দিন আগে
প্রথম রোজা: রাজধানীর মোড়ে মোড়ে ইফতারের পসরা
রমজানের প্রথম দিন আবারও সেই চিরচেনা রূপে ফিরে এসেছে রাজধানী ঢাকা। মূল সড়ক থেকে কানাগলি প্রতিটি মোড়ে মোড়ে জমে উঠেছে হরেক রকম পসরা সাজিয়ে বসা ইফতারের বাজার।
না শীত না উষ্ণ; প্রথম রোজার শেষ বিকেলে ইফতার নিয়ে রাজধানীতে বেড়েছে অন্য রকমের কর্মচাঞ্চল্য। কেউ ভাজছেন পিঁয়াজু, কেউবা আবার সাজাচ্ছেন বেগুনি, আলুর চপ কিংবা ডিম চপ।
বড় হাঁড়িতে হালিম নাড়ছেন হোটেল কর্মচারীরা, তার পাশেই আবার ধনিয়া। পুদিনা, লেবু, শসা, কাঁচামরিচের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ক্ষুদ্র দোকানি। দোকান বড় হোক কিংবা ছোট ছোলা বুট আর মুড়ির উপস্থিতি যেন সর্বজনীন।
আরও পড়ুন: রোজার শুরুতেই খুলনার বাজারে আকাশছোঁয়া দাম
২৬ দিন আগে
রাজধানীর কাঁচাবাজারে বেগুনে আগুন, লেবু আকাশচুম্বী
রমজানের প্রথম দিনে রাজধানীতে বেড়েছে সবজির দাম। বিশেষ করে বেগুন, শসা এবং লেবুর দাম ঢাকার প্রতিটি বাজারে আকাশচুম্বী। রবিবার (২ মার্চ) রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, কদিন আগেও যেখানে বেগুনের কেজি ছিল ৬০-৮০ টাকা, আজ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০-১২০ টাকায়।
মালিবাগ কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা আবু সালাম বলেন, রোজার শুরুর কদিন সবজির দাম বেশি থাকলেও আগামীতে দাম কমে আসবে।
শুধু বেগুন না, কয়েকদিন আগেও ২০-৪০ টাকা হালিতে বিক্রি হওয়া লেবুর হালি জাতভেদে ছাড়িয়েছে ৮০-১২০ টাকা। বাজারে এলাচি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা হালিতে, কাগজি লেবু ৮০-৯০ টাকা এবং শরবতি লেবুর হালি ১০০-১২০ টাকা।
জাতভেদে বাজারে শসা বিক্রি হচ্ছে ৯০-১১০ টাকা কেজিতে। তবে টমেটোর দাম তুলনামূলক কম। প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা।
আরও পড়ুন: রোজার শুরুতেই খুলনার বাজারে আকাশছোঁয়া দাম
মালিবাগ বাজার করতে আসা ক্রেতা হাসিব বলেন, ‘ইফতারিতে মূলত যেসব সবজি আইটেম জনপ্রিয় সবকটির দাম বেড়েছে। এর বাইরে লাউ, শিম, ধুন্দল, পেঁপে, ফুলকপি এবং করলার দাম আগের মতোই আছে।
সবজির পাশাপাশি ফলের দামও আগের তুলনায় বাড়তি বাজারে। আমদানি বাড়ায় কেজিতে ১০০-৪০০ টাকা খেজুরের দাম কমলেও বেড়েছে অন্যান্য ফলের। বাজারে নতুন আসা তরমুজ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। মাল্টার কেজি দাঁড়িয়েছে ২৮০-৩০০ টাকা। আপেল বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকা কেজিতে।
এছাড়া পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে জাতভেদে ৬০-৮০ টাকা, বাঙ্গি পিস আকারভেদে ৫০-১০০ টাকা এবং ডাব প্রতি পিস ১২০-১৮০ টাকা।
আলু-পেঁয়াজের দাম আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। কেজিপ্রতি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা, পাল্লা হিসাবে দাম পড়ছে ২১০-২২০ টাকা। আলুর দাম কেজিতে বেড়েছে ১০-১৫ টাকা।
এছাড়া ডালের বাজারে বড় দানার মুসুরির ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা এবং ছোট দানা ১৪০ টাকা কেজিতে। অন্যদিকে দেশি ছোলা কেজিপ্রতি ১৩০-১৪০ টাকা এবং পাকিস্তানি ডাবলি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজিতে। বেসন প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা কেজিতে।
বাজারে এখনো কাটেনি সয়াবিন তেলের সংকট। বিক্রেতারা বলছেন, ‘তারা তেল সরবরাহকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। রমজানের শুরুর দিন থেকেই তেল সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার কথা থাকলেও সেটি হচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: প্রশান্তির বাজার: রমজানে ঝালকাঠিতে অভিনব উদ্যোগ
এর বাইরে মাংসের বাজারে মুরগির মাংসের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০-২০ টাকা। ২৮০ টাকার সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০-৩০০ টাকা কেজি, ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা এবং দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪৬০-৫০০ টাকা কেজিতে।
মুরগির মাংসের পাশাপাশি গরুর মাংসের দামও কেজিতে বেড়েছে ২০-৪০ টাকা পর্যন্ত। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এতদিন ৭৬০-৭৮০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করলেও রমজানের প্রথম দিন থেকে আবারও মাংসের দাম বেড়ে হয়েছে ৮০০ টাকা কেজি।
মাছের বাজারে চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে জাতভেদে ৮০০-১২০০ টাকা কেজিতে। রুই মাছের দাম বেড়ে হয়েছে ৩২০-৩৪০ টাকা। কাতল বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৩৮০ টাকা। এছাড়া পোয়া মাছ ৫০০-৬০০ টাকা, পাবদা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২৪০ টাকা, শিং ৪৫০-৫৫০ টাকা এবং রূপচাঁদা ১২০০-১৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যান্য বছরের মতো এবারও রমজানের শুরুতে বাজারমূল্য বেশি হলেও কয়েকদিন বাদে দাম স্বাভাবিকে নেমে আসবে বলে প্রত্যাশা করেন বিক্রেতারা। এদিকে ক্রেতারা জোর দিচ্ছেন বাজার মনিটরিংয়ের দিকে।
২৬ দিন আগে
রাজধানীর বস্তিগুলোতে নেশার ছোবল
রাজধানীর বস্তিবাসীদের মানবেতর জীবনের নানা দিক নিয়ে গল্প নতুন নয়। তবে সেখানকার মানুষ কতটা স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে, সেটা নিয়ে সব সময়ই নানা প্রশ্ন থেকে যায়। তবে সম্প্রতি সরেজমিনে ঢাকার বিভিন্ন বস্তি ঘুরে তাদের জীবন-চিত্র তুলে আনার চেষ্টা করে ইউএনবি।
তাদের নানা সংকটের মাঝেও সম্প্রতি আবির্ভাব হয়েছে নতুন এক সংকটের। মাদকের করাল গ্রাসে বুঁদ হয়ে যাচ্ছে ঢাকার বস্তিগুলো। কিশোর থেকে শুরু করে তরুণ, এমনকি মাঝবয়সী ব্যক্তিরাও নেশায় আসক্ত হয়ে সমাজ, সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছেন।
রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে কথা হয় সাদিয়া (ছদ্মনাম) নামের এক কিশোরীর সঙ্গে। সে জানায়, তার বাবা আগে কাজ করতেন, এখন সারা দিন নেশা করে পড়ে থাকেন। তাই বিভিন্ন বাসায় কাজ করে কোনোমতে সংসার চালাতে হচ্ছে তার ও তার মায়ের।
ছোট্ট ঘরে এক ছেলেকে নিয়ে থাকেন আতিয়া খাতুন। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী নাই। ছেলেটা আগে একটা দোকানে কাম করত, কিন্তু কয়দিন হয়, নেশার পাল্লায় পইড়া আর কামে যায় না।’
আরও পড়ুন: রাতে মাদক কারবারির স্ত্রীর ঘরে এএসআই, লাঠিপেটা
‘আমি আগে দুইটা বাসায় কাম করতাম, কিন্তু এহন ৬টা বাসায় কাম কইরাও সংসার চলে না। ছেলেটাকে নেশার টাকা না দিলে গায়ে হাত তোলে।’
সিফাত নামের ১৬ বছরের কিশোর একটি দোকানে কাজ করে। স্কুলেও ভর্তি হবে বলে জানায় সে।
সিফাত বলে, ‘আমাদের এখানে আমার অনেক বন্ধু আগে কাজ করত, কিন্তু এখন আর করে না; নেশা করে।’
কী নেশা করে—জানতে চাইলে সে বলে, ‘ইয়াবা, বিভিন্ন ট্যাবলেট, গাঁজা, আরও অনেক কিছু।’ কোত্থেকে আনে?—উত্তরে জানায়, ‘বার আছে, রাজাবাজার থেকে আনে। মা-বাবাও জানে না। তাদের থেকে টাকা নিয়ে নেশার জিনিস কেনে।’
বস্তির জীবন
কড়াইল বস্তিতে এক রুমের ভাড়া সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়ে থাকছেন অনেকে।
আসমা খাতুন (ছদ্মনাম) বলেন, ‘এদিকে কাজের খুব অভাব। মাসে ৪-৫ হাজার টাকা দিয়ে সারা দিন কাজ করতে বলেন মালিকরা। কিন্তু আমাদের বাসা ভাড়াই সাড়ে তিন-চার হাজার টাকা। কাজ না পেয়ে অনেক মহিলারা ভিক্ষা করে। অনেকে আবার অনৈতিক কাজের সঙ্গেও জড়িয়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই নেশা করে। যারা নেশা করে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থাও নেশার কারণে খারাপ হয়ে গেছে। আবার যারা কাজ পায় না, তাদের অবস্থাও খারাপ।’
মিরপুরের রূপনগরের দুয়ারীপাড়ার বস্তি ঘুরেও দেখা যায় প্রায় একই চিত্র।
সেখানে ছোট্ট ঘরে থাকা রুপা (১৪) বলে, ‘আমার মা, আমি, বাবা আর আমার ছোট বোন এখানে থাকি। বাবা আগে কাজ করত। এখন নেশা করে পড়ে থাকে। আমি আগে স্কুলে পড়তাম। বাবা কাজ বন্ধ করার পর আমিও মায়ের সঙ্গে বাসায় কাজ করি, না হলে সংসার চলে না।’
বাসিন্দাদের মতে, কয়েক হাজার মানুষ বাস করে এ বস্তিতে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কিশোর বলে, ‘আমিও মাঝে মাঝে বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে নেশা করতাম। পরে বাবা টের পেয়ে মারধর করে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছে, কিন্তু বন্ধুরা বেশিরভাগই নেশা করে।’
এদিকে মালিবাগ রেলগেটে ভাসমানভাবে যুগ যুগ ধরে বাস করছে কিছু মানুষ। তাদের মধ্যে জহুরুল হক থাকেন তার স্ত্রীকে নিয়ে। শীত, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পলিথিনে বানানো ঘরে থাকেন তারা।
যারা দুবেলা খেতে পান না, পাবলিক টয়লেটে প্রতিবার ৫-১০ টাকা করে দৈনিক অন্তত ২০-২৫ টাকাও দিতে হয়, যেটা সামান্য আয়ে তাদের জন্য বাড়তি খরচ। এটা বিনামূল্যে পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন তারা।
পড়াশোনাও করছে অনেকে
আরও পড়ুন: মরণঘাতী ড্রাগ ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ থেকে বাঁচতে করণীয়
নাসিমা নামের একজন বলেন, ‘আমার ছেলে মাদ্রাসায় পড়ে। আমার বোনের দুই ছেলে; একজন কলেজে, আরেকজন ইউনিভার্সিটিতে পড়ে।’
বনানী থানার পুলিশ পরিদর্শক রাসেল সরোয়ার বলেন, ‘কড়াইল বস্তির দুই অংশ মিলে প্রায় কয়েক লাখ মানুষ বাস করে। আমরা প্রতিদিন অভিযান চালাই এবং গড়ে ৫/৬ জনকে আটক করি। নেশায় আসক্ত অনেক ছেলে রয়েছে; এদের মধ্যে যুবক বেশি। আসলে জন্ম থেকেই এমন পরিবেশে বড় হয় তারা, তাই সহজে ভালো কিছু শেখে না।’
‘তবে এর মধ্যে অনেকে পড়াশোনা করে ভালো অবস্থানেও চলে যায়। মা-বাবা কাজ করে যা আয় করে, সেটা দিয়ে বস্তিতে থেকেও সন্তানদের পড়াচ্ছেন। এই সংখ্যাটা কম হলেও এটা অনেক পজিটিভ সাইড।’
নেশার পেছনে কারণ নিয়ে যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক বলেন, ‘প্রত্যেকটা ছেলেমেয়ের বেড়ে ওঠার জন্য পরিবারের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু নিম্নবিত্ত ও বস্তির দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করা মানুষগুলোর জীবন শুরুই হয় অভাব-অনটনের মধ্যে। ছেলেমেয়েকে সঠিক শিক্ষা দেওয়ার সুযোগ তারা পান না। সেক্ষেত্রে খুব কম সংখ্যক পরিবার হয়তো সন্তানকে পড়াশোনা করাতে পারেন। তবে বেশিরভাগই অভাবের তাড়নায় নানা অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত হয়ে যায়।’
ঢাকার বস্তিবাসী তরুণ ও যুবকদের মধ্যে মাদকের ক্রমবর্ধমান ছোবল কেবল ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সংকট নয়, বর্তমানে এটি সামাজিক জরুরি অবস্থায় পরিণত হয়েছে। আসক্তি যেহেতু শুধু আর্থিক ক্ষতিই করে না, বরং সামাজিক অবক্ষয়েও ইন্ধন জোগায়, তাই শিক্ষা, কাজের সুযোগ ও পুনর্বাসন কর্মসূচিসহ ব্যাপকভাবে বস্তিবাসীর জীবনের ওপর ইতিবাচক হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। জরুরি ভিত্তিতে এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে আসক্তি ও দারিদ্র্যের চক্রে পড়ে গোটা প্রজন্মের হতাশার ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
রাজধানীতে পাঁচ হাজারের বেশি বস্তি রয়েছে, যেখানে প্রায় ৪০ লাখ মানুষের বসবাস। এর মধ্যে সর্ববৃহৎ কড়াইল বস্তিই ৫০ হাজারের বেশি মানুষের আবাসস্থল।
আরও পড়ুন: বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে ‘স্বর্ণালংকার লুট’
তবে শুধু বাংলাদেশই নয়, সারা বিশ্বের শহুরে জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের বাস বস্তিতে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে ১১০ কোটি মানুষ শহরে বস্তি কিংবা বস্তির মতো পরিবেশে বসবাস করছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, আগামী ৩০ বছরে আরও ২০০ কোটি মানুষের ঠিকানা হবে বস্তি।
ক্রমবর্ধমান এই নগর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় টেকসই আবাসন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নগর পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।
৩২ দিন আগে
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিট
রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার তালতলা চৌরাস্তার পাশে গ্যারেজ পট্টিতে আগুন লেগেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সঙ্গে আরও পাঁচটি ইউনিট যোগ দিয়েছে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিসের প্রধান কার্যালয়ের মিডিয়া কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। পরে তাদের সঙ্গে আরও পাঁচটি ইউনিট যোগ দেয়। এছাড়া আরও তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, খিলগাঁও থানার পেছনই এই গ্যারেজ পট্টি। সেখানে পাশাপাশি অনেকগুলো গাড়ির গ্যারেজ রয়েছে।
তবে, প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও হতাহতের কোনো খবর জানাতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।
৩৪ দিন আগে