পৈতৃক সম্পত্তির ভাগ (উত্তরাধিকার) থেকে হিন্দু নারীদের বঞ্চিত করার প্রচলিত বিধানের ওপর অ্যামিকাস কিউরিদের বক্তব্য শুনবেন হাইকোর্ট। হাইকোর্ট যাদের বক্তব্য শুনতে চেয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন-অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সিনিয়র অ্যাডভোকেট প্রবীর নিয়োগী, সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. কমারুল হক সিদ্দিকী। এছাড়া সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সম্পত্তির বিষয়ে দেওয়ানী মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী তপন চক্রবর্তী ও বাংলাদেশ হিন্দু ল সংস্কার কমিটির জেনারেল সেক্রেটারি সাংবাদিক পুলক ঘটকের মতামত শুনবেন আদালত। এক রিট আবেদনের ওপর শুনানিকালে রবিবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে এই রিট আবেদনের ওপর মতামত তুলে ধরার জন্য সম্পূরক আবেদনকারী হিসেবে পাঁচটি মানবাধিকার সংগঠনকে পক্ষভুক্ত করা হয়েছে। সংগঠনগুলো হচ্ছে-বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), আইন ও শালিস কেন্দ্র (আসক), মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা পরিষদ ও নারীপক্ষ। এছাড়াও এই রিটের সঙ্গে সাংবিধানিক প্রশ্ন জড়িত থাকায় হাইকোর্ট এই রিট আবেদনের বিষয়ে শুনানির জন্য একটি বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের অনুরোধ জানিয়ে নথিগুলো প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়েছেন। বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের পর সেই বেঞ্চ অ্যামিকাস কিউরি এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বক্তব্য শুনবেন বলে জানিয়েছেন রিটের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার খায়রুল আলম চৌধুরী।
আরও পড়ুন: হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাতা বিতরণ করবে বিকাশ
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীদের পিতার সম্পত্তির ভাগ না পাওয়া আইনি বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রাজধানীর বনানীর বাসিন্দা মৃত অশোক দাস গুপ্তের কন্যা ব্যবসায়ী অনন্যা দাস গুপ্ত বাদী হয়ে রিটটি দায়ের করেন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পৈতৃক সম্পত্তির ভাগ কন্যাদেরকে না দেয়া কেন অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টসহ সংশ্লিষ্ট আট বিবাদীকে এক সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। রবিবার হাইকোর্ট এই রুল শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের পাশপাশি অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগসহ উপরোক্ত আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িকতা, সহিংসতার বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির