সকাল সোয়া ৮টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে আবদুল কাদেরের পুত্রবধূ জাহিদা ইসলাম জেমি নিশ্চিত করেছেন।
সম্প্রতি ক্যানসার ধরা পড়ার পর গত ২১ ডিসেম্বর অভিনেতা আবদুল কাদেরের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।
তার পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ২০ ডিসেম্বর চেন্নাইয়ের ভেলর শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে সরাসরি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় কাদেরকে। সেখানে করোনার পরীক্ষা করা হলে ২১ ডিসেম্বর তার ফলাফল পজিটিভ আসে।
আরও পড়ুন: অভিনেতা আবদুল কাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত
অসুস্থ বোধ করার পর গত ৮ ডিসেম্বর চেন্নাইয়ে নেয়া হয় আবদুল কাদেরকে। সেখানে পরীক্ষার পর তার শরীরে অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার শনাক্ত হয়, যা সংক্রমণের চতুর্থ স্তরে পৌঁছে গেছে বলে জানান চিকিৎসকরা।
তবে গুরুতর শারীরিক দুর্বলতার কারণে এই অভিনেতাকে কেমোথেরাপি দিতে পারেননি চেন্নাইয়ের চিকিত্সকরা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বিমানের সৌদিগামী সব ফ্লাইট বাতিল
আবদুল কাদেরের শারীরিক অবস্থার উন্নতির জন্য অপেক্ষায় ছিলেন তার পরিবারের সদস্যরা যাতে কেমোথেরাপির মাধ্যমে চিকিত্সা করা যায়। কিন্তু কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ায় কাদেরের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠে।
আরও পড়ুন: দেশের ৪.৫ কোটি মানুষের জন্য কোভিড টিকা মিলবে মে-জুনের মধ্যে
আবদুল কাদের অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে, ‘মাটির কোলে’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘শীর্ষবিন্দু’, ‘সবুজ সাথী’, ‘তিন টেক্কা’, ‘যুবরাজ’, ‘আগুন লাগা সন্ধ্যা’, ‘এই সেই কণ্ঠস্বর’, ‘আমার দেশের লাগি’, ‘সবুজ ছায়া’, ‘দীঘল গায়ের কন্যা’, ‘ভালমন্দ মানুষেরা’, ‘দূরের আকাশ’, ‘ফুটানী বাবুরা’, ‘এক জনমে’, ‘জল পড়ে পাতা নড়ে’, ‘ফাঁপড়’, ‘চারবিবি’, ‘সুন্দরপুর কতদূর’, ‘ভালোবাসার ডাক্তার’, ‘চোরাগলি’, ‘বয়রা পরিবার’ ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: করোনায় নিউইয়র্কে ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে চট্টগ্রামের বাবা-ছেলের মৃত্যু
কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘কোথাও কেউ নেই’ধারাবাহিক নাটকে ‘বদি’ চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান কাদের।
এছাড়া জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র নিয়মিত শিল্পী ছিলেন আবদুল কাদের।
উল্লেখ্য, ১৯৫১ সালে মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি থানার সোনারং গ্রামে আবদুল কাদেরের জন্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর শেষ করার পর তিনি সিঙ্গাইর কলেজ ও লৌহজং কলেজে অধ্যাপনায় নিযুক্ত হন। পরে জুতা তৈরিকারক প্রতিষ্ঠান বাটায় যোগ দেন ১৯৭৯ সালে।
আবদুল কাদেরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
এক শোক বার্তায় বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান রাষ্ট্রপতি।
এর আগে আবদুল কাদেরের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক শোক বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, সাবলীল ও স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয়ের মধ্য দিয়ে আবদুল কাদের মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।