বর্তমান সময়ের সব থেকে সাড়া জাগানো ‘টুয়েলভথ ফেইল’ চলচ্চিত্রে মুগ্ধ দর্শকরা খুঁজে পাচ্ছেন থ্রি ইডিয়টের আমেজ। আর তা হবেই বা না কেন! প্রকৌশলী শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে নির্মিত ছবিটির প্রযোজক হিসেবে থাকায় নির্মাতা বিধু বিনোদ চোপড়া খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন রাজকুমার হিরানীর কাজ।
তাই ভিন্ন পটভূমি নিয়ে কাজ করলেও তার পরতে পরতে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই যুক্ত হয়েছে উদ্দিষ্ট দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া উপাদানগুলো।
উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন ক্যারিয়ারের প্রত্যাশায় যোগ্যতা নিরূপণের পরীক্ষাগুলোর শিক্ষার্থীরা খুঁজে পাচ্ছেন নিজেদের জীবনের প্রতিচ্ছবি। কিন্তু ভাবাবেগগুলোর পরিধি শুধুমাত্র এই জনগোষ্ঠীতেই সীমাবদ্ধ নয়। পাহাড়সম বাধা থাকলেও যারা নিজেদের লক্ষ্যে অবিচল থাকে এমন প্রতিটি প্রাণের জন্য টুয়েলভথ ফেইল একটি অনুপ্রেরণা।
চলুন, জেনে নেই টুয়েলভথ ফেইলের মতো আরও ১০টি সিনেমার কথা, যেগুলো দেখিয়েছে শত কষ্টের মাঝেও বাধা ডিঙিয়ে স্বপ্নের পথে হাটার গল্প।
যে ১০টি চলচ্চিত্র টুয়েলভথ ফেইলের মতো লক্ষ্যে অবিচল থাকার প্রেরণা জোগাবে
কোডা/ইংরেজি/১৩ আগস্ট, ২০২১
বধির অভিভাবক বা বাবা-মায়ের সন্তানকে সিওডিএ বা কোডা বলা হয়ে থাকে। এমনই এক পরিবারের কাহিনী নিয়ে এই টিনেজ মুভিটি বানিয়েছেন সিয়ান হেডার। এটি মূলত ২০১৪ সালের ফরাসি-বেলজিয়ান ফিল্ম ‘লা ফ্যামিলে বেলিয়া’র ইংরেজি ভাষার রিমেক। অস্কার জয়ী কমেডি ড্রামাটিতে রুবি রসি চরিত্রে অসামান্য অবদান রাখার মধ্যে দিয়ে লাইমলাইটে আসেন অভিনেত্রী এমিলিয়া জোন্স।
আরও পড়ুন: একইদিনে বাংলাদেশের হলেও ‘ডাঙ্কি’?
চলচ্চিত্রে বাবা-মা ও দুই ভাইবোনের পরিবারে রুবি একমাত্র শ্রবণশক্তি সম্পন্ন সদস্য। পুরো পরিবারটি টিকে আছে মাছ ধরার ব্যবসার উপর। বাকি সবাই বধির হওয়াতে এক্ষেত্রে রুবিকেই সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হয়। আর এরই মধ্য দিয়ে সে এগোতে থাকে তার বহু দিনের লালিত গায়িকা হওয়ার স্বপ্নকে সত্য করার পথে।
দাসভি/হিন্দি/৭ এপ্রিল, ২০২২
জেলবন্দি রাজনীতিবিদ গঙ্গারাম চৌধুরীকে মূর্খ বলে হেয় করেন ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার জ্যোতি দেশাল। সকল দুর্নীতির ঊর্ধ্বে হওয়া জামিনের কোনো ব্যবস্থা করতে না পারলেও অহংকারী মন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষিত হয়ে দেখিয়ে দেবেন। অন্যদিকে, এই সুযোগে তার স্ত্রী চক্রান্ত করছে সরকার প্রধান হওয়ার।
এমনই মজার গল্প নিয়ে দাসভি সিনেমার মাধ্যমে পরিচালনা জগতে প্রবেশ করলেন তুষার জালোটা। এখানে সেই অশিক্ষিত রাজনীতিবিদের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অভিষেক বচ্চন। আর তারই হাই স্কুল ডিপ্লোমা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার যাত্রা নিয়ে নির্মিত এই সামাজিক কমেডি ছবিটি। কঠোর পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় ছিলেন ইয়ামি। পুলিশ ও বন্দির সম্পর্কটা তিতো দিয়ে শুরু হলেও ক্রমেই তা পরিণত হয় পারস্পরিক শ্রদ্ধায়।
দ্য সুইমার্স/ইংরেজি/১১ নভেম্বর, ২০২২
এটি একটি জীবন-নির্ভর স্পোর্টস ড্রামা যার পরিচালনা করার পাশাপাশি জ্যাক থর্নের সঙ্গে যুগ্মভাবে চিত্রনাট্য লিখেছেন স্যালি এল হোসাইনি। চলচ্চিত্রটির গল্প সাঁতারু হতে চাওয়া দুই টিনেজ বোনকে নিয়ে, যাদের একমাত্র গন্তব্য ২০১৬-এর রিও অলিম্পিক। কিন্তু সিরিয়ার যুদ্ধ-বিধ্বস্ত প্রেক্ষাপট তাদের এই যাত্রাকে পরিণত করে দুঃস্বপ্নে। যন্ত্রণাদায়ক পথে উদ্বাস্তুতে পরিণত হওয়া দুই বোনের একমাত্র অবলম্বন হৃদয় ভরা আশা আর সাঁতারের দক্ষতা।
চলচ্চিত্রের প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করা ন্যাথালি ইসা এবং মানাল ইসা বাস্তব জীবনেই দুই বোন। বিভিন্ন চড়াই উৎড়াইয়ের ঘটনার মাঝে তাদের পরিচয় হয় এক সুইমিং কোচ স্ভেনের সঙ্গে, যে চরিত্রে ছিলেন ম্যাথিয়াস শোয়েগফার।
মুল কাহিনী সুইমিং কেন্দ্রিক হলেও এখানে দৃশ্যায়িত হয়েছে কি করে হাজারও স্বপ্নবাজ মানুষ উন্নত জীবনের খোঁজে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে কষ্টকর জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হয়।
আরও পড়ুন: 'প্যারাসাইট' অভিনেতা লি সান-কিউন মারা গেছেন
দ্য ফেবলম্যানস/ইংরেজি/১১ নভেম্বর, ২০২২
যারা চলচ্চিত্র নির্মাণে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাদের কাছে স্টিভেন স্পিলবার্গ সবচেয়ে অনুসরণীয় একজন ব্যক্তিত্ব। পুরোপুরি না হলেও দ্যা ফেবলম্যান্স স্পিলবার্গের আধা-আত্মজীবনীমূলক সিনেমা বলা যেতে পারে, যা নির্মিত হয়েছে তার কৈশোরের বছরগুলোর আলোকে।
টিনেজ ড্রামাটি পরিচালনার পাশাপাশি টনি কুশনারের সঙ্গে রচনা ও প্রযোজনা করেছেন স্পিলবার্গ। চলচ্চিত্রটি একটি আধা-আত্মজীবনীমূলক গল্প যা স্পিলবার্গের কৈশোর এবং একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে প্রথম বছরগুলির উপর ভিত্তি করে।
মুভিতে নাম চরিত্র স্যামি ফেবেলম্যান একজন প্রতিশ্রুতিশীল চলচ্চিত্র নির্মাতা। আর এই দক্ষতা তাকে তার পরিবার ও চারপাশের মানুষদের সম্পর্কে রহস্য উদঘাটনে সাহায্য করে।
বায়োপিকটিতে স্যামির চরিত্রে অভিনয় করেছেন গ্যাব্রিয়েল লাবেল। সহশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন মিশেল উইলিয়ামস, পল ড্যানো, স্যাথ রোজেন এবং জুড হির্শ।
ডেভোশন/ ইংরেজি/২৩ নভেম্বর, ২০২২
এই জীবনীমূলক যুদ্ধের চলচ্চিত্রটি তৈরি হয়েছে যা অ্যাডাম মাকোসের ২০১৫ সালের বই ‘ডেভোশন: অ্যান এপিক স্টোরি অব হিরোইজম, ফ্রেন্ডশিপ এবং স্যাক্রিফাইস’-এর উপর ভিত্তি করে। প্রেক্ষাপটটি ছিল কোরিয়ান যুদ্ধের সময়কাল। জেসি ব্রাউন এবং টম হাডনার ফাইটার পাইলট মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে মিশনে সফল হওয়ায় মার্কিন বিমান বাহিনীর বিখ্যাত উইংম্যান হয়ে ওঠেন। জেসি ব্রাউন ছিলেন প্রথম নিগ্রো বিমানচালক যিনি মার্কিন বিমান বাহিনীর উইঙ্স অফ গোল্ড খেতাব পেয়েছিলেন।
অ্যাকশন ছবিটি পরিচালনা করেছেন জে.ডি. ডিলার্ড এবং লিখেছেন জ্যাক ক্রেন ও জনাথান স্টুয়ার্ট। মুভিতে ব্রাউন চরিত্রে ছিলেন জনাথান মেজর্স এবং হাডনার চরিত্রে গ্লেন পাওয়েল।
চলচ্চিত্রটিতে ব্রাউনের অর্জনের পাশাপাশি গুরুত্ব পেয়েছে তার ও হাডনারের মাঝে বন্ধুত্ব এবং একই সঙ্গে ক্যারিয়ারের ব্যাপারে তাদের বস্তুনিষ্ঠ মতাদর্শগুলো।