যথাযথ দাম না পাওয়ার শঙ্কায় এসব কাঁকড়া স্থানীয় বাজারে তুলছেন না তারা। শিগগিরই কাঁকড়া রপ্তানি শুরু হবে বলে আশা ব্যবসায়ীদের।
খুলনার পাইকগাছার কাঁকড়া ব্যবসায়ী সালাহ উদ্দিন লিটন বলেন, কাঁকড়া ব্যবসায়ীদের অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার ঢাকায় একটি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাঁকড়া রপ্তানি শুরুর প্রস্তুতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।
তিনি বলেন, কাঁকড়া রপ্তানি না হওয়ার কারণে স্থানীয় বাজারেও চাষিরা কাঁকড়া তুলছেন না। ফলে কাঁকড়ার কেনাবেচা একদমই বন্ধ রয়েছে। তবে, চাষিরা কম দামে কাঁকড়ার পোনা সংগ্রহ করে ঘেরে উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছেন। রপ্তানি শুরুর আশায় ঈদের আগে থেকেই উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
রপ্তানি বন্ধের আগে বিভিন্ন গ্রেডের কাঁকড়া ৩০০ থেকে শুরু করে হাজার টাকা দরেও বিক্রি হয়েছিল। তবে, এখন বাজারে কোনো ধরনের কাঁকড়াই উঠছে না, যোগ করেন তিনি।
পাইকগাছার উত্তম কুমার সরকার বলেন, চীন নির্ভর কাঁকড়া ব্যবসা বন্ধ থাকার কারণে খুলনা তথা সুন্দরবন অঞ্চলের কাঁকড়া ব্যবসায়ীরা সংকটের মধ্যে দিন পার করছেন। এ পরিস্থিতি দীর্ঘ হওয়ার কারণে স্থানীয় বাজারেও কাঁকড়া তুলছেন না ব্যবসায়ীরা। তবে, রপ্তানি আগামী মাস থেকে শুরু হতে পারে এমন আশা করে উৎপাদনে জোর দিয়েছেন চাষিরা।
পাইকগাছা কাঁকড়া ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎ কুমার ঘোষ জানান, রপ্তানি বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদের বকেয়া অর্থও না পাওয়ায় সংকট ঘণীভূত হয়েছে। ঢাকার ব্যবসায়ীরা বকেয়া পরিশোধ করলেও স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কাঁকড়া চাষিরা নগদ কিছু টাকা পেত।
তবে রপ্তানি শুরু হলেই চাষি ও ব্যবসায়ীরা চাঙা হয়ে উঠবেন বলে আশা করেন তিনি।
খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু সাঈদ জানান, খুলনার ২৮ হাজার ৫৪৬ হেক্টর জমিতে কাঁকড়া চাষ হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ অঞ্চলে ৬ হাজার ৯৮৯ মেট্রিক টন কাঁকড়া উৎপাদন হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছর ৭ হাজার মেট্রিক টন কাঁকড়া উৎপাদনের লক্ষ্য থাকলেও করোনাভাইরাসের কারণে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাঁকড়া চাষ সংকটে পড়ে।
তিনি বলেন, চীন, তাইওয়ান, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি ও অস্ট্রেলিয়ায় কাঁকড়ার বাজার রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় নরম খোসার কাঁকড়া আর অন্য দেশগুলোতে স্বাভাবিক কাঁকড়া রপ্তানি হয়। বিশ্ব পরিস্থিতির পরিবর্তিত অবস্থায় কাঁকড়া রপ্তানি শিগগিরই শুরু হবে এমন প্রত্যাশায় চাষিরা উৎপাদন জোরদার করেছেন।