হুসাইন মালিক
ইজারা নেয়ার দাবি করে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার করতোয়া নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। আর এই অভিযোগের আঙ্গুল উপজেলার বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (প্যানেল চেয়ারম্যান) রবিউল ইসলাম ও তার অনুসারীদের দিকে।
এদিকে, করতোয়া নদীটি দীর্ঘদিন অবহেলায় বিলীন হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছিল। পরে সরকার নদীটি খনন করে জনসাধারণ জন্য আবারও উন্মুক্ত করে দেয়। কিন্তু খনন কাজ শেষ হতে না হতেই করতোয়া নদীর দিকে নজর পড়েছে দখলদারদের। এই নদীতে এলাকার মানুষ গোসল, মাছ ধরা থেকে শুরু করে নানা কাজে ব্যবহার করেন। সেই নদীতে হঠাৎ করে বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (প্যানেল চেয়ারম্যান) রবিউল ইসলাম ও স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের বেশ কিছু প্রভাবশালী বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন: প্রাণহীন জামালপুর পাবলিক লাইব্রেরি!
সংশ্লিষ্টরা জানান, জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নের পাথিলা গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে করতোয়া নদী। স্থানীয়রা বলছেন, বছরের পর বছর এই নদীর সরকারি জায়গার কিছু অংশ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল। আর কিছু অংশ রবিউল মেম্বার ও তার অনুসারীরা ইজারা নেয়ার দাবি করে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে আসছেন। সরকারিভাবে নতুন করে খনন করা করতোয়া নদী আবারও বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন তারা। এ মাছ চাষের কারণে কাউকে সেখানে যেতে দেয়া হচ্ছে না।
ওই ইউনিয়নের পাথিলা গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, তাদের গ্রামের পাশ দিয়ে করতোয়া নদী বয়ে গেছে। নদীটি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে আবার ভারতে চলে গেছে। কিন্তু গঙ্গাদাশপুর গ্রামের আমিনুর রহমানের বাড়ির নিচ থেকে পাথিলা গ্রামের ব্রিজ পর্যন্ত বাঁধ দেয়া হয়েছে। বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পাথিলা গ্রামের রবিউল ইসলামসহ তার অনুসারীরা বাঁধটি দিয়েছেন। এক মাস হলো তারা হঠাৎ করে করতোয়া নদীতে আনুমানিক ১২ একর জলাকার এই বাঁধ দিয়ে আটকে ফেলে জলাশয়ে তারা মাছ ছেড়েছেন। পাথিলা গ্রামের মানুষ এই নদী নানা প্রয়োজনে ব্যবহার করেন। তাই দখলকারীকে বাঁধ না দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন তারা। কিন্তু তাতে কোন লাভ হয়নি।
আরও পড়ুন: হারিয়ে যাচ্ছে মুরাদনগরের ‘মৃৎশিল্প’
গ্রামবাসীর অভিযোগ, রবিউল ইসলাম স্থানীয় ইউপি সদস্য হওয়ায় কারও কোনো কিছুই মানতে চান না তিনি।
তাই বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় জনসাধারণসহ সুধী মহল।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রবিউল ইসলামের বলেন, ‘এই নদীটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছ থেকে বদ্ধ জলাশয় হিসেবে ১৯৯০ সালে গণস্বাস্থ্য এনজিওর মাধ্যমে বরাদ্দ নেয়া হয়। পরবর্তীতে আমরা যুব সমবায়ের মাধ্যমে এ মাছ চাষ করে থাকি। এটা আমরা ইজারার মাধ্যমে করতেছি। প্রতি বছর আমরা খাজনা দিয়ে আসছি, এবছরও খাজনা দেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ‘ফাতেমা’ জাতের ধানে বিঘায় ৫০ মণ ফলন
বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের জানান, তিনি ঘটনাটি জানেন না এবং এ ধরনের কোনো নদী ইজারা দেয়া হয়েছে কিনা, সেটাও তিনি জানেন না। তবে রবিউল
ইসলাম মেম্বার দীর্ঘদিন এ নদীতে মাছ চাষ করছেন বলে জানান তিনি।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তিনি অবগত নন। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন।