করোনাভাইরাস আতঙ্কে পঞ্চগড়ের হাসপাতালগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের ঠিক উল্টো চিত্র দেখা গেছে। গত কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে বদলে গেছে হাসপাতালগুলোর চিরচেনা চিত্র।
পঞ্চগড়ে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত সন্দেহে এক রোগীর আইসোলেশনে থাকার খবর ছড়িয়ে পরার পর থেকে স্থানীয় হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগ ও আন্তবিভাগ কোনোটিতেই এখন আর রোগীর ভিড় নেই। করোনা মহামারির ভয় ও আতঙ্কে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালগুলোতেও চিকিৎসা নিতে আসা থেকে বিরত থাকছেন রোগীরা।
করোনা সন্দেহে হাসপাতালে এক যুবককে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করার পর থেকেই রোগী আসা কমতে শুরু করে। বহির্বিভাগ ও আন্তবিভাগ কোনোখানেই কোন রোগী দেখা যায়নি। শয্যাগুলো শূন্য পড়ে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইউএনবির এই প্রতিনিধি পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখেন, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র ৮ জন রোগী বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ফলে, প্রায় রোগী শূন্য হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। এ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে কর্মরতরাই কেবল পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) পোশাক পরেছেন। বাকিরা রয়েছেন সাধারণ পোশাকেই। তবে শঙ্কা কাজ করছে রোগী, নার্স ও চিকিৎসক সবার মনেই। অথচ অন্য সময়ে ১০০ শয্যার হাসপাতালটি প্রতিদিন দুই থেকে আড়াইশ রোগীতে ঠাসাঠাসি থাকতো। বহির্বিভাগে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াইশ’ রোগীকে সেবা দিতে হতো এখানে কর্মরতদের।
হাসপাতালে ভর্তি এক রোগী জানান, তারাও করোনা আতঙ্কে রয়েছেন। এক প্রকার নিরুপায় হয়েই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে, হাসপাতালে চিকিৎসকরা আন্তরিকভাবেই চিকিৎসা দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সিরাজউদ্দৌলা পলিন জানান, পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনা সন্দেহে একজন রোগী ভর্তি করার পর থেকেই রোগীর সংখ্যা কমে গেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসছেন না। সর্দি, জ¦র ও কাশি হওয়া রোগীদের হাসপাতালের বাইরে বসেই চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিচ্ছেন। অনেকেই বাড়িতে বসে মোবাইল ফোনে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিচ্ছেন।
এদিকে, করোনা সন্দেহে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া ওই যুবকের করোনাভাইরাসের পরীক্ষার রেজাল্ট নেগেটিভ এসেছে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রতিনিধিরা নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করে এ ফল পেয়েছেন। রিপোর্ট পাওয়ার পর যুবককে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়া হয়েছে।