এ প্রকল্পের আওতায় কোনো ধরনের ঝক্কি-ঝামেলা ছাড়াই গ্রামের লোকেরা যাতে সরকারি সেবা দ্রুত পেতে পারে সেজন্য ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে দপ্তর স্থাপন করবে এলজিডি।
ইউএনবির সাথে এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানান স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
মন্ত্রী বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিডি) শিগগিরই এ পরিকল্পন বস্তবায়নের পদক্ষেপ নিবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়ে গেলে কোন গ্রামের লোকসংখ্যা কত, ভোটার, গরীব ও এতিম, গৃহহীন, পাকা কাঁচা রাস্তা, ব্রীজ এবং শিক্ষার হার কত তা এখান থেকে জানা যাবে।
এসব তথ্য যাতে সরাসরি সহজে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে পাওয়া যায় সেজন্য প্রতিটি দপ্তরে একজন করে সিটিজেন চার্টার থাকবে বলেও জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ই-সেবা, ফটোকপি, স্বাস্থ্য সেবা, বিদ্যুৎ বিল, ভিসা সেবা, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো, বাস, রেল, বিমানের টিকেট বিক্রিসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদানের মাধ্যমে অর্জিত আয় দিয়ে ওয়ার্ড দপ্তরগুলো চলবে।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা ভিত্তিক মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে জাতীয় ভৌত উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রনয়ন ও অনুমোদনের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। এবছরের মধ্যেই উপজেলা উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রনয়ন ও অনুমোদনের মাদ্যমে শহরের সুবিধাগুলো সকল উপজেলার প্রতিটি গ্রামে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য রয়েছে।
পৌরসভাগুলোর বিষয়ে বলতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, সারাদেশের পৌরসভাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, সরকারি অর্থের সাশ্রয়, জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোর জন্য একটি ডাটাবেজ তৈরি করা হচ্ছে।
রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ঢাকার জলাবদ্ধতা সমস্যার দূরীকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ওয়াসাকে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু এবং মশাবাহিত সকল ধরনের রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাকে তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, এলজিইডির যাবতীয় কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে। এর ফলে, প্রকল্প বাস্তবায়ন, পরিদর্শন ও মনিটরিং কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আসবে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা মহানগরীতে জনদূর্ভোগ নিরসনে রাস্তা খননের বিষয়ে সিটি করপোরেশন এবং ওয়াসার সমন্বয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।
নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে বলতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, কঠিন ও পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ইতোমধ্যে সিটি ওয়াইড ইনক্লোসিভ স্যানিটেশন (সিডাব্লিউআইএস) এবং ফিক্যাল স্রুইজ ম্যানেজমেন্ট (এফএসএম) সাপোর্ট সেল স্থাপন করা হয়েছে। এ সেলের মাধ্যমে দেশের জেলা, উপজেলা এবং পৌরসভাসমূহে কঠিন ও পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার কারিগরি সহায়তা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
সেইসাথে, সেপটিক ট্যাঙ্কের পয়ঃবর্জ্য নিরাপদে পরিষ্কার করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েল প্রস্তুত এবং সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, আইটিএন-বুয়েট ও ডিপিএইচই এর যৌথ সহযোগিতায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, লবণাক্ততার প্রভাব মোকাবিলায় ও দেশের উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানি সরবরাহের লক্ষ্যে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের আধার বিতরণের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
ভূ-ভাগের পানির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ক্লাস্টারের মাধ্যমে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় পানি সরবরাহের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার প্রতিটি গ্রামে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহের কার্যক্রম শুরু করেছে। পাশাপাশি আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণে জন্য পর্যায়ক্রমে স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।