ইউটিউব দেখে চিয়া সিড চাষে উদ্বুদ্ধ হন চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার কালুপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল জাব্বার। এরপর কৃষি বিভাগের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ৩ বিঘা জমিতে চিয়ার আবাদ করেন তিনি।
শুরুতে মনে কিছুটা সংশয় থাকলেও এখন জমিতে ফসল দেখে তার চোখে-মুখে আশার ঝিলিক দেখা দিয়েছে। আর ক’দিন পরেই ঘরে তুলবেন ফসল এবং লোকসান নয়, বরং লাভের আশা করছেন তিনি।
জেলার সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের ঠাকুরপালশা এলাকায় দেখা যায় চিয়া সিডের খেত। সেখানে কথা হয় চাষি আব্দুল জাব্বারের সঙ্গে।
তিনি বলেন, প্রথমে আমি ইউটিউব থেকে চিয়া সিডের চাষ সম্পর্কে জানতে পারি। এরপর উপজেলা কৃষি অফিসের একটি প্রশিক্ষণে বলা হয় চিয়ার চাষ সম্পর্কে। কৃষি কর্মকর্তা বলেন যে আপনি যদি চিয়া সিডের চাষ করেন তাহলে আপনাকে সহায়তা করা যাবে।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে চিয়া সিড
আব্দুল জাব্বার বলেন, ‘আমি ৩ বিঘা জমিতে চিয়া সিডের চাষ করেছি। কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ, সার ও পরামর্শ যা লাগে তা দিয়েছে। ৭৫০ গ্রাম বীজ, ইউরিয়া ১০০ কেজি, ডিএপি ১৫০ কেজি, এমওপি ১০০ কেজি আর ভার্মিকম্পোস্ট ৩০০ কেজি পেয়েছি। পরে ১০০ কেজির মতো ইউরিয়া ও ভার্মিকম্পোস্ট নিজে কিনে জমিতে দিয়েছি আর দুই বার সেচ দিয়েছি।’
তিনি বলেন, বর্তমানে ফসলের চেহারা বেশ ভালো আছে। ফুল থেকে ফল পাকতে শরু করেছে। অল্প ক’দিন পরে ফসল কাটা শুরু করব। বিঘায় প্রণোদনা বাদে খরচ ২ হাজার টাকার মতো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কৃষি কর্মকর্তরা বলেন যে এক বিঘায় ২ থেকে আড়াই মণ অর্থাৎ ৮০ থেকে ১০০ কেজি ফলন পাওয়া যায়। তবে আমার জমিতে যদি বিঘায় ৬০ থেকে ৭০ কেজিও ফলন হয় তাতেও আমার লাভ হবে। কারণ, বাজারে এই ফসল ৫০০-৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারব।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে চাষ হচ্ছে ওষুধি ও পুষ্টিগুণের বিদেশি ফসল চিয়া সিড
জাব্বার জানান, এ ফসলের সব থেকে ভালো দিক হচ্ছে এর কোনো রোগ-বালাই নেই। পোকা বা রোগ-বালাই দমনে কোনো ধরনের স্প্রে করতে হয়নি।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি সম্ভাবনাময় একটি ফসল। প্রথম দিকে কিছুটা সংশয় থাকলেও এখন বলব এ বছর নতুন হিসেবে খারাপ হবে না। আগামীতে আরও ভালো করব আশা করছি।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে কৃষকদের চিয়া সিড চাষে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষে এবার কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় প্রথমবারের মতো জেলার ৮৫ জন কৃষককে বিনামূল্যে বীজ, রাসায়নিক সার, জৈব সার ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পরীক্ষামূলকভাবে জেলার ৫ উপজেলায় মোট ৭ হেক্টর জমিতে চিয়া সিডের চাষ হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাটি ও আবহাওয়া অনুকূল থাকায় চিয়া সিডের ফলন ভালো হবে এবং চাষিরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
আরও পড়ুন: যশোরের কৃষকদের আশা দেখাচ্ছে ‘চিয়া’ চাষ