ঢাকায় বৃক্ষরোপনের জন্য বিশেষ স্যাটেলাইট ছবি তৈরি করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে কোথায় কোথায় গাছ লাগাতে হবে তা নির্ধারণ করা হবে।
ইউএনবিকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ঢাকা শহর বনায়নের ছক তৈরি করতে স্থানীয় সরকার বিভাগ, পূর্ত মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও দুই সিটি করপোরেশনের সঙ্গে মিলে আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করব।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের কোন কোন জায়গায় আমরা বনায়ন করতে পারি, কী কী গাছ লাগাতে পারি, তা ঠিক করতে স্থানীয় সরকার বিভাগ, পূর্ত মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও দুই সিটি করপোরেশনের সঙ্গে মিলে আমরা একটি ছক দাঁড় করানোর চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে দুই সিটির মেয়রের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা কাজ শুরু করেছি।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবুজ এলাকা হারিয়েছি, জলাশয়ও নেই। কাজেই আমরা মনে করি, নগর উন্নয়নে আমাদের যে মূল পরিকল্পনা আছে, সেটার মধ্যে এসবও নিয়ে আসতে হবে।’
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, একটি শহরের সুস্থ ও বাসযোগ্য পরিবেশের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ বনায়ন প্রয়োজন। দেখা যায় শহরে যে এলাকায় গাছ বেশি সে এলাকায় তাপমাত্রা কম। তাই তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ঢাকায় নগর বনায়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকার জন্য বিশেষ স্যাটেলাইট ইমেজ তৈরি করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে কোথায় গাছ লাগাতে হবে তা নির্ধারণ করা হবে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, আমরা যেটা করতে পারি, কত শতাংশ থাকতে হবে, সেটা নির্ধারণ করতে পারি। কিন্তু বিশ্বজুড়ে যে মান আছে, সেটা বাংলাদেশে কতটুকু কার্যকর করতে পারব- তা আমরা জানি না। ঢাকা বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শহর। এখানে আমরা কীভাবে সেই জায়গাটা বের করব, সেই লক্ষ্যে এরইমধ্যে আমরা কিছু কিছু কাজ শুরু করেছি।
আরও পড়ুন: উন্নত বিশ্বকে কার্বন নিঃসরণ কমানোর দিকে মনোযোগ দিতে পরিবেশমন্ত্রীর আহ্বান
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও প্রাণবন্ত ঢাকা গড়তে জলবায়ু কর্মপরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ঢাকায় দুটি সিটি করপোরেশন থাকলেও এক ঢাকা হিসেবে এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। দুই কোটি মানুষের নগরীতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের এক ঢাকা ঘোষণা সময়োপযোগী।
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো হবে।
ঢাকার জলবায়ু কর্মপরিকল্পনার প্রতি তার দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন, ঢাকাসহ সারাদেশের জন্য একটি উজ্জ্বল ও সবুজ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার অঙ্গীকার করেন। তিনি এসময় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোকে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, পরিবেশগত যে ন্যূনতম চাহিদা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে আমরা মনে করি, সেটা আমরা করতে পারব। সেটা করা না হলে ঢাকা শহর তার বাসযোগ্যতা হারাবে।
মন্ত্রী বলেন, রাজউকের যে পূর্বাচল প্রকল্প আছে, সেখানে একটি বড় অংশ আমরা বনায়নের জন্য রেখে দিয়েছি—১৪০ একর ভূমি। এটা বনায়নের জন্য আলাদাভাবে রাখা হয়েছে। কিন্তু পুরো এলাকা যদি কংক্রিটে ভরে যায়, তাহলে সেখানে আমাদের কোনো সুযোগ থাকবে না।