দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে জেলার তাহিরপুরের শ্রীপুর ইউনিয়নের বালিয়াঘাট নতুন বাজার থেকে শ্রীপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রাসহ কয়েকটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, উক্ত ইউনিয়নের আশপাশের বড়ছড়া, ট্যাকেরঘাট, লাকমা, লালঘাট, বাঁশতলা, চারাগাও, কলাগাও, জঙ্গলবাড়ি, বাগলী, সুন্দরবন, রতনপুর, দুধের আউটা, পুটিয়া, ব্যুড়াঘাট, জামালপুর, নবাবপুর, মদনপুর, মন্দিয়াতা, কামালপুর, মুজরাই, জয়পুর, গোলাবাড়ি, তরং, খালা শ্রীপুর, মাটিয়ান, উজ্জলপুর, বালিয়াঘাট, বানিয়াগাও, ইসলামপুর, গোলকপুর, তেঁলীগাও, শিবরামপুরসহ প্রায় ৫০ গ্রামের মানুষ এ সড়কে দিয়ে যাতায়াত করেন। বিশেষ করে শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ ও শ্রীপুর ইউনিয়ন ডিহিভাটি ভূমি অফিসে আসা সেবা গ্রহীতরা চলাচলে চরম ভোগান্তি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পাহাড়ে চলছে নবান্নের প্রস্তুতি
এ রাস্তায় প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে তিন হাজার মানুষ যাতায়াত করে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে , বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে রাস্তার দু’পাশের মাটি সরে রাস্তার অধিকাংশ স্থানই বড় বড় ভাঙন দেখা গেছে। ফলে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যানগাড়ি, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন আরোহীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শুধু গাড়ি চালক নয়, পথচারীদের জন্যও দুর্বোধ্য হয়ে উঠেছে এ রাস্তাটি।
স্থানীয় সোনার বাংলা মোটরসাইকেল সমিতির সভাপতি শাহানশাহ বলেন, ‘আমরা রাস্তা সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধির শরণাপন্ন হলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। আমাদের রাস্তার বেহাল অবস্থা কিন্তু দেখার কেউ নেই। পাকা রাস্তার দু'পাশের মাটি সরে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছিল। পরে আমরা নিজেরা চাঁদা তুলে যোগাযোগ সচল রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু জনপ্রতিনিধিরা এ রাস্তা সংস্কারের কোনো পদক্ষেপ নেননি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি এই রাস্তাটি যেন দ্রুত সংস্কার করা হয়।
আরও পড়ুন: করতোয়া নদী দখল করে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ!
জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোদাচ্ছির আলম সুবল বলেন, ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি দীর্ঘদিন সংস্কার করা হয়নি। তাই যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে চলাচল করাই কঠিন। এ কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। কিছুদিন আগে আমার মেয়েও দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল।’
রাস্তাটির সংস্কার হলে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজের শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষের চলাচলের পথ সুগম হবে।
শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন ডিহিভাটি ভূমি অফিসের উপসহকারী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, ‘পাঁকা রাস্তার দু’পাশের মাটি সরে যাওয়ায় একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে রাস্তাটি। পুরো রাস্তা জুড়ে ভাঙন আর ভাঙন। গাড়ি চলাচল দূরের কথা পায়ে হেঁটে চলাও কষ্টের বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘উপজেলার অধিকাংশ লোকই চরম কষ্টে আমার অফিসে আসেন খাজনা ও ভূমি বিষয়ে সেবা নিতে। এমনকি শিক্ষার্থীরাও সময়মতো স্কুলে যেতে পারে না।’
আরও পড়ুন: প্রাণহীন জামালপুর পাবলিক লাইব্রেরি!
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী ইকবাল কবির বলেন, ‘রাস্তাটি সংস্কারের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন পাঠিয়েছি। বরাদ্দ হলেই কাজ শুরু করা হবে।’