নেদারল্যান্ড আর কাশ্মীরে ব্যাপকভাবে চাষ হওয়া সেই টিউলিপ ফুল শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুরে বাণিজ্যিকভাবে ফুটিয়েছেন একজন ফুলচাষি।
টিউলিপ ফুলের খবর পেয়ে দূর-দূরান্ত থেকেও ছুটে আসছেন ফুল পাগল মানুষ। শুধু তাই নয়, ফুলের জগতে অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে এই টিউলিপ ফুল।
লিলি, জারবেরা, চায়না গোলাপসহ নানা ধারনের ফুলের সাথে নতুন করে বাণিজ্যিকভিত্তিক এই টিউলিপ ফুল চাষে দেলোয়ার হোসেন যে স্বপ্ন দেখালেন, তা অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বলে মনে করছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
ছয় ঋতুর এই দেশে অনেকটাই অসম্ভব হলেও দৃষ্টিনন্দন ‘মৌমিতা ফ্লাওয়ার্স’ নামের এই বাগানটিতে সরেজমিনে গিয়ে ইউএনবির এই প্রতিনিধি দেখেন, গাজীপুরের দেলোয়ার হোসেন দেশের মাটিতে ফুটিয়েছেন টিউলিপ ফুল। লাল, হলুদসহ চার রঙের এই ফুল সৌন্দর্য্য ছড়াচ্ছে বাগানে।
বাগান পরিচর্যাকারী জানান, বাগানটি দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন দর্শনার্থী ও উদ্যোক্তারা ভিড় করছেন।
পাশের এলাকা থেকে ফুলের বাগান দেখতে আসা ফিরোজ মিয়া বলেন, ‘যখন মন খারাপ হয়, তখনই এই বাগানে চলে আসি। ফুলগুলো দেখলে মনটাও খুব ভালো হয়ে যায়।’
বাগানে আসা অপর এক যুবক বলেন, ‘আমি অনেক দূর থেকে এই বাগান দেখতে এসেছি। সত্যি সত্যি এরকম ধরনের ফুল আমি আগে কখনও দেখিনি।’
এদিকে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন জাতের ফুল বিক্রির উদ্দেশ্যে অনেকেই এখানে এসেছেন আগাম বুকিং দিতে।
ইউএনবির এ প্রতিনিধির সাথে কথা হয় বাগান মালিক মো. দেলোয়ার হোসেনের সাথে।
বাগানে টিউলিপ ফুলের চাষ প্রসঙ্গে তিনি জানান, শীতপ্রধান এলাকার ফুল হলেও পরীক্ষামূলকভাবে এক হাজার টিউলিপ চারা (বাল্ব) নেদারল্যান্ড থেকে এনে রোপণ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশেও এ ফুলের বেশ চাহিদা রয়েছে। কেউ চাইলে টিউলিপ ফুলের জাত সরবরাহ থেকে শুরু করে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করব।’
ব্যাপকভাবে এর চাষ করে বর্তমানের চেয়ে কমদামে বিক্রি করেও অনেক টাকা আয় করা সম্ভব বলে জানালেন এ ফুলচাষি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মাহবুবুর রহমান জানান, ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই বাড়ির টবে টিউলিপ ফুলের চাষ করেন বলে শোনা যায়। তবে শ্রীপুরের দেলোয়ার হোসেন নিজে উদ্যোগী হয়ে বিদেশ থেকে এনে এই ফুলের চাষ করছেন।
‘প্রয়োজনে তাকে কারিগরী ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত সব বিষয়ে সহযোগিতা দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। দেশে যদি এই ফুলের চাষ করা যায় তাহলে এর বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে,’ বলেন তিনি।
২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক পাওয়া দেলোয়ার জানান, তার বাগানে ৩০ জন লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি বাগান থেকে বছরে অন্তত ৪০ লাখ টাকা লাভ হয়।