সরাইল উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে উপজেলার ভাটি এলাকার মানুষের যোগাযোগ সুবিধার জন্য হাওরের ওপর দিয়ে সড়কটি নির্মিত হয়। এটি এলাকাবাসীর স্বপ্নের সড়ক। সড়কটি নির্মাণের ফলে উপজেলার ভাটি এলাকার তিন ইউনিয়নবাসীর যোগাযোগে সুবিধা হয়।
তবে সড়কটি নির্মিত হওয়ার ২/৩ বছরের মধ্যেই হাওরের পানির তোড়ে সড়কটি ভেঙে যায়। সে সময়ে সংস্কারের জন্য ৩৫/৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও দায়সারাভাবে সম্পন্ন হয় সংস্কার কাজ। ফলে অল্পদিনেই বিলীন হয়ে যায় সংস্কার কাজ, আবার বাড়তে থাকে জনদুর্ভোগ।
২০১৫ ও ২০১৬ সালের পানিতে সড়কটি ভেঙে একেবারে বিলীন হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। তৎকালীন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধার প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালে সড়কটির ভূঁইশ্বর থেকে অরুয়াইল তিতাস ব্রিজ পর্যন্ত ২.৯৪৭ কিলোমিটার জায়গার সংস্কারের জন্য ৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়।
ভালোমানের নির্মাণ সামগ্রী, মানসম্মত ব্লক দিয়ে, মাটি ফেলে আরও উচুঁ করে সড়কটির সংস্কার করার কথা। কার্যাদেশ অনুযায়ী, কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল থেকে। কিন্তু ঠিকাদার কাজটি শুরু করেন ৩ মাস পর একই বছরের ১২ ডিসেম্বর। এরপরও কাজে ছিল ধীরগতি। এখনও চলছে এভাবেই। ২০১৯ সালের ১৩ এপ্রিল কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও সংস্কার কাজ শেষ হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারি প্রকৌশলী ও সংস্কার কাজের তদারকি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকী বলেন, ‘সংস্কার কাজ বন্ধ নেই। নিচের কাজ শেষ। ফাঁকে ফাঁকে কিছু ব্লক বসাতে হবে। মাটি বসার সুযোগও তো দিতে হবে। ব্লকের স্বল্পতা ছিল। বুধবার সকাল থেকে ব্লক বসানো শুরু হয়েছে। এরপরই কার্পেন্টিং এর কাজ শুরু হবে।’
এদিকে সড়কটির সংস্কারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন সেখানকার মানুষ। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির দ্রুত সংস্কারের দাবিতে স্থানীয় অটোরিকশা স্ট্যান্ডে সম্প্রতি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নাগরিক সমাজের সভাপতি সানা উল্লাহ ভূঁইয়া, ইউপি সদস্য রেজাউল, এম.মনসুর আলী, সুলভ আহমেদ, বাশার আহমেদ ও নূরুল আমীন প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সড়কটির সংস্কারের জন্য সরকার সাড়ে ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে । ১ বছরের মধ্যে এর সংস্কার কাজ শেষ করার কথা থাকলেও গত ১৯ মাসেও শেষ হয়নি সংস্কার কাজ। ঠিকাদার খুবই নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ধীর গতিতে সড়কের সংস্কার কাজ করছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সড়কটির সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় বাড়ছে জনদুর্ভোগ। সামান্য বৃষ্টি হলেই এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা যায়না। সড়কটির বেহাল দশার কারণে উপজেলার তিন ইউনিয়নের লোকজনের স্বাভাবিক চলাফেরায় বিঘ্ন ঘটছে। শিক্ষার্থীরা খুবই কষ্ট করে এই রাস্তা দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়া করে।
তারা দ্রুত সড়কটির সংস্কার কাজ শেষ করার দাবি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি নেয়া হবে।