বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে সহিংসতা প্রত্যাখ্যান করে সত্যিকারের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া।
তিনি বলেন, 'আমি যে বার্তার উপর জোর দিতে চাই। আর তা হলো সহিংসতা প্রত্যাখ্যান করে সত্যিকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও ন্যায্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করার জন্য সব পক্ষকে আহ্বান জানানো।’
আড়াই দিনের বাংলাদেশ সফর শেষে ইউএনবিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
আজরা জেয়া বলেন, 'আসুন আমরা বাংলাদেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে দেই।’
জেয়া স্পষ্ট করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের 'অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ' নির্বাচনকে সমর্থন করা।
এ ছাড়া সম্ভাব্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা বর্জনের প্রশ্নগুলো বাংলাদেশের জনগণের 'অভ্যন্তরীণ বিষয়' মন্তব্য করেছেন তিনি।
মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, ' এ বিষয়ে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা দেখছি না। আমি শুধু বলতে চাই যে আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ নিই না।’
ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্য অর্জনে একযোগে কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন বলে জানান জেয়া। এক্ষেত্রে সুশীল সমাজ, মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক ও শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এ ছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহি এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে জানান জেয়া।
বাংলাদেশে আসার আগে তার ভারত সফর সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভারত সরকারের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনার অংশ হিসেবে সফর করেছেন। পাশাপাশি তিব্বত ইস্যুতে বিশেষ সমন্বয়ক হিসেবে তার দ্বৈত ভূমিকার অংশ হিসেবে ভারত সফর করেছেন।
তিনি বলেন, 'সুতরাং এই বিষয়ে আমি বলব, এই সপ্তাহের বৈঠক থেকে আমি আরও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য সুবিধার ক্ষেত্রে আমাদের তিন সরকারের মধ্যে সম্মিলন দেখতে পাচ্ছি; যা আরও স্থিতিস্থাপক, সংযুক্ত, সুরক্ষিত ও সমৃদ্ধ।’
নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া
২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তিনি বলেন, এটি সিদ্ধান্ত ও তথ্যের 'সতর্ক গবেষণা ও বিবেচনার' ফল।
জেয়া বলেন, 'প্রকৃতপক্ষে, এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে আমরা বিচারবহির্ভূত হত্যা ও জোরপূর্বক গুমের ঘটনা হ্রাসের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখেছি।
তবে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রশ্নে তিনি বলেন, অতীত ও বর্তমানের অপকর্মের জবাবদিহি করতে হবে। একই সঙ্গে র্যাবের অর্থবহ সংস্কার করতে হবে।
"সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে এগুলো বিবেচনা করা হবে," বলেন মার্কিন জ্যেষ্ঠ এ কূটনীতিক।
তিনি বলেন, তারা মানবাধিকার, ত্রুটি ও অপব্যবহারের উপর আলোকপাত করার জন্যও কাজ করেন; যাতে তারা অন্যের অধিকার লঙ্ঘনকারীদের সংশোধন করতে পারেন এবং জবাবদিহি করতে পারেন।
বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিতে সহায়তা এবং অংশীদারিত্ব কে আরও গভীর করার প্রত্যাশা নিয়ে তিনি শুক্রবার ভোরে ঢাকা ছেড়েছেন।