চলতি অর্থবছরের মুদ্রাস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, যা পরের অর্থবছরের জন্য ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। ইউএনবির হাতে আসা সরকারি নথি অনুসারে, ২০২২-২৩-এ মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ দশমিক ২ শতাংশ। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, যেকোনো উন্নয়নশীল দেশে টেকসই দীর্ঘ মেয়াদি প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।
সরকারি নথি অনুসারে গত পাঁচ বছরে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের নিচে ও স্থিতিশীল ছিল।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ, আগের অর্থবছরে ছিল ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। একইভাবে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে গড় বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ, ২০১৬-১৭ সালে ৫ দশমিক ৪৪, ২০১৫-১৬-তে ৫ দশমিক ৯ এবং ২০১৪-১৫ সালে ছিল ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।
একইভাবে, ২০২০ সালের মে মাসে ১২ মাসের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। আর মে মাসে ছিল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। একইভাবে, ২০২০ সালের মে মাসে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিক মূল মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ এবং যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
তথ্যানুসারে, ২০২০ সালের মে মাসে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট খাদ্যের মুদ্রাস্ফীতি দাঁড়িয়েছিল ৫.১ শতাংশে, যা ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে সামান্য পিছলে পড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল। কোভিড-১৯-এর কারণে কয়েক মাস ধরে খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়ে গেলেও নথিতে বলা হয়েছে, সন্তোষজনক কৃষি উৎপাদনের ফলে মুদ্রাস্ফীতি কমতে পারে।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুসারে, ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে গড় বার্ষিক খাদ্য ও অ-খাদ্য মূল্যস্ফীতি যথাক্রমে ৫.৫৬ শতাংশ ও ৫.৮৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ার কারণে ২০২০ সালের পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মুদ্রাস্ফীতি মে মাসের ৫.৩৫ শতাংশ থেকে বেড়ে জুনে ৬.০২ শতাংশে দাঁড়িয়েছিল।
পয়েন্ট টু-পয়েন্ট খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি এক মাস আগে ৫.০৯ শতাংশ থেকে বেড়ে জুনে ৬.৫৪ শতাংশ হয়েছে। অন্যদিকে, অ-খাদ্য মূল্যস্ফীতি একই মাসে মে মাসের ৫.৭৫ শতাংশ থেকে কমে ৫.২২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
গত জুনে, শহরাঞ্চলে সাধারণ, খাদ্য ও অ-খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি যথাক্রমে ৬.০৩ শতাংশ, ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং ৫.২৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছিল যা আগের মাসে ছিল যথাক্রমে ৪.৮১ শতাংশ, ৩.৯৪ শতাংশ এবং ৫.৭৯ শতাংশ।
সামগ্রিকভাবে গ্রামীণ অঞ্চলে জুন মাসে সাধারণ, খাদ্য ও অ-খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়ায় যথাক্রমে ৬.০২ শতাংশ, ৬.৭৪ শতাংশ এবং ৫.১৮ শতাংশ। যা মে মাসে ছিল যথাক্রমে ৫.৬৫ শতাংশ, ৫.৬১ শতাংশ এবং ৫.৭৩ শতাংশ।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, কৃষি, শিল্প ও সেবা এ তিনটি খাতে মজুরি বাড়ার ফলস্বরূপ জাতীয় মজুরি সূচকের হার মে মাসের ৫.৮৯ শতাংশ থেকে কিছুটা বেড়ে জুন মাসে ৫.৯০ শতাংশ হয়েছে।
সংস্থাটির তথ্যে আরও দেখা যায, কৃষিতে মজুরি সূচক হার মে মাসের ৬.১৬ শতাংশ থেকে বেড়ে একই মাসে ৬.১৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। শিল্প ও সেবার জন্য মজুরি সূচকের হারও এক মাস আগের যথাক্রমে ৫.২৯ শতাংশ এবং ৫.৭৫ শতাংশ থেকে বেড়ে জুনে যথাক্রমে ৫.৩১ শতাংশ এবং ৫.৭৮ শতাংশ হয়েছে।