কিন্ডারগার্টেন স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের ভাড়া, বিদ্যুত ও পানির বিল পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। কেউ কেউ স্কুলের কার্যক্রম অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। অনেকের বিভিন্ন বিল বকেয়া রয়েছে। এসব খরচ মেটাতে না পেরে ইতোমধ্যে কয়েকটি স্কুলের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং কেউ কেউ বন্ধ করে দেয়ার চিন্তা ভাবনা করছেন। সরকারের কাছ থেকেও এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা কোনো প্রকার মানবিক সহায়তা পাননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নড়াইল জেলায় ৬৩টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ৭৫৬ জন শিক্ষক ও কর্মচারী কর্মরত। এসব স্কুলে ৭ হাজার ৪২৭ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। এছাড়া জেলায় ২৪টি স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদরাসা এবং নন এমপিও ৭টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।
এসব স্কুলের ফলাফল ও সহ শিক্ষাক্রমিক কার্যক্রমের কারণে অনেক স্কুলের সুখ্যাতিও রয়েছে। শিক্ষকরা এসব স্কুল থেকে বেতন এবং এর বাইরে স্কুলের শিশুদের টিউশনি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করে থাকেন। করোনার প্রভাবে এসব প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি টিউশনিও বন্ধ রয়েছে। ফলে তাদের উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা বিপাকে রয়েছেন।
নড়াইল জেলা কিন্ডার গার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মো. সামিউল আলম জিহাদ বলেন, ‘ভয়াবহ দূর্যোগ করোনা মহামারিতে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক-কর্মচারীরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। কেউ আমাদের কোনো খোঁজ নেয়নি। গত ৮ জুলাই এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানমন্ত্রীর কাছে মানবিক সহায়তা চেয়ে মানবন্ধন ও স্মারকলিপি দিলেও কোনো সহায়তা পাইনি।’
নড়াইল জেলা কিন্ডার গার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নড়াইল হলিচাইল্ড প্রি-ক্যাডেট অ্যান্ড হাই স্কুলের অধ্যক্ষ মো. আসলাম খান বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হবার পর স্কুলটি বন্ধ রয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দিতে পারিনি। কয়েক মাস ভাড়া দিতে না পারায় স্কুলটি স্থানান্তর করতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত দুটি স্কুলের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকে পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সবার খোঁজ-খবর নিয়েছেন। তবে, আমরা এখনো কোনো অনুদান বা প্রণোদনা পাইনি।’
জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, বৃহত্তর এ জনগোষ্ঠীর জন্য সহমর্মিতা থাকলেও সরকারিভাবে কোনো সহায়তা বা প্রণোদনা দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে এলাকাভিত্তিক এসব কর্মহীন মানুষের জন্য সহায়তা দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।