ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পাপুয়ায় একটি অগভীর ভূমিকম্পে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার পাপুয়ার উত্তর উপকূলের কাছে জয়পুরায় আবাসিক এলাকায় পাঁচ দশমিক এক মাত্রার এই ভূমিকম্পে একটি ভাসমান রেস্তোঁরা সমুদ্রে ধসে পড়ে তাদের মৃত্যু হয়।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ২২ কিলোমিটার (১৩ মাইল) গভীরে। প্রায়ই অগভীর ভূমিকম্প পৃথিবীর পৃষ্ঠে আরও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
পাপুয়ার রাজধানী জয়পুরার বাসিন্দা ত্রি আসিহ বলেছেন, ‘বাসিন্দারা সত্যিই আতঙ্কিত ছিল। আমি একটি গাড়িতে ছিলাম এবং আমার মনে হয়েছিল যেন গাড়ির চাকাগুলো ওপরে উঠে গেছে।’
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের কারণে একটি ভাসমান রেস্তোরাঁর ভেতরে থাকা চারজন লোক সাগরে পড়ে মারা যায়।
ন্যাশনাল ডিজাস্টার মিটিগেশন এজেন্সির মুখপাত্র আবদুল মুহারি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘নিহত চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। হতাহতরা ক্যাফের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছিল এবং রেস্তোরাঁর ছাদ তাদের ওপর পড়েছিল।’
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘর্ষ: পদদলিত হয়ে নিহত বেড়ে ১৭৪
উদ্ধারকারী ডুবুরিরা সম্ভাব্য জীবিতদের সন্ধানে ক্যাফেটেরিয়ার আশেপাশের এলাকায় অনুসন্ধান চালায়।
মুহারি বলেন, বাড়িঘর, ভবন ও চিকিৎসা সুবিধাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শহরের হাসপাতালের কিছু রোগীকে এর উঠানে সরিয়ে নেয়া হয়।
পাপুয়াতে জানুয়ারি মাস থেকে একটি শক্তিশালী সিরিজ ভূমিকম্প আঘাত হানে। আবহাওয়া, জলবায়ুবিদ্যা এবং জিওফিজিক্স এজেন্সি জানিয়েছে যে তারা ২ জানুয়ারি থেকে জয়পুরা শহর এবং আশেপাশের এলাকায় এক হাজার ৭৯টি ভূমিকম্প রেকর্ড করেছে। এর মধ্যে ১৩২টি বাসিন্দাদের অনুভূত হওয়ার মতো শক্তিশালী ছিল।
ইন্দোনেশিয়া একটি বিস্তীর্ণ দ্বীপপুঞ্জ এবং ২৭০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের আবাসভূমি। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অববাহিকার চারপাশে সিসমিক ফল্টের একটি আর্ক ‘রিং অব ফায়ার’ এর অবস্থানের কারণে প্রায়শই ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের শিকার হয় দেশটি।
পশ্চিম জাভায় ২০২১ সালের নভেম্বরে পাঁচ দশমিক ছয় মাত্রার ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৩৩১ জন নিহত হয়। সুলাওয়েসিতে ২০১৮ সালের ভূমিকম্প এবং সুনামিতে প্রায় চার হাজার ৩৪০ জন নিহত হওয়ার পর এটি ইন্দোনেশিয়ায় সবচেয়ে মারাত্মক ছিল।
এছাড়া ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরের একটি অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকম্প সুনামির সৃষ্টি করেছিল যার কারণে প্রায় এক ডজন দেশে দুই লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল, যার বেশিরভাগই ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের।