পাকিস্তানের বর্তমান সরকার দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। এছাড়া মঙ্গলবার ইসলামাবাদের একটি আদালত গত সপ্তাহে বিচারক জেবা চৌধুরীকে ইমরান খানের দেয়া মৌখিক হুমকির বিষয়ে অবমাননার মামলা করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
চৌধুরীকে অপমান করার জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে রাজনীতি থেকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হতে পারেন তিনি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে কয়েক মাস থেকে ১৪ বছরের জেল হতে পারে, যা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সমতুল্য।
শনিবার আয়োজিত এক গণসমাবেশে তিনি তাকে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার দাবি করেন। ইমরান খান পুলিশ কর্মকর্তাদের ও দেশটির নারী বিচারক জেবা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে চলতি মাসের শুরুতে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী শাহবাজ গিলকে প্রথমবার গ্রেপ্তারের পর শারিরীকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।
সমাবেশে তার দেয়া বক্তব্যের জেরে দেশটির কর্তৃপক্ষ খানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ দায়ের করে।
এদিকে, পুলিশ আবারও শাহবাজ গিলের ইসলামাবাদের অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে যায়। এই ঘটনার জেরে দেশটিতে ফের রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে।
২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসা ইমরান খান গত এপ্রিল মাসে সংসদে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন।
দেশটির বেসরকারি টিভি চ্যানেল এআরওয়াই টিভিতে একটি শো চলাকালীন তার সাম্প্রতিক সেনা বিরোধী মন্তব্যের জন্য গিলকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে খান অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চক্রান্ত করেছিল।
তবে ওয়াশিংটন, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এবং খানের পরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়া শাহবাজ শরিফের সরকার; সবাই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এছাড়া তার ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকেই খান আগাম নির্বাচনের দাবিও করেছেন এবং ‘জনগণের চাপের’ মাধ্যমে শাহবাজ শরীফের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সর্বশেষ গত শনিবারের সমাবেশে খান ওই নারী বিচারপতির সমালোচনা করে বলেন ‘আপনিও এর জন্য প্রস্তুত হন, আমরাও আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আপনাদের সকলের অবশ্যই লজ্জিত হতে হবে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানে জ্বালানিবাহী ট্রাকে বাসের ধাক্কা, নিহত ২০
খানের হুমকির কারণে শরীফের সরকার তার ওপর অসন্তুষ্ট হয় এবং বিচারককে অপমান করার জন্য দোষী সাব্যস্ত করতে পারেন।
খান মঙ্গলবার আদালতের শুনানিতে যোগ দেবেন নাকি তার আইনজীবী পাঠাবেন তা স্পষ্ট নয়।
পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান একজন আইনজীবী আহসান ভুন বলেন, ‘কাউকেই বিচারকের অবমাননা বা বিচার বিভাগের সুনাম নষ্ট করার সুযোগ দেয়া উচিত নয়।
আরও পড়ুন:‘ঝাড়ুর লাঠি’তে পতাকা: পাকিস্তানি ‘হাবিব ব্যাংকে’র বিরুদ্ধে অবমাননার অভিযোগ