পাকিস্তান
কারাগারে ইমরান খানের মৃত্যুর গুজব, সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চাইল পিটিআই
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের কারাগারে মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় সরকারের কাছ থেকে স্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েছে পিটিআই। পাশাপাশি অবিলম্বে ইমরান খান ও তার পরিবারের মধ্যে সাক্ষাতের ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানিয়েছে দলটি।
গত কয়েক সপ্তাহে একাধিকবার ইমরান খানের সঙ্গে তার বোনদের সাক্ষাতের অনুমতি দেয়নি কারা কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়েছে, দেশটির সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী কোথায় এবং কেমন আছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তার বোনেরা। এ ছাড়া তার সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দিতে আদিয়ালা কারাগারের বাইরে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করছেন তারা।
এদিকে, বেশ কিছু এক্স অ্যাকাউন্ট (সাবেক টুইটার) থেকে তার মৃত্যুর গুজব ছড়ানো হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে এক্স-এ ‘Where is Imran Khan?’ বা ‘ইমরান খান কোথায়?’ ট্রেন্ড চলছিল।
এ বিষয়ে আজ সকালে এক্স-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে পিটিআই জানায়, ইমরান খানের স্বাস্থ্যের বিষয়ে আফগান ও ভারতীয় গণমাধ্যমসহ বিদেশি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে ‘নিকৃষ্ট প্রকৃতির গুজব’ ছড়ানো হচ্ছে।
দলটির দাবি, ‘বর্তমান সরকার ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবিলম্বে ও পরিষ্কারভাবে এসব গুজব খণ্ডন করে এ বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিক। সেই সঙ্গে ইমরান খানের সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাতের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা করুক।
‘ইমরান খানের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া উচিত।’
এ ছাড়া, যারা ‘সংবেদনশীল’ এসব গুজব ছড়িয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ‘জাতির সামনে সত্য উপস্থাপন করার’ দাবিও জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে সতর্ক করে পিটিআই আরও বলেছে, ‘জাতি তাদের নেতার (ইমরান খান) অবস্থা নিয়ে কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা সহ্য করবে না। ইমরানের নিরাপত্তা, মানবাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব।’
একই সঙ্গে দলটি ‘এসব গুজবের মোকাবিলা এবং সত্য উন্মোচনে সব ধরনের আইনি ও রাজনৈতিক পদক্ষেপ’ নেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে, আজ দুপুরে পিটিআই নেতা ও পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশির মেয়ে মেহের বানো কুরেশি এক্স-এ লিখেছেন, ইমরান খানের স্বাস্থ্য নিয়ে ছড়ানো গুজব উদ্বেগজনক।
তিনি বলেছেন, ‘খান সাহেবের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের এবং জাতির সামনে হালনাগাদ তথ্য প্রকাশের বাধ্যবাধকতাও তাদের রয়েছে। এসব গুজবের সমাপ্তি টানার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায় হচ্ছে তার বোনদের, আইনজীবী ও দলীয় সদস্যদের তার সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া।’
এর আগে, গতকাল (বুধবার) পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও পিএমএল-এন নেতা খাজা আসিফ এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ কারাগারে থাকাকালীন সুযোগ-সুবিধা দাবি করায় সমালোচনা করেছিলেন ইমরান খান। অথচ, তিনি নিজেই জেলকক্ষে টিভি ব্যবহার করেন। তার খাবারও আসে কারাগারের বাইরে থেকে। সেখানে তার জন্য ব্যায়াম করার যন্ত্রপাতিও রয়েছে।
নিজের কারাভোগের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আসিফ বলেন, ‘আমরা ঠান্ডা মেঝেতে ঘুমাতাম। জেলের রান্না করা খাবারই খেতাম। জানুয়ারি মাসে আমাদের মাত্র দুটি কম্বল দেওয়া হয়। গরম পানি ব্যবহারের কোনো সুযোগ ছিল না।’
এর বিপরীতে ইমরানের জন্য ‘ডবল বেড ও মখমলের বিছানা’ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তার দাবি, জেল সুপার নিজেই ইমরানের দেখভাল করেন।
আসিফ আরও বলেন, ‘ইমরান খানের উচিত কারাগারের লাউডস্পিকারে তার নিজের বক্তৃতাগুলো শোনা। তার খোদাকে ভয় করা উচিত।’
২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন ইমরান খান। ক্ষমতা হারানোর পর দুর্নীতি থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগসহ বিভিন্ন মামলার মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। ২০২২ সালের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।
৭ দিন আগে
দুদিনের সফরে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায়
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ঢাকায় এসেছেন। দুই দিনের সফরে শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ২টার কিছু পরপরই বিশেষ ফ্লাইটে তিনি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম তাকে স্বাগত জানান।
প্রায় ১৩ বছর পর কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর এটি। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে এই সফর হচ্ছে। পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক এই সফর।
সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করবেন পকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এসব বৈঠকে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক ছাড়াও আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: চার দিনের সফরে পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী ঢাকায়
১৯৭১ সালের বিষয়গুলো উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গত ৪ আগস্ট বলেছিলেন, পাকিস্তানি প্রতিনিধিদের সফরের সময় প্রতিটি বিষয়ই আলোচনায় থাকবে।
বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা ও ক্ষতিপূরণের দাবি তুলবে কি না— এমন প্রশ্নে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, ‘প্রতিটি বিষয় আলোচনায় থাকবে।’
‘পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করছে এবং ইসহাক দারের এ সফরে আলোচনার টেবিলে সবকিছুই থাকবে।’
চলতি বছরের ২৭-২৮ এপ্রিল পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের কথা ছিল। তবে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের বাংলাদেশ সফর স্থগিত করা হয়।
পরে দুই দেশের পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে নতুন তারিখ ঠিক করা হয়।
আরও পড়ুন: চলতি বছরে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সরাসরি ফ্লাইট চালু হবে: পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী
গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে জাতিসংঘ আয়োজিত ‘দ্বিরাষ্ট্র সমাধান’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ফাঁকে ইসহাক দার ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হোসেনের মধ্যে বৈঠক হয়।
এ সময় ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন ও মানবিক সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। তারা ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকার ও আন্দোলনের প্রতি অকুণ্ঠ সংহতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
সেটি ছিল গত অক্টোবর থেকে এই দুই নেতার চতুর্থ বৈঠক।
পাকিস্তান হাইকমিশন সে সময় জানিয়েছিল, বৈঠকে দুপক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পর্যালোচনা করে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা জোরদারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। পাশাপাশি যোগাযোগ ও জনগণের মধ্যে বিনিময় বৃদ্ধির উপায় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
১০৩ দিন আগে
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ায় ভয়াবহ বন্যায় নিহত ২২০
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কয়েকটি জেলায় ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় ধসে পড়া বাড়িগুলো থেকে আরও ৬৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন উদ্ধারকর্মীরা। শুক্রবার রাতভর উদ্ধার অভিযানের পর চলমান প্রাকৃতিক দুর্যোগে সেখানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২০ জনে।
তবে গত ২ জুন থেকে এখন পর্যন্ত সেখানে প্রায় ৫৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রাদেশিক দুর্যোগ তত্ত্বাবধান কর্তৃপক্ষ। এই অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
পাকিস্তানের জরুরি সেবা দপ্তরের মুখপাত্র মোহাম্মদ সুহেইল জানিয়েছেন, শুক্রবার প্রবল বর্ষণের ফলে খাইবার পাখতুনখোয়ার বুনার জেলায় বন্যার পানি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ সময় বহু বাড়িঘর ভেসে গেছে।
বুনার জেলা প্রশাসক কাশিফ কাইয়ুম বলেন, পীর বাবা ও মালিকপুরা গ্রাম দুটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্রবারই এসব গ্রামে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: টানা বর্ষণে পাকিস্তানজুড়ে বন্যা, নিহত বেড়ে ১৮০
পীর বাবা গ্রামের ৫৩ বছর বয়সী মোহাম্মদ খান বলেন, ‘কোথা থেকে হঠাৎ করে বানের পানি চলে আসল, তা আমরা বুঝতেই পারিনি। মানুষ সরে যাওয়ার মতো সুযোগ পায়নি। এত দ্রুত চারদিক পানিতে ভরে যায় যে অনেকে ঘর ছেড়ে বের হতেই পারেনি।’
বুনার সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক মোহাম্মদ তারিক জানান, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই অনেকের মৃত্যু হয়েছে। তার ভাষ্যে, ‘নিহতদের মধ্যে অনেকই পুরুষ, শিশুও ছিল কিছু। তবে নারীরা ওই সময়র জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ ও গবাদিপশু চরাতে পাহাড়ে গিয়েছিলেন বলে রক্ষা পেয়েছেন।’
প্রাদেশিক দুর্যোগ তত্ত্বাবধান কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহে শুধু খাইবার পাখতুনখোয়া ও উত্তরাঞ্চলের গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চলে বৃষ্টিজনিত দুর্ঘটনায় অন্তত ৩৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ওই অঞ্চল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরেও সাম্প্রতিক বন্যায় অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেখানেও শত শত মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়েছেন।
ভারতের হিমালয় অঞ্চল ও পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে এ ধরনের মেঘভাঙা বৃষ্টি ক্রমেই বেড়ে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ফলে এই প্রবণতা আরও তীব্র হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে আকস্মিক বন্যায় নিহত চার, নিখোঁজ শতাধিক
পাকিস্তানের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে এখন পর্যন্ত সারা দেশের বন্যাকবলিত এলাকা থেকে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি পর্যটককে উদ্ধার করা হয়েছে। সরকার বন্যাকবলিত এলাকা এড়িয়ে চলার ব্যাপারে সতর্ক করলেও সেই সতর্কবার্তা অনেকেই উপেক্ষা করেছেন বলে জানিয়েছেন তারা।
২০২২ সালে পাকিস্তানে ভয়াবহ মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ঘটনায় ১ হাজার ৭০০–এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। সেবার প্রায় ৪০০০ কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।
১১০ দিন আগে
রক্ত ও পানি একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না: স্বাধীনতা দিবসে মোদি
পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানিচুক্তি একতরফাভাবে বন্ধ করার পর সেই সিদ্ধান্ত অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছেন, রক্ত ও পানি একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দিল্লির লালকেল্লায় দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন মোদি।
ভাষণে মোদি ইঙ্গিত দেন, এপ্রিলে কাশ্মীরে হামলার ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত অব্যাহত রাখা হবে।
তিনি বলেন, ‘যে সময় আমাদের কৃষকরা পানির অভাবে ভুগেছেন, সে সময় ভারতের নদীগুলোর পানি দিয়ে শত্রু দেশ সেচ দিয়েছে। তবে এখন ভারতের পানিতে কেবল ভারত ও তার কৃষকদেরই অধিকার থাকবে।’
কৃষকদের স্বার্থ ও জাতীয় স্বার্থ নিয়ে আর আপস করা হবে না উল্লেখ করে মোদি বলেন, ‘রক্ত ও পানি একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।’
পাকিস্তানে পানির প্রবাহ আটকানো বা অন্যদিকে সরিয়ে দেওয়ার যেকোনো প্রচেষ্টা তারা ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ বলে গণ্য করবে বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ।
আরও পড়ুন: ভারতকে কি চীনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন ট্রাম্প?
এ সময় সন্ত্রাসী ও সন্ত্রাসবাদকে সমর্থনকারীদের মধ্যে ভারত কোনো পার্থক্য করে না বলে পাকিস্তানকে সতর্ক করেছেন মোদি। তাছাড়া, ভবিষ্যতে পাকিস্তান যদি কখনো ভারতে হামলা চালায় তাহলে তাদের শাস্তির দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
মোদি বলেন, সন্ত্রাসী ও সন্ত্রাসবাদকে সমর্থনকারীদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করে না ভারত। তাছাড়া ইসলামাবাদের ‘নিউক্লিয়ার ব্ল্যাকমেইল’ সহ্য করা হবে না।
তিনি বলেন, ‘ভারত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আর কোনো পারমাণবিক হুমকি সহ্য করা হবে না। অনেক দিন ধরে পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল চলছিল, কিন্তু এখন আর এই ব্ল্যাকমেইল সহ্য করা হবে না।’
তবে আগেও ভারতের পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগকে উসকানিমূলক ও উত্তেজনাপূর্ণ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ইসলামাবাদ।
২২ এপ্রিল ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালিয়ে ২৬ পর্যটককে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। এরপর ৬ মে দিবাগত রাতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তানও। এতে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতায় জড়ায় প্রতিবেশি দুই দেশ।
এ ছাড়া, শুক্রবারের ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কারোপ নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও তার দেশের কৃষকদের স্বার্থ নিয়ে কোনো আপস না করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
নিষেধ সত্ত্বেও রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখায় মোদির ওপর চটেছেন ট্রাম্প। সে কারণেই ভারতের ওপর নেমে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কশাস্তি। দিল্লির ওপর প্রথমে ২৫ শতাংশ, পরে আরও ২৫ শতাংশসহ মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখেও ভারত সাড়া দেয়নি। মোদি উল্টো বলেছেন, ‘ভারত কৃষকদের স্বার্থে কোনো আপস করবে না।’
১১১ দিন আগে
পাকিস্তানে ডাকাত দলের হামলায় ৫ পুলিশ সদস্য নিহত
পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় পাঞ্জাব প্রদেশে পুলিশের একটি তল্লাশিচৌকিতে সশস্ত্র ডাকাতদের হামলায় অন্তত পাঁচ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দিবাগত রাতে পাঞ্জাবের রহিম ইয়ার খান জেলায় ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত বেশ কয়েকজনের একটি ডাকাত দল পুলিশের এলিট ফোর্সের একটি তল্লাশিচৌকিতে হামলা চালায়।জেলা পুলিশ কর্মকর্তা ও পুলিশের মুখপাত্র ইরফান আলী সামো বলেন, ‘ডাকাতরা রাতের আঁধারে আধুনিক অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে আমাদের সাহসী সদস্যদের হত্যা করেছে।’
ঘটনার পরপরই অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স ও সাঁজোয়া যান পাঠানো হয় এবং পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে অভিযান শুরু করা হয়।
সামো বলেন, ‘ডাকাতদের গোপন আস্তানাগুলোর দিকে যাওয়ার সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং এখনও ব্যাপক অভিযান চলছে।’
আসামিদের ধরতে আশপাশের এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনী ভারী অস্ত্র ও সাঁজোয়া যানের সহায়তা নিয়ে অভিযানে অংশ নিচ্ছে বলে জানান তিনি।
১২৫ দিন আগে
টানা বর্ষণে পাকিস্তানজুড়ে বন্যা, নিহত বেড়ে ১৮০
পাকিস্তানে তীব্র মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৮০-তে পৌঁছেছে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত আহত হয়েছেন পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়েছে, গত বছরের তুলনায় পাকিস্তানে এবার মৌসুমি বৃষ্টিপাত ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এ বছর জুলাইয়ের শুরুতেই টানা বর্ষণ শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় দেশজুড়ে প্রাণহানি ও দুর্যোগের আশঙ্কা বাড়ছে। আগামী দিনগুলোতেও আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা।
শনিবার (১৯ জুলাই) পাকিস্তানের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিন্ধ প্রদেশের করাচি, হায়দরাবাদ, সুক্কুর, থাটা, বাদিন, লারকানা, জ্যাকবাবাদ, নবাবশাহ, মিরপুরখাসসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ভারি বৃষ্টি, দমকা হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে।
এদিকে, দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) জাতীয় জরুরি কার্যক্রম কেন্দ্র (এনইওসি) জানিয়েছে, সিন্ধ প্রদেশের নিম্নাঞ্চলগুলোতে প্লাবনের আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টির সময় ওইসব অঞ্চলের বাসিন্দাদের ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জলাবদ্ধতা রোধে ড্রেন পরিষ্কার রাখার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
পাঞ্জাব প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (পিডিএমএ) জানিয়েছে, আজ (রবিবার) থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত প্রদেশের বেশিরভাগ জেলায় চতুর্থ দফার বর্ষণ শুরু হবে।
এর মধ্যে রাওয়ালপিন্ডি, মুর্রি, গালিয়াত, আটক, চকওয়াল, মান্ডি বাহাউদ্দিন, হাফিজাবাদ, গুজরাট, ঝেলম ও গুজরানওয়ালায় বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। সেই সঙ্গে লাহোর, ফয়সালাবাদ, শিয়ালকোট, নারোয়াল, টোবা টেক সিং, ঝাং, সারগোধা, মিয়ানওয়ালি, মুলতান, ডেরা গাজি খান, বাহাওয়ালপুর ও বাহাওয়ালনগরেও ১৮ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া ২২ জুলাই থেকে পাঞ্জাবের সব বড় নদী ও নদী-সংলগ্ন খালগুলোতে বন্যার আশঙ্কায় উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে পিডিএমএ। এ ছাড়াও চেনাব, ঝেলম, রাভি, সুফ্লজ ও সিন্ধু নদীসহ উপনদীগুলোতে পানিপ্রবাহ বাড়বে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস বিভাগ।
আরও পড়ুন: টেক্সাসে বন্যায় নিহত বেড়ে ৮২, দশ কিশোরীসহ নিখোঁজ বহু
খাইবার পাখতুনখাওয়ায় বর্ষণ ও হিমবাহ গলার কারণে কাবুল, সোয়াত, পাঞ্জকোরা, বারা ও কালপানি নালায় আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। ইসলামাবাদ ও মধ্য পাঞ্জাবেও ২৪ জুলাই পর্যন্ত মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে, যা নগর বন্যার ঝুঁকি বাড়াবে।
এদিকে, টানা বৃষ্টিতে রাওয়াল বাঁধে পানির উচ্চতা বেড়ে গিয়ে শনিবার সকালে এটি ১ হাজার ৭৪৮ ফুটে পৌঁছায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে আজ স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় সেচ কপাট খুলে দিয়ে পানির স্তর ১ হাজার ৭৪৬ ফুটে নামিয়ে আনা হয়। এ সময় আশপাশের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়।
বর্ষণ বেড়েছে ৬০ শতাংশ, দায় জলবায়ু পরিবর্তনের
এনডিএমএ চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইনাম হায়দার মালিক জানিয়েছেন, এ বছর যে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যে এক মাস আগেই বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে, সেই পূর্বাভাস তারা চার মাস আগেই দিয়েছিলেন। এবারের মৌসুমি বৃষ্টির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন: ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪ স্থানে ভাঙন, ৩০ গ্রাম প্লাবিত
পিটিভি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সামগ্রিক দুর্যোগ মোকাবিলা ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এতে সেনাবাহিনী, প্রাদেশিক সংস্থা, এনজিও ও শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ যৌথভাবে কাজ করছে।’
জলবায়ু পরিবর্তন ও হিমবাহ দ্রুত গলার কারণেই এ বছর বৃষ্টি ও দুর্যোগের মাত্রা বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
১৩৭ দিন আগে
সহযোগিতা এগিয়ে নিতে ঢাকা–ইসলামাবাদের সঙ্গে কাজ করছে বেইজিং: রাষ্ট্রদূত ইয়াও
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠককে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে ‘কনক্রিট সহযোগিতার’ উদ্যোগ হিসেবে বর্ণনা করে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে মিলে চীন এ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ ও যেসব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো হয়েছে, তা বাস্তবায়নে কাজ করছে।
‘আমরা এরইমধ্যে শিল্প, বাণিজ্য, শিক্ষা, পরিবেশ সুরক্ষা, পানিসম্পদসহ ১২টি ক্ষেত্রে কনক্রিট সহযোগিতা চিহ্নিত করেছি। এ নিয়ে কিছু ফলোআপ হবে এবং আমরা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে মিলে এ ঐকমত্য বাস্তবায়নে কাজ করছি,’ বলেন তিনি।
বুধবার (৯ জুলাই) রাজধানীতে এক সেমিনারে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, সম্প্রতি কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকটি ছিল অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও তিন দেশের—বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের—জনগণের জীবনমান উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতার একটি উদ্যোগের অংশ।
‘আমরা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রয়েছি। বহু বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আমি এটিকে তিন দেশের সাধারণ স্বার্থে একটি উদ্যোগ হিসেবে দেখি,’ বলেন চীনের রাষ্ট্রদূত।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, সহযোগিতার মূলনীতি হলো উন্মুক্ত থাকা, স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং পারস্পরিক উপকার নিশ্চিত করা। ‘আমাদের সহযোগিতা পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। এটি উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ একটি প্রক্রিয়া। এটি কোনো তৃতীয় দেশকে লক্ষ্য করে নয়। এটিই আমাদের বার্তা, বলেন এই কূটনীতিক।
আরও পড়ুন: ঢাকা-ওয়াশিংটন দ্বিতীয় দফার শুল্ক আলোচনা শুরু হচ্ছে আজ
বাংলাদেশে চীনা ব্যবসায়ী সংগঠন চাইনিজ এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিইএবি) আয়োজিত ‘চীন–বাংলাদেশ শিল্প ও সরবরাহ চেইন সহযোগিতা’ শীর্ষক সেমিনারে এই বক্তব্য দেন তিনি।
সেমিনারে ‘সিইএবি ইন্ডাস্ট্রি রিপোর্ট’ প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও বিভাগের প্রতিনিধিরা এবং দুই দেশের ব্যবসায়ী নেতারা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তান অবকাঠামো, সংযোগ, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, সামুদ্রিক বিষয়, তথ্যপ্রযুক্তি, দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে গভীরতর সহযোগিতার জন্য একাধিক খাত চিহ্নিত করে।
চীন–দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো’র ৯ম আসর এবং চীন–দক্ষিণ এশিয়া সহযোগিতা বৈঠকের ৬ষ্ঠ আসরের ফাঁকে গত ১৯ জুন কুনমিংয়ে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি ‘অনানুষ্ঠানিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠক’ অনুষ্ঠিত হয়।
২৬ জুন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন স্পষ্ট করেন, বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো নতুন জোট গঠনের বিষয় নেই এবং এটি প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিরুদ্ধে কিছু নয়।
‘আমরা কোনো জোট গঠন করছি না। এটি ছিল সরকারি পর্যায়ের একটি বৈঠক, রাজনৈতিক পর্যায়ে নয়… এখানে কোনো জোট গঠনের উপাদান ছিল না,’ গত মাসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন তিনি।
বৈঠকটি ভারতের বিপক্ষে কোনো কৌশল ছিল কি না— এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা হোসেন বলেন, ‘এটি অবশ্যই কোনো তৃতীয় পক্ষকে লক্ষ্য করে নয়। আমি আপনাদের তা নিশ্চিত করে বলতে পারি।’
১৪৮ দিন আগে
পোষা সিংহ দেওয়াল টপকে রাস্তায়, পাকিস্তানে আহত ৩
পাকিস্তানের লাহোরে খাঁচা থেকে বেরিয়ে দেওয়াল টপকে এক নারী ও দুটি শিশুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে একটি পোষা সিংহ। পরে সেটির মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাঁচ ও সাত বছর বয়সী শিশু দুটিসহ আক্রান্ত ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) জোহান শহরের একটি গ্রামের খামারবাড়ি থেকে সিংহটি পালিয়ে যায়। এরপর একটি গলির মোড়ে ওই নারী ও শিশুদের আক্রমণ করে।
শহরের নিরাপত্তা ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, লাফ দিয়ে একটি কংক্রিটের দেওয়াল পার হচ্ছে সিংহটি। এরপর পেছন থেকে এক নারীর ওপর আক্রমণ করে মাটিতে ফেলে দিয়েছে সেটি। তখন ওই খামারবাড়ি থেকে এক ব্যক্তিকে লাঠি হাতে দৌড়ে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়।
তিনি সিংহটির কবল থেকে ওই নারীকে রক্ষা করেন। লোকটির তাড়া খেয়ে ছুটে সামনের সড়কে গিয়ে শিশুদুটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটি।
সিংহের আক্রমণে শিশুরা মুখমণ্ডল ও বাহুতে আঘাত পেয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি)। তারা বর্তমানে স্থিতিশীল অবস্থায় আছে বলে খবরে বলা হয়েছে।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও শেয়ার করে লাহোর পুলিশ জানিয়েছে, খামারবাড়িতে একটি উন্মুক্ত খাঁচা থেকে সিংহটি পালিয়ে যায়। পরে এটিকে ধরে নিয়ে আসেন এর মালিক। বন্য প্রাণীটিকে একটি গাড়িতে তুলে অন্য একটি জেলায় পালিয়ে যান তিনি।
লাহোর পুলিশ অপারেশনসের উপ-মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ ফয়সাল কামরান বলেন, এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। সিংহটিকেও ধরে এনে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সিংহ পোষার বৈধ অনুমোদন ছিল না ওই ব্যক্তির। পাকিস্তানের বন্যপ্রাণী আইন অনুসারে তার বিচার করা হবে। এতে তার সাত বছরের কারাদণ্ড কিংবা সাড়ে সতেরো হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
পাঞ্জাবের বন্যপ্রাণী ও পার্ক বিভাগের প্রধান রেঞ্জার সৈয়দ কামরান বুখারি বলেন, ‘আটক তিনজনকেই কঠিন সাজার মুখোমুখি হতে হবে। এভাবে বন্যপ্রাণী আটকে রাখা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ।’
পাকিস্তানে বন্যপ্রাণী পোষা মর্যাদার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দেশটিতে বন্যপ্রাণী পোষা অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়, তবে তার জন্য অনুমোদন নিতে হয়। আর সিংহের মতো বড় কোনো বন্যপ্রাণী পুষতে হলে তা শহরের বাইরে করতে হবে বলে নিয়ম রয়েছে।
আরও পড়ুন: মেছো বিড়ালসহ বিপন্ন বন্যপ্রাণী রক্ষায় সচেতনতা বাড়াতে বিশেষ ভ্যান
১৪৯ দিন আগে
ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল দিতে সুপারিশ করবে পাকিস্তান
সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সংঘাত বন্ধে ভূমিকা রাখায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আগামী বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান সরকার।
করাচিভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক ডনের খবরে বলা হয়েছে, এটি দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের তাৎপর্যপূর্ণ উন্নয়নের নজির হিসেবে দেখা হচ্ছে।সামাজিকমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে পাকিস্তান সরকার জানায়, ‘ভারতের অপ্রত্যাশিত ও অবৈধ আগ্রাসনের সাক্ষী হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এটি পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতার গুরুতর লঙ্ঘন ছিল। এর ফলে শিশু ও বৃদ্ধসহ বহু নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।’
ভারতের আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় ‘বুনিয়ানুম মারসুস’ নামে সামরিক অভিযান চালায় পাকিস্তান। এটি ছিল একটি পরিমিত, দৃঢ় ও সঠিক সামরিক প্রতিক্রিয়া’ বলে পোস্টে উল্লেখ করা হয়।
পোস্টে আরও বলা হয়, এই প্রতিক্রিয়া দেশটির আত্মরক্ষা সম্পর্কিত মৌলিক অধিকার প্রয়োগ ও সতর্কতার সঙ্গে প্রতিরোধ ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য নেয়া হয়েছে। এতে আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা এবং জনগণের ক্ষতক্ষতি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: আদর্শ নাকি নমনীয়তা, কোন পথে যাবেন খামেনি
পোস্টটিতে আরও বলা হয়, একটি উত্তেজনাপূর্ণ আঞ্চলিক পরিস্থিতির মধ্যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসলামাবাদ ও দিল্লির সঙ্গে দৃঢ় কূটনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যমে তার বিশাল কৌশলগত দূরদর্শিতা ও অসাধারণ রাষ্ট্রনেতার ভূমিকা দেখিয়েছেন।
এতে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট দ্রুত অবনতির দিকে যাওয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সফল, যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা এবং দুই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে একটি বৃহত্তর সংঘর্ষ এড়াতে সক্ষম হয়েছেন, যা এই অঞ্চল ও তার বাইরের কোটি মানুষের জন্য ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারত।
পোস্টে বলা হয়, ‘এই হস্তক্ষেপের মাধ্যমে তিনি (ট্রাম্পের) প্রকৃত শান্তির দূত হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন। পাশাপাশি, এটি সংলাপের মাধ্যমে সংঘর্ষ সমাধানের বিষয়ে তার অঙ্গীকারের প্রমাণ।’
১৬৬ দিন আগে
ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদারে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের অঙ্গীকার
ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তান। সেই সঙ্গে পরস্পরের প্রতি প্রতিবেশীসুলভ আচরণ, পারস্পরিক আস্থা, সমতা, উন্মুক্ততা, অন্তর্ভুক্তি ও যৌথ উন্নয়নের নীতির ভিত্তিতে এই সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে দেশ তিনটি।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চীনের কুনমিং শহরে গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে তিন দেশই জোর দিয়ে বলেছে, চীন-বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ সহযোগিতা সত্যিকারের বহুপাক্ষিকতা ও উন্মুক্ত আঞ্চলিকতাকে অনুসরণ করে। এই সম্পর্ক যে তৃতীয় কোনো পক্ষের বিরুদ্ধে নয়, তা-ও উল্লেখ করা হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী, চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান ওয়েইদং এবং পাকিস্তানের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিষয়ক অতিরিক্ত সচিব ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী অংশ নেন। বৈঠকের প্রথম ধাপে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালোচও অংশগ্রহণ করেন।
তবে বৈঠকের ফলাফলের বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য আসেনি।
সান ওয়েইদং বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভবিষ্যতের এক অভিন্ন সমাজ গড়তে চীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও পাকিস্তান—উভয়ই চীনের ভালো প্রতিবেশী, বন্ধু ও অংশীদার। পাশাপাশি তারা উচ্চমানের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারও বটে।’
চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এবং আঞ্চলিক অন্যতম প্রধান দেশ হিসেবে এই তিন দেশের সামনেই রয়েছে জাতীয় পুনরুত্থান ও আধুনিকায়নের লক্ষ্য, যা অর্জনে প্রয়োজন শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশ।
ওয়েইদং বলেন, ‘চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশ সহযোগিতা তিন দেশের জনগণের অভিন্ন স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং তা আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে।’
অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জনগণের জীবনমান উন্নয়ন এই ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতার মূল লক্ষ্য বলে জানান তিনি।
তিনটি দেশই শিল্প, বাণিজ্য, সামুদ্রিক বিষয়, পানিসম্পদ, জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষি, মানবসম্পদ, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও তরুণ সমাজসহ বিভিন্ন খাতে প্রকল্প অনুসন্ধান ও বাস্তবায়নে একমত হয়েছে।
বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের জন্য একটি কর্মী দল (ওয়ার্কিং গ্রুপ) গঠন করতেও সম্মত হয়েছে তারা।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই বৈঠক ছিল বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান ত্রিপাক্ষিক ব্যবস্থার ‘প্রথম বৈঠক’।
দেশটির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, এই বৈঠকে আঞ্চলিক যোগাযোগ জোরদার এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার নানা ক্ষেত্র, যেমন: বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, কৃষি, ডিজিটাল অর্থনীতি, পরিবেশ সুরক্ষা ও সমুদ্রবিজ্ঞান, সবুজ অবকাঠামো, সংস্কৃতি, শিক্ষা এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ সহযোগিতা গভীরতর করার বিষয়ে একমত হয়েছে তিন দেশ।
আরও পড়ুন: এশিয়ায় নেতৃত্ব দেবে জাপান, বাংলাদেশকে সহযোগিতা বাড়ানোর আশায় ড. ইউনূস
বৈঠকের ফাঁকে কুনমিংয়ে আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারের ভারপ্রাপ্ত উপ-প্রধানমন্ত্রী হাজি মৌলবি আব্দুল সালাম হানাফির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সান ওয়েইদং। তিনি রুহুল আলম সিদ্দিকী ও ইমরান আহমেদ সিদ্দিকীর সঙ্গেও পৃথক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
১৬৭ দিন আগে