ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত মায়ের গর্ভ থেকে উদ্ধার হওয়া সেই ফিলিস্তিনি শিশু মারা গেছে।
বৃহস্পতিবার(২৫ এপ্রিল) গাজার একটি হাসপাতালে মারা গেছে শিশুটি। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার চাচা রামি আল-শেখ।
তিনি বলেন, গুরুতর আহত সাবরিন জৌদার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মেডিকেল টিম তাকে বাঁচাতে ব্যর্থ হন।
শনিবার (২০ এপ্রিল) মধ্যরাতের কিছু আগে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহয় সাবরিনের বাড়িতে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে তার বাবা-মা ও চার বছর বয়সী বোন নিহত হয়।
প্রাথমিক সেবাদানকারীরা লাশগুলো নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যায়, যেখানে চিকিৎসা কর্মীরা ৩০ সপ্তাহের গর্ভবতী তার মা সাবরিন আল-সাকানির জরুরি সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করেছিলেন। মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত শিশুটিকে পাঁচ দিন ধরে অন্য একটি হাসপাতালের নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: রাফাহ শহরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৬ শিশুসহ ৯ ফিলিস্তিনি নিহত
আল-শেখ অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেন, সাবরিনকে বৃহস্পতিবার তার বাবার পাশে দাফন করা হয়েছে।
রাফাহর একটি কবরস্থানে সাবরিনের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, 'আমরা পাগলের মতো এই শিশুর পাশে ছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘আল্লাহ আমাদের কাছ থেকে কিছু নিয়েছিলেন কিন্তু বিনিময়ে আমাদের কিছু দিয়েছেন’ তার পরিবার মারা যাওয়ার পরে শিশুটি বেঁচে ছিল। ‘কিন্তু (এখন) তিনি তাদের সবাইকে নিয়ে গেছেন। আমার ভাইয়ের পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। নাগরিক নিবন্ধন খাতা থেকে তাদের মুছে ফেলা হয়েছে। তার কোনো চিহ্ন অবশিষ্ট নেই।’
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। নিহতদের দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা নিহতদের ক্ষেত্রে আলাদা করে যোদ্ধা ও বেসামরিক নাগরিকদের সংখ্যা বলতে পারেননি।
ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে এবং দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাস যোদ্ধাদের ৭ অক্টোবরের হামলার জবাবে গাজায় বিমান ও স্থল আক্রমণ শুরু করে। হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে প্রায় ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে এবং আরও ২৫০ জনকে জিম্মি করে।
গাজার ২৩ লাখ জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি রাফাহতে আশ্রয় নিয়েছেন। এই শহরটিতে প্রায় প্রতিদিনই অভিযান চালিয়ে আসছে ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: গাজার রাফাহতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় শিশুসহ নিহত ২২